ব্যর্থ হলে আর ফিরতেন না টেন্ডুলকার

টেন্ডুলকার আত্মবিশ্বাসী ছিলেন তিনি ওপেন করতে পারবেন। ফাইল ছবি।
টেন্ডুলকার আত্মবিশ্বাসী ছিলেন তিনি ওপেন করতে পারবেন। ফাইল ছবি।

সেদিন হোটেল থেকে মাঠে যাওয়ার সময়ও শচীন টেন্ডুলকার জানতেন না তাঁকে ওপেন করতে বলা হবে। সেদিন বলতে ২৫ বছর আগে, ভারতীয় ক্রিকেট দল তখন নিউজিল্যান্ড সফর করছে। ১৯৯৫ সালে কিউইদের বিপক্ষে তাঁকে ওপেন করতে পাঠানোর সেই ঘটনাই বদলে দেয় ভারতীয় ক্রিকেটের দিগন্ত—এমনটা কিছুদিন আগে বলেছেন সে ম্যাচে ভারতের অধিনায়ক মোহাম্মদ আজহারউদ্দিন। তবে টেন্ডুলকার জানিয়েছেন, তিনি যথেষ্ট আগ্রহ নিয়ে, আত্মবিশ্বাসের সঙ্গেই ভারতের পক্ষে ইনিংস ওপেন করতে গিয়েছিলেন।

নিজের অ্যাপস ১০০ এমবিতে টেন্ডুলকার ফিরে তাঁকিয়েছেন ১৯৯৫ সালের সে দিনটিতে ,‘সত্যি কথা বলতে কি হোটেল থেকে মাঠে যাওয়ার সময়ও আমি জানতাম না যে আমাকে ওপেন করতে বলা হবে। খেলা শুরুর আগে জানা গেল নিয়মিত ওপেনার নভজোৎ সিং সিঁধু ঘাড় নড়াতে পারছেন না। অধিনায়ক মোহাম্মদ আজহারউদ্দিন আর কোচ অজিত ওয়াদেকার স্যার আমার কাছে এসে বললেন তোমাদের মধ্যে কে ওপেন করতে চাও। আমি সঙ্গে সঙ্গে বলেছিলাম, আমাকে পাঠান। একটা সুযোগ দিন, ব্যর্থ হলে আমি আর আপনাদের কাছে ফিরব না।’

ক্যারিয়ারের শুরু থেকে ১৯৯৫ সালের সে ম্যাচের আগ পর্যন্ত টেন্ডুলকার ছিলেন ভারতের স্বীকৃত মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান। তাঁকে হঠাৎ করেই ওপেন করতে পাঠানোটা সহজ কোনো সিদ্ধান্ত ছিল না। কিন্তু প্রস্তাবটি তিনি লুফে নিয়েছিলেন কারণ তিনি ছিলেন আত্মবিশ্বাসী, ‘আমি আত্মবিশ্বাসী ছিলাম যে আমি ওপেন করতে পরব।  কিন্তু তার মানে এই নয় যে আমার মাথায় ছিল যে উইকেটে যাব, কয়েকটা বল পেটাব, লাগলে লাগল, না লাগলে নাই, আমি আউট হয়ে চলে আসব। আমি পুরো ৫০ ওভার খেলতে চেয়েছি। প্রথমে অবশ্যই মেরে দ্রুত রান তুলব। থিতু হওয়ার পর খেলব নিজের সাধারণ খেলাই।’

নিজের ওপেনিং ব্যাটিংয়ের প্রেক্ষাপট ব্যখ্যা করতে গিয়ে টেন্ডুলকার বলেন, ‘আগে ব্যাটসম্যানরা প্রথম ১৫ ওভার নতুন বলটা কোনো রকমে খেলে দিত। হাতে উইকেট রেখে শেষের ৭/৮ ওভার মেরে খেলেই রান তুলত সবাই। ১৯৯২ বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের মার্ক গ্রেটব্যাচ এ ধারণার বদল ঘটান। আমার ওপেন করার আগ পর্যন্ত ওটাই ছিল একমাত্র উদাহরণ।’

সে ম্যাচে টেন্ডুলকার ব্যর্থ হননি। ৪৯ বলে ৮২ রানের ইনিংস খেলে তিনি নিজের ওপেনার সত্ত্বাকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। ব্যর্থ হলে ফিরবেন না বলেছিলেন। কিন্তু সেদিনের পর টেন্ডুলকারকেই আর ফেরানো যায়নি নিজেকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার পথ থেকে।

ইতিহাস তো এভাবেই রচিত হয়!