করোনায় ইতালিকে নিয়ে হেসেছিল ইংল্যান্ড

করোনায় থমকে গেছে লন্ডনের জীবনযাত্রাও। ছবি-এএফপি
করোনায় থমকে গেছে লন্ডনের জীবনযাত্রাও। ছবি-এএফপি

এক স্প্যানিশ সাংবাদিক সপ্তাহ খানেক আগে ইংল্যান্ডের উদ্দেশ্যে একটি টুইট করেছিলেন। সারা বিশ্বে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লেও ইংল্যান্ড তখনো হালকাভাবে দেখছিল করোনাভাইরাসকে। বহু আলোচনার পর ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ থামানো হলেও মানুষকে ঘরে থাকার ব্যাপারে গুরুত্ব আরপ করেনি ইংল্যান্ড। স্প্যানিশ ওই সাংবাদিক বলেছিলেন, ‘সাবধান । বর্তমান স্পেন হচ্ছে অতীতের ইতালি। আর ভবিষ্যতের যুক্তরাজ্য দেখবে বর্তমানের স্পেনের রূপ।’

ইউরোপে করোনার প্রকোপটা সবার আগে টের পেয়েছে ইতালি। কিন্তু তারা সতর্ক হয়নি। দেশের সীমানা নিয়ন্ত্রণ করেনি, জনসমাগম বন্ধ করেনি। যতদিনে পরিস্থিতির গুরুত্ব টের পেয়েছে, ততদিনে দেরি হয়ে গেছে। ইতালির এ অবস্থা দেখেও স্পেন শিক্ষা নেয়নি। স্পেনকে দেখেও শিক্ষা নেয়নি ইংল্যান্ড। স্পেনে মৃতের সংখ্যা এক হাজার ছাড়িয়ে যাওয়ার পর এ টুইট করা হয়েছিল। ইউরোপের সেই দেশে মৃতের সংখ্যা আজ সাড়ে ছয় হাজারের বেশি। প্রথম দেশ হিসেবে দশ হাজার মৃত্য দেখেছে ইতালি।

করোনাভাইরাস ইংল্যান্ডেও চুপচাপ বসে নেই। এক সপ্তাহের মধ্যেই ইংল্যান্ডে মৃতের সংখ্যা বেড়েছে এক হাজার। এর পেছনেও সেই ভাইরাসের গুরুত্ব বুঝতে না পারা ও প্রাথমিকভাবে পরিস্থিতিকে অবজ্ঞা করাকেই কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। নিজের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকেও এক ফুটবলার বলছেন সে কথা।

ওয়েস্ট হামের রক্ষণ সামলানোর দায়িত্ব ইতালিয়ান অ্যাঞ্জেলো ওগবোনার। জুভেন্টাসের সাবেক এই ডিফেন্দারই জানিয়েছেন,করোনাকে কতটা হালকাভাবে নিয়েছিল ইংলিশরা, ‘শুরুতে তো সবাই ব্যাপারটা সন্দেহের চোখে দেখছিল। খুবই হালকাভাবে ব্যাপারটা সামলানোর চেষ্টা হয়েছে। আর ব্রেক্সিটের কারণে আর্থিক ক্ষতি যেন না হয় সেদিকেই মনোযোগ বেশি ছিল।’

তুত্তোমার্কাতোওয়েবকে ওগবোনা আরও বলেছেন, ‘খুবই ভয়ংকর বৈশ্বিক এক ঝুঁকিকে ওরা পাত্তা দেয়নি। ওরা ইতালিকে নিয়ে হাসাহাসি করেছে। তারা ভেবেছে ইতালি ব্যাপারটা বাড়িয়ে দেখাচ্ছে। আমি লন্ডনে থাকি, তবু ইতালিতে থাকা পরিবার নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলা। সত্যি বলি, লন্ডন তবু ভালো। এখানে মানুষের মধ্যে দুশ্চিন্তা ছিল। সুপার মার্কেটে ভীড় ছিল না। রাস্তায় কম মানুষ ছিল। কিন্তু লন্ডন দিয়ে পুরো ইংল্যান্ডকে বোঝা যাবে না।’

একটু দেরিতে হলেও ইংল্যান্ড করোনাকে গুরুত্ব দিচ্ছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। প্রিন্স চার্লসও মহামারীর প্রকপ এড়াতে পারেননি। ওগবোনার ধারণা, মানুষের মধ্যে করোনা নিয়ে ভুল এবার অন্তত দূর হবে, ‘আমরা ফুটবলাররা কী করব সে ব্যাপারে ফেডারেশনের দিক নির্দেশনার অপেক্ষায় আছি। এখন যেহেতু বরিস জনসন (প্রধানমন্ত্রী) আক্রান্ত হয়েছেন, এ নিয়ে সচেতনতা বাড়ছে।

ইংল্যান্ডে করোনাভাইরাসে গতকাল নতুন করে ২১৬ জনের মৃত্য হয়েছে। দেশটিতে মৃতের সংখায় এখন ১২৩৫।