লোভনীয় প্রস্তাবে জিদানের অবসর আটকাতে চেয়েছিল রিয়াল

অবসর থেকে জিদানকে ফেরানোর চেষ্টা করেছিল রিয়াল। ছবি: টুইটার
অবসর থেকে জিদানকে ফেরানোর চেষ্টা করেছিল রিয়াল। ছবি: টুইটার

জাতীয় দল থেকে অবসর দুই বছর আগেই নিয়েছিলেন। তবুও দল বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব পেরোতে পারছে না দেখে ফিরে এসে দলকে টেনেছেন। ২০০৬ সালে সব ধরণের ফুটবল থেকেই অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন জিনেদিন জিদান। জানিয়ে দেন তাঁকে পেশাদার ফুটবলে দেখার সর্বশেষ সুযোগ সামনের বিশ্বকাপ। ২০০৬ সালের ৭ মে রিয়াল মাদ্রিদের মাঠে হয়ে শেষবারের মতো খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নামেন 'জিজু'।

চাইলেই অবশ্য আরও দুই বছর খেলতে পারতেন জিদান। বার্নাব্যুকে যেদিন বিদায় বলেছেন সেদিনও তাঁকে দলের সর্বোচ্চ বেতনভোগী ফুটবলার হিসেবে দলে রাখতে রাজি ছিলেন ক্লাব সভাপতি ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ। কারণ, বয়স ৩৪ হতে পারে, কিন্তু জিদান যে একজনই। কিন্তু ক্লাবের সে প্রস্তাবে রাজি হননি ফরাসি কিংবদন্তি।

এতদিন পর এই অজানা গল্পটা জানালেন চিচিনহো। ব্রাজিলিয়ান এই রাইটব্যাক ২০০৫ থেকে ২০০৭ পর্যন্ত রিয়ালের জার্সি গায়ে চাপিয়েছেন। ২০০৬ সালের সেই দিনটির কথা এখনো তাঁর মনে আছে। ভিয়ারিয়ালের সঙ্গে ৩-৩ গোলের নাটকীয় ম্যাচটি শেষ হয়েছে মাত্র। বার্নাব্যুতে নিজের শেষ ম্যাচেও গোল করেছেন জিদান। সেদিনের কথা চিচিনহো জানিয়েছেন ইএসপিএনকে, 'তাঁর বিদায়ী ম্যাচে (বার্নাব্যুর) জিদান খুবই আবেগাক্রান্ত ছিল। আমরাও। সে একজন কিংবদন্তি যে খেলা ছেড়ে দিচ্ছে। এ সময় ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ ড্রেসিংরুমে এসে সবার সঙ্গে একে একে কথা বলছিলেন। এর পর যা হলো সেটা কখনো ভোলা যাবে না।'

সে মৌসুমেই চিচিনহোর সঙ্গেই ক্লাবে যোগ দিয়েছিলেন নতুন তারকা রবিনহো। রিয়ালের ভবিষ্যৎ ভাবা হচ্ছিল তাঁকে। পেরেজকে একটু বাজিয়ে দেখতে চাইলেই এই ফরোয়ার্ড, 'রবিনহো মজা করে বলল, “প্রেসিডেন্ট, জিজু বলছিলেন, যদি ৬৫ লাখ ইউরোর (সে সময় ক্লাবের সর্বোচ্চ বেতন) দুই বছরের চুক্তি দেওয়া হয়। তাহলে সে খেলা ছাড়বে না।” সবাই হাসা শুরু করল। কিন্তু ফ্লোরেন্তিনো গুরুত্ব দিয়ে দেখলেন ব্যাপারটা এবং বললেন, “তুমি চাইলে আমি এখনই চুক্তির কাগজ আনাব স্বাক্ষরের জন্য।”'

এমন সোজা সাপ্টা সরাসরি প্রস্তাব যে জিদানকেও থমকে দিয়েছিল সেটা জানিয়েছেন চিচিনহো, 'জিদান এক মুহূর্তের জন্য ভাবলেন, তারপর বললেন, “না, না… আমি আর চাই না।”'

জিদানের সঙ্গে মাত্র এক মৌসুম খেলার সুযোগ হয়েছিল চিচিনহোর। সে অভিজ্ঞতার রেশ এখনো রয়ে গেছে তাঁর মাঝে, 'জিদান ছিল কনডাকটরের (কনসার্ট নিয়ন্ত্রক) মতো। মাঠে কে কোথায় থাকব, সেটা ঠিক করে দিত। খেলার আগে সবাইকে দেখিয়ে দিত। সে মাঠের মধ্যেই কোচ ছিল। ফ্লোরেন্তিনো সব সময় বলত জিদান আসলে স্যুট পরে খেলে-মাঠে তাঁর খেলার মধ্যেই সে আভিজাত্য ছিল। ওর ঘামও হতো না! ওকে খেলতে দেখা খুব সুন্দর এক অভিজ্ঞতা।'