ঢুসের জন্য জিদানের সঙ্গে কথা বন্ধ ছিল সতীর্থের

২০০৬ বিশ্বকাপের ফাইনালের এই দৃশ্য ফুটবল ইতিহাসেরই অংশ হয়ে গেছে। ফাইল ছবি
২০০৬ বিশ্বকাপের ফাইনালের এই দৃশ্য ফুটবল ইতিহাসেরই অংশ হয়ে গেছে। ফাইল ছবি
>শান্ত-শিষ্ট জিনেদিন জিদান হঠাৎ করেই রেগে আগুন। ঢুস মেরে দিয়েছেন ইতালির ডিফেন্ডার মার্কো মাতেরাজ্জিকে

সে দৃশ্য কী ভোলার! ফুটবল ইতিহাসেই আলাদা জায়গা করে নিয়েছে ২০০৬ বিশ্বকাপে ইতালির বিপক্ষে ফ্রান্সের ফাইনালে জিনেদিন জিদানের সেই ঢুস।

অনেকেরই ধারণা ইতালির ডিফেন্ডার মার্কো মাতেরাজ্জিকে জিদান যদি ওই ঢুস না মারতেন আর লাল কার্ড দেখে তাঁকে মাঠ ছাড়তে না হতো, সেবার বিশ্বকাপ জিততে পারত ফ্রান্স। এমনটা মনে হয়েছিল সেই ম্যাচে জিদানের সতীর্থ উইলি সানিওলেরও। লাল কার্ড দেখে জিদান মাঠের বাইরে চলে যাওয়ার পর যিনি বাকি সময়টুকু নেতৃত্ব দিয়েছিলেন দলকে।

পেনাল্টি থেকে গোল করে ম্যাচের ৭ মিনিটেই দলকে এগিয়ে দিয়েছিলেন জিদান। ১২ মিনিট পর মাতেরাজ্জি সেই গোল শোধ করলে ৯০ মিনিটের খেলা শেষ হয় ১-১ গোলের সমতায়। অতিরিক্ত সময়ে গড়ানো ম্যাচের শেষ মুহূর্তের মাতেরাজ্জিকে ঢুস দিয়ে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয়েছিল জিদানকে। সেই সময় জানা যায়নি আসলে কেন মাতেরাজ্জিকে ঢুস দিয়েছিলেন ‘শান্ত-শিষ্ট’ জিদান! পরে অবশ্য জিদান বলেছিলেন, মাতেরাজ্জি তাঁর মা আর বোনকে নিয়ে বাজে কথা বলেছিলেন।

তা ঢুস জিদান যে কারণেই মেরে থাকুন, টাইব্রেকারে গড়ানো ম্যাচে ৫-৩ গোলে হেরে গিয়েছিল ফ্রান্স। ম্যাচ শেষে ফ্রান্সের খেলোয়াড়েরা ড্রেসিংরুমে যাওয়ার পর জিদান সব সতীর্থের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। কে কে তাঁকে ক্ষমা করতে পেরেছিলেন কে জানে, কিন্তু একজন ছিলেন যিনি ফ্রান্সের ১৯৯৮ বিশ্বকাপ জয়ের নায়ককে ক্ষমা করতে পারেননি। তিনি উইলি সানিওল। এমনকি ওই ঘটনার পর জিদানের সঙ্গে কথা বলাই বন্ধ করে দিয়েছিলেন!

এত দিন পর সেই গল্প বললেন সানিওল, ‘হেরে আপনি ড্রেসিংরুমে ঢুকলেন আর সেখানে কেউ একজন আপনার কাছে ক্ষমা চাইছে। হতাশায় ডুবে যাওয়া বিশ্বে আপনি তো তার কথা শুনতেই পাবেন না। আমি তার ক্ষমা চাওয়ায় কান দিইনি, তার ক্ষমা গ্রহণও করিনি।’

২০০৬ বিশ্বকাপের সেই ফাইনালই ছিল আন্তর্জাতিক ফুটবলে জিদানের শেষ ম্যাচ। তাঁর সঙ্গে ২০০০ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত খেলা সানিওল এরপর বলেছেন, ‌‘আমি স্নানঘরে চলে যাই। সেখানে আমি ১০ মিনিটে ২৫০ টা সিগারেট শেষ করেছি। আর এভাবেই হতাশা ভুলেছি।’ সানিওল হয়তো মজাই করেছেন। আর না হলে ১০ মিনিটে ২৫০টি সিগারেট শেষ করা কি কারও পক্ষে সম্ভব!

তবে এরপর যা বললেন তা আর মজা নয়। বরং একটি বিশ্বকাপ জিততে না পারার জন্য জিদানকে দায়ী করাই বোঝায়, ‌‘তার সঙ্গে প্রায় দুই বছর আমি কোনো কথা বলিনি।’