মৃত্যুর ভয়ে প্রতি মুহূর্ত কাটাচ্ছেন তাঁরা

গতকালও এমন ভিড় ছিল স্টেডিয়ামে। ছবি: রয়টার্স
গতকালও এমন ভিড় ছিল স্টেডিয়ামে। ছবি: রয়টার্স
>করোনাভাইরাস-আতঙ্কে বিশ্বের সকল লিগ স্থগিত হয়ে গেলেও বেলারুশ পাত্তা দিচ্ছে না। এই অসময়েও তাঁরা লিগ চালিয়ে যাচ্ছে। আর শঙ্কায় ফেলছে ফুটবলারদের জীবনকে

করোনার প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে খেলা-টেলা বাদ দিয়ে খেলোয়াড়েরা নিজেদের ঘরবন্দী করে রেখেছেন। বিশ্বের প্রায় সব লিগ প্রতিযোগিতা এখন স্থগিত। কিন্তু বেলারুশ করোনা-ভয়ে অতটা ‘ভীত’ নয়। তাঁরা এখনো দিব্যি লিগ চালিয়ে যাচ্ছে। ইচ্ছে না থাকলেও পেটের দায়ে তাই সে লিগে খেলা খেলোয়াড়দের খেলে যেতে হচ্ছে। খেলতে গিয়ে মৃত্যুভয় প্রতিনিয়ত হানা দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন দেশটির রুখ ব্রেস্ট ক্লাবে খেলা ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার জোয়াও উইলিয়াম আলভেস।

গত সপ্তাহ থেকে নতুন মৌসুমের লিগ শুরু হয়েছে বেলারুশে। ইচ্ছার বিপরীতে খেলতে হচ্ছে আলভেসদের। খেলার যে বিন্দুমাত্র ইচ্ছে নেই তাঁদের, সেটা বোঝা গেছে তাঁর কথায়, ‘আমি প্রতিনিয়ত ভয় পাচ্ছি। সব সময় একটা শঙ্কা কাজ করে মনে মধ্যে। খেলতে নামলেই মনে হয়, আজ কি ভাইরাস আক্রমণ করবে আমাকে? খুব ভালো হতো, যদি লিগের ম্যাচগুলো থেমে যেত। আমার ভয় করে অনেক। ম্যাচ যখন খেলি, তখন অতশত মাথায় থাকে না। কিন্তু ম্যাচ শেষ হয়ে যাওয়ার পরপরই আশঙ্কা ঘিরে ধরে আমায়। মনে হয়, আজ কি আমি করোনায় আক্রান্ত হলাম?’

শুধু তিনি নিজে নন, পরিবারের মানুষেরাও চব্বিশ ঘণ্টা আশঙ্কায় থাকেন, এই বুঝি আলভেস আক্রান্ত হলেন করোনায়। চিন্তার পার করেন দিন, ‘প্রতিদিন আমার বাসার লোকজন আমাকে ফোন দেয়। বলে, হোটেল থেকে যেন না বের হই।’

বেলারুশের মানুষ এখনো করোনার ভয়াবহতা নিয়ে ওয়াকিবহাল নন বলে জানিয়েছেন আলভেস, ‘সমস্যা হলো, এখানে সবকিছু চুপচাপ। মানুষজনের হাবভাব দেখলে মনে হয় না যে কোনো সমস্যা আছে। তাঁরা মাস্কও পরে বের হয় না ঘর থেকে।’

খুব দ্রুত ফুটবল মৌসুম স্থগিত হওয়ার আশা করছেন ব্রাজিলের এই ডিফেন্ডার, ‘আমার এজেন্ট আমাকে বলল, পরের ম্যাচটা হয়ে গেলে হয়তো লিগ স্থগিত করা হতে পারে। আশা করব, অবস্থা যেন বেশি খারাপ না হয়। আমি অনেক চিন্তিত। আমার পরিবারও ব্রাজিলে আমার জন্য চিন্তা করছে অনেক। আশা করব, ফুটবল শিগগিরই থেমে যাবে। আমার ও সবার স্বাস্থ্যের জন্য এটাই সবচেয়ে ভালো।’

করোনাকে যে বেলারুশ একদমই পাত্তা দিচ্ছে না, সেটা বোঝা যায় বেলারুশের ফুটবল ফেডারেশন সভাপতি ভ্লাদিমির বাজানোভের একটা কথায়। লিগ শুরু করার পর এই ভদ্রলোক বলেছিলেন, ‘লিগ কেন শুরু করব না? আমাদের দেশে কি জরুরি অবস্থা ডাকা হয়েছে? গুরুতর কিছু তো হয়নি। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি সময় মতোই চ্যাম্পিয়নশিপ শুরু করা হবে।’

বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্দর লুকাশেনকো তো সবাইকে উপদেশ দিয়েছেন, ‘ভদকা পান কর, উষ্ণ স্নান নাও আর কঠোর পরিশ্রম কর।’ এতেই নাকি করোনা সেরে যাবে! তাঁর দাবি ট্রাক্টর সবাইকে ভালো করে দেবে। মাঠ সবাইকে ভালো করে দেবে।

করোনা ঠেকানোর এত শত উপায় বাতলানোর পরেও উইলিয়াম আলভেসদের ভয় ঠেকানো যাচ্ছে কই!