লকডাউন না মানায় ধরে নিয়ে গেল পুলিশ

পেরুতে গৃহবন্দী করার ঘোষণার পর অনেক বিদেশিই ফিরেছেন নিজ নিজ দেশে। ছবি: এএফপি
পেরুতে গৃহবন্দী করার ঘোষণার পর অনেক বিদেশিই ফিরেছেন নিজ নিজ দেশে। ছবি: এএফপি

নলবার্তো সোলানো।

নামটা শুনলেই প্রিমিয়ার লিগের পাঁড় ভক্তরা স্মৃতিকাতর হয়ে পড়বেন হয়তো। লিগের ইতিহাসের অন্যতম সেরা রাইট উইংব্যাক মানা হয় তাঁকে। পেরুর ইতিহাসের সর্বসেরা এই তারকা দেশটির ইতিহাসের প্রথম তারকা হিসেবে খেলতে এসেছিলেন ইংল্যান্ডের লিগে। জ্বলজ্বলে ক্যারিয়ারে খেলেছেন নিউক্যাসল ইউনাইটেড, অ্যাস্টন ভিলা, ওয়েস্ট হ্যাম ইউনাইটেড, লেস্টার সিটি ও হাল সিটির মতো ক্লাবে। শুধু তাই নয়, বোকা জুনিয়র্সে ম্যারাডোনার সতীর্থও ছিলেন তিনি। সারা জীবন প্রতিপক্ষ ফুলব্যাকের কড়া মার্কিং এড়িয়ে চলে এই তারকা এবার পেরুর পুলিশের ‘ট্যাকল’ এড়াতে পারলেন না। লকডাউনের মধ্যে বাইরে বেরিয়ে পুলিশের হাতে ধরা পড়েছেন তিনি।

পেরুর টেলিভিশন চ্যানেল আরপিপি জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সরকার ঘোষিত লকডাউন অমান্য করায় ৪৫ বছর বয়সী সাবেক রাইট উইংব্যাক নলবার্তো ‘নোব্বি’ সোলানোকে গ্রেপ্তার করে লিমার পুলিশ। আটকে রাখে লা মোলিনা থানায়। পরে অবশ্য ছাড়া পেয়ে যান তিনি। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, করোনাভাইরাস সংক্রমণে রুখতে সরকার কড়াকড়িভাবে যে গৃহবন্দী থাকার আইন জারি করেছে, সেটা না মেনে পার্টি করতে গিয়েছিলেন সোলানো।

প্রথমে অবশ্য সোলানো স্বীকার করেননি গ্রেপ্তার হওয়ার কথা। বলেছিলেন, স্ত্রী ও ছেলে-মেয়েদের নিয়ে থানায় গিয়েছিলেন পুলিশের সঙ্গে এবং পুলিশকে বুঝিয়ে-শুনিয়ে চলে এসেছেন। পার্টি নয়, বরং প্রতিবেশীর বাসায় মধ্যাহ্নভোজ করতে গিয়েই ফেঁসেছেন বলে দাবি করেছেন সোলানো, ‘আমার বাড়ি থেকে মোটামুটি পঞ্চাশ গজ দূরে এক প্রতিবেশীর বাড়িতে দুপুরের খাবারের দাওয়াত ছিল আমার। সেখানে সব মিলিয়ে আমরা ছয়-সাতজন ছিলাম। সবাই নিরাপদে ছিলাম। ছেলে-মেয়েরা একটু দৌড়াদৌড়ি করছিল। হঠাৎ কেউ একজন গানের সুর শুনে চালাকি করে জানিয়ে দেয় টেলিভিশন চ্যানেলকে। খ্যাতিমানদের এই হয় আরকি, সব সময় মানুষ আপনাকে চোখে চোখে রাখে!’

পেরুর জাতীয় দলের সহকারী ম্যানেজাররে দায়িত্বে থাকা সোলানো পরে যদিও বুঝেছেন, এসব বলে লাভ নেই। রেডিও স্টেশন আরপিপি নোতিসিয়াসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নিজের দোষ স্বীকার পরে পরে বিবৃতি দিয়েছেন, ‘আমি যা করেছি, তার জন্য ক্ষমা চাইছি। আমি আমার কাজকে সমর্থন করব না। সবার স্বাস্থ্যের দিকে নজর দেওয়া উচিত এই সময়ে। কেননা এটা ছাড়া আমরা বাঁচতে পারব না।’

দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোর মধ্যে করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সবচেয়ে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে পেরু সরকার। জানা গেছে, স্বেচ্ছায় ঘরে থাকার আইন ভাঙায় সে দেশে এ পর্যন্ত প্রায় আঠারো হাজার মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে গত বুধবারেই গ্রেপ্তার হয়েছে ২,৫৬৮জন। দেশটিতে ৫৮০ জনের করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। মারা গেছে নয়জন।