করোনা নিয়ে বার্সেলোনাকে ধুয়ে দিলেন মেসিরা

ক্লাবের ওপর চটেছেন মেসিরা। ফাইল ছবি: এএফপি
ক্লাবের ওপর চটেছেন মেসিরা। ফাইল ছবি: এএফপি

করোনার কারণে ১০ কোটি ইউরো ক্ষতির মুখে পড়েছিল বার্সেলোনা। এ সমস্যা থেকে ক্লাবকে বাঁচানোর জন্য ও ক্লাবের অধীনস্থ কর্মীদের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষায় নিজেদের বেতনের ৭০ ভাগ কম নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ক্লাবের মূল স্কোয়াডের সবাই। এমন এক সিদ্ধান্ত জানানোর সময়ও ক্লাবকে খোঁচা দিতে ভোলেননি মেসি। খেলোয়াড়দের নিয়ে সংবাদমাধ্যমে আজেবাজে গুজব রটানোর ব্যাপারে ক্লাবকে আরও সতর্ক হতে বলে দিয়েছেন কাল।

করোনার কারণে মাঠে খেলা নেই। এতে টিভি স্বত্ব ও অন্যান্য আয়ের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। ফুটবল ক্লাবগুলো তাই পড়েছে বেকায়দায়। কারণ, শুধু ২২ জন ফুটবলার নিয়েই তো ক্লাব চলে না। কোচ, একাডেমি, স্টাফ, স্টেডিয়াম, বিভিন্ন স্যুভেনির দোকান মিলিয়ে অধিকাংশ ক্লাবের অধীনেই প্রায় হাজার মানুষের জীবিকা নির্ভর করে। এমন সময় এই কর্মীদের বেতন নিশ্চিত করার জন্য আগামী চার মাসের বেতন নেবেন না ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোসহ জুভেন্টাসের সব খেলোয়াড়। গতকাল মেসিও এক ইনস্টাগ্রামে জানালেন কম বেতন নেওয়ার কথা, ‘একটি ঘোষণা দেওয়ার সময় হয়েছে মনে হয়। সংকটকালে আমরা আমাদের বেতনের ৭০ ভাগ কেটে রাখার ব্যাপারে একমত হয়েছি। সঙ্গে আরও অর্থ যোগ করে নিশ্চিত করতে চাই, ক্লাবের স্টাফরা যেন সংকট শেষ হওয়া পর্যন্ত পুরোপুরি বেতন পান।’

অথচ কিছুদিন ধরে কাতান সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, মেসিরা বেতন কম নিতে ইচ্ছুক নন। তাঁদের ক্লাব অনুরোধ করার পরও রাজি হননি। ফলে বার্সেলোনা এখন আদালতে গিয়ে খেলোয়াড়দের বেতন কম নিতে বাধ্য করবে। কাল তাই মেসি ইনস্টাগ্রামে তাঁর দীর্ঘ পোস্টের শুরুটা করেছিলেন এভাবে, ‘এমন বিপর্যয়ের মুহূর্তেও বার্সেলোনার মূল দল নিয়ে অনেক কিছু লেখা হয়েছে। আগেই বলে দিই, শুরু থেকেই আমাদের ইচ্ছা ছিল বেতন কম নেওয়ার। কারণ, আমরা জানি, এটা খুবই ব্যতিক্রম পরিস্থিতি। যখনই ক্লাব আমাদের কাছে সাহায্য চেয়েছে, আমরা সবার আগে তা দিয়েছি। নিজে থেকেও এটা করেছি, কারণ সেটা দরকার ছিল।’

এরপরই ক্লাবকে খোঁচা দিয়েছেন মেসি, ‘তাই আমরা একটুও অবাক হইনি, যখন ক্লাব আমাদের সবার সন্দেহের দৃষ্টির সামনে ফেলল এবং আমাদের এমন কিছু করতে বাধ্য করার চেষ্টা করল, যা আমরা নিজ থেকেই করতাম। আমরা বরং ইচ্ছা করেই সিদ্ধান্তটা কয়েক দিন পিছিয়েছি। কারণ, আমরা এমন একটি পদ্ধতি বের করতে চেয়েছি, যাতে এই কঠিন সময়ে ক্লাব ও কর্মী সবার উপকার হয়। এত দিন এ নিয়ে কথা বলিনি, কারণ আমাদের মনে হয়েছে, ক্লাবকে সাহায্য করার সবচেয়ে বাস্তব উপায় খুঁজে বের করা এবং যাদের বেশি দরকার তাদেরই যেন সাহায্য করতে পারি, সেটা নিশ্চিত করা।’

মেসির এমন কড়া বক্তব্যের পর পিছু হটেছে বার্সেলোনা। ক্লাব সভাপতি হোসে বার্তোমেউ মুন্দো দেপোর্তিভোকে বলেছেন, ‘মেসি প্রথম দিনই বলেছিল বেতন কমানো উচিত। অধিনায়কেরাই এ প্রস্তাব দিয়েছে। এটাই প্রমাণ করে তারা ক্লাবের প্রতি কতটা অনুগত। হয়তো ক্লাবের ভেতর ও বাইরের কিছু মানুষের কথায় তারা হতাশ হয়েছে (মেসির অমন বক্তব্য)। কিন্তু যারা ওসব বলেছে তারা কিছু জানত না, খেলোয়াড়দের সঙ্গে কথাবার্তা আমি ও অস্কার গ্রাউ চালিয়েছি। আমরা এমন কিছু বলিনি।’