স্পেনে করোনার তীব্রতা কমছে, বলছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা

করোনার বিরুদ্ধে স্পেন বর্তমানে সবচেয়ে কঠিন সময় পার করছে। ছবি: এএফপি
করোনার বিরুদ্ধে স্পেন বর্তমানে সবচেয়ে কঠিন সময় পার করছে। ছবি: এএফপি
>স্পেনে এখন পর্যন্ত করোনায় মৃতের সংখ্যা ১১ হাজার ১৯৮ জন। তবে ধারণা করা হচ্ছে, ধীরে ধীরে স্পেনে করোনা নিয়ন্ত্রণে আসছে

এস্তেবান গ্রানেরো নামটা খুব বেশি ফুটবল ভক্তের জানা নেই। একমাত্র রিয়াল মাদ্রিদের ভক্তদের হয়তো এই মিডফিল্ডারের নাম খেয়াল আছে। ৩২ বছর বয়সী এই ফুটবলার রিয়াল একাডেমি থেকে এসপানিওল হয়ে এখন আছেন তৃতীয় বিভাগের দল মারবেয়াতে। করোনা সংকটে আবার উচ্চারিত হচ্ছে গ্রানেরোর নাম। কারণ এই অন্য অনেক ফুটবলারের চেয়ে একটু ব্যতিক্রম গ্রানেরোর আছে একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রতিষ্ঠান।

গ্রানেরোর প্রতিষ্ঠানের নাম ওলোসিপ। বিভিন্ন ধরনের খেলা নিয়ে গবেষণা করাই এর কাজ। বিশ্ব জুড়েই খেলোয়াড় প্রতিটি খুঁটিনাটি বিষয় খুঁজে দেখার জন্য, খেলোয়াড়দের ফিটনেস, দক্ষতা ও স্ট্যামিনা বাড়ানোর জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করা হচ্ছে। কিন্তু করনার এ সময়টায় খেলা গুরুত্ব হারিয়েছে। তাই নিজের প্রতিষ্ঠানকে করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কাজে লাগাচ্ছেন গ্রানেরো। এ ব্যাপারে স্প্যানিশ দৈনিক মার্কার সঙ্গে কথোপকথনে বলেছেন, আমাদের সমাজ এখন ভয়ংকর এক বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। আমরা তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, আপাতত আমাদের সব শক্তি এমন একটি মডেল তৈরিতে ব্যয় করি যেটা এই মহামারির আচরণ অনুমান করতে পারবে এবং এতে আমরা এটা সম্পর্কে ভালো ধারণা অর্জন করতে পারব।'

এই মডেল সৃষ্টি করলে কীভাবে উপকৃত হবেন সবাই, সেটাও ব্যাখ্যা করে বুঝিয়েছেন গ্রানেরো, ‘এতে করে আমরা আগে থেকেই জানতে পারব কোঠায় সবচেয়ে বেশি প্রয়োজনীয় সামগ্রী পাঠানো দরকার। কখন লকডাউন তুলে নেওয়া নিরাপদ হবে এবং ভবিষ্যতে এমন কোনো মহামারি এলে আগ থেকেই প্রস্তুত থাকা যাবে। আমরা খুব অল্প সময়ে অনেকগুলো মডেলই তৈরি করেছি। যার দরকার এবং ইচ্ছা আছে সে চাইলেই সেগুলো ব্যবহার করতে পারবে।’

বিশ্বজুড়ে প্রায় ৬০ হাজার মানুষ জীবন হারিয়েছেন করোনাতে। স্পেন দেখেছে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যু। এগারো হাজারের বেশি মানুষ এই মহামারিতে হারিয়েছে স্পেন। ওলোসিপের মডেল এর মাঝেই একটি খুশির খবর দিয়েছে স্পেনের মানুষজনকে। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান তথ্য বিজ্ঞানী আন্দের আলকোন পূর্বানুমান করছেন আক্রান্তের সংখ্যা ৭ লাখ ছাড়িয়ে যেতে পারে স্পেনে (বর্তমানে ১ লাখ ২০ হাজার)। কিন্তু স্পেন করোনার সবচেয়ে বড় ঝুঁকির সময় নাকি পার করে এসেছে, ‘আমাদের পূর্বানুমান মডেল অনুযায়ী স্পেনে করোনার সর্বোচ্চ চূড়া ছিল ২ এপ্রিল। তার মানে আমরা সবচেয়ে সময় কাটিয়ে এসেছি। অবশ্য সব অনুমানই বদলে যেতে পারে সরকারের নেওয়া সিদ্ধান্তের ফলে। ফলে আমরা এখনই নিশ্চিত করে বলতে পারব না কবে বন্দিদশা শেষ হবে। তবে পরিসংখ্যান বলছে, এ মাসের শেষ নাগাদ আমাদের কোয়ারেন্টিন তুলে নেওয়া সম্ভব।’

স্পেনে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ১ এপ্রিল থেকে কমা শুরু হয়েছে। ওলোসিপের অনুমান অনুযায়ী ২ এপ্রিল একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুও দেখেছে স্পেন (৯৬১)। এখন বাকি পূর্বানুমানগুলো মিলে গেলেই স্বস্তি পাবে দেশটি।