'পাকিস্তান ক্রিকেটে কারওরই সততা নিয়ে বুলি ছাড়া উচিত নয়'

স্পট ফিক্সিং করে সালমান বাট এখন পাদপ্রদীপের আড়ালে। ছবি : এএফপি
স্পট ফিক্সিং করে সালমান বাট এখন পাদপ্রদীপের আড়ালে। ছবি : এএফপি
>

২০১০ সালে ইংল্যান্ডে সেই কুখ্যাত স্পট ফিক্সিংয়ের কারণে পাঁচ বছর নিষিদ্ধ ছিলেন সালমান বাট। এমন ফিক্সারদের জাতীয় দলে ফেরানো নিয়ে চারদিকে সমালোচনার ব্যাপারে মুখ খুলেছেন।

সালমান বাট যেন আর থাকতে পারছিলেন না! কদিন ধরে ফিক্সারদের নিয়ে কী কী করা উচিত, তা নিয়ে নিজেদের মত দিয়ে চলছিলেন পাকিস্তানের একেকজন সাবেক ও বর্তমান ক্রিকেটার। একজন সাবেক ফিক্সার হিসেবে নিজেদের ‘অধিকার রক্ষা’য় তাই যেন এবার এগিয়ে এলেন বাট।

২০১০ সালে ইংল্যান্ডে স্পট ফিক্সিংয়ে জড়িয়ে পাঁচ বছরের নিষেধাজ্ঞা ভোগ করা বাঁহাতি পাকিস্তানি ওপেনার বলছেন, পাকিস্তান ক্রিকেটের দুর্নীতির যে অবস্থা, তাতে এখানে সততা কারওই কথা বলা উচিত নয়।

২০১৭ পিএসএলে স্পট ফিক্সিংয়ে নিষিদ্ধ শারজিল খানকে জাতীয় দলে ফেরানো নিয়ে আলোচনার পর থেকেই যেন এসবের শুরু। মোহাম্মদ হাফিজ সেটির বিরোধিতা করেছেন। সঙ্গে ফিক্সারদের আজীবন নিষিদ্ধ করার দাবিই তুলেছেন। পাকিস্তান কিংবদন্তি জাভেদ মিঁয়াদাদ তো আরও খ্যাপা। তাঁর দাবি, ফিক্সারদের ফাঁসিতে ঝোলানো হোক।

এসব নিয়েই বলতে গিয়ে আইসিসি আর পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডকে (পিসিবি) দেখিয়ে দিলেন বাট, ‘আমি আসলেই বুঝতে পারি না কেন এসব নিয়ে কাউকে কথা বলতে হবে, নিজের মত দিতে হবে। কারণ তাঁদের কথায় কিছু যায় আসে না। শেষ কথা হচ্ছে, শুধু আইসিসি আর পিসিবিই এ ব্যাপারে কথা বলা উচিত। কারণ আইনকানুন তো তারাই বানায়।’

বরং পাকিস্তান ক্রিকেটে আরও অনেক দুর্নীতির দিকে ইঙ্গিত করে খোঁচা দিলেন বাট, ‘আমি এমন অনেক খেলোয়াড়কে চিনি যাঁদের জাতীয় দলে নেওয়া হয় (বোর্ডের ওপরমহলের সঙ্গে) তাঁদের সম্পর্কের কারণে। অনেক খেলোয়াড়ই আছে যাঁরা তেমন আহামরি না কিছু করলেও বারবার তাঁদের ফেরার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। আমাদের আসলে পাকিস্তান ক্রিকেটে সততা নিয়ে বুলি ছাড়াই উচিত নয়।’

নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরেই ক্রিকেটে ফিরেছেন বাট। ২০১৬ সালে সে সময়ের পাকিস্তান কোচ ও বর্তমানে দলের বোলিং কোচ ওয়াকার ইউনিস চেয়েছিলেন বাটকে দলে ফেরাতে। কিন্তু একজন ফিক্সারকে নতুন শুরু দেওয়ার প্রস্তাবে ভেটো দেন সে সময়ে দলের অধিনায়ক শহীদ আফ্রিদি।
ফিক্সিংয়ের কারণে শাস্তি শেষেও তাঁকে সুযোগ না দেওয়া নিয়ে বাটের কথা, ‘আইন অনুযায়ী খেলোয়াড়দের একইরকম সম্মান দেওয়া উচিত। একবার শাস্তি ভোগ করা শেষ হয়ে গেলে একজন খেলোয়াড়কে অন্য যে কারও মতো করে দেখা উচিত।‘

এরপরই উল্টো কয়েকটা প্রশ্ন করলেন ৩৫ বছর বয়সী বাঁহাতি ওপেনার, ‘আমি এসব নিয়ে কথা বলতে চাই না, কিন্তু যাঁরা পুরো ব্যাপারটা নিয়ে কথা বলেন সব সময় তাঁদের কিছু প্রশ্ন করতে চাই। নিজেরা যখন শুধু (ওপরমহলের সঙ্গে) সম্পর্কের কারণে কোনো খেলোয়াড়কে সুযোগ দেন, তখন এই সততা কোথায় থাকে? ওই ক্রিকেটারদের ব্যর্থতায় পাকিস্তান ক্রিকেট যখন ভোগে, তখন তাঁদের সততা কোথায় থাকে?’