অবৈধ কাজটা বৈধতা দেওয়ার কথা ভাবছে আইসিসি

থুতুর ব্যবহার বন্ধ করতে বল বিকৃতির বিষয়টি কি তাহলে বৈধতা পাবে? ফাইল ছবি
থুতুর ব্যবহার বন্ধ করতে বল বিকৃতির বিষয়টি কি তাহলে বৈধতা পাবে? ফাইল ছবি

করোনা ভাইরাস কত পুরোনো রীতিকে বদলে দিচ্ছে। বদলে দিচ্ছে কত সনাতন ভাবনা। ক্রিকেটেই ধরুন, যুগের পর যুগ বোলাররা বল উজ্জ্বল করছে থুতু বা লালা দিয়ে। কখনো কখনো কেউ বল উজ্জ্বল করতে গিয়ে অনৈতিক উপায়ের আশ্রয়ই নিয়েছেন। এমন এক কাণ্ডে বছর তিনেক আগে অস্ট্রেলিয়ার তিন তারকা ক্রিকেটার বড় শাস্তিও পেয়েছেন।

অথচ আইসিসি এখন ভাবছে বল বিকৃতির বিষয়টা কীভাবে বৈধতা দেওয়া যায়। করোনা ভাইরাসের কারণেই আইসিসি এমনটা ভাবতে বাধ্য হচ্ছে। ক্রিকেটের আইন বলছে, কোনো দল চাইলে বল চকচকে করতে পারবে কিন্তু সে জন্য কোনো কৃত্রিম বস্তু ব্যবহার করা যাবে না। বল ভিজে গেছে, সেটা তোয়ালে দিয়ে মুছে নেওয়া যাবে, কাদা লাগলে সেটা আম্পায়ারের পর্যবেক্ষণে সরানো যাবে। এমনকি বল চকচকে করতে থুতুও ব্যবহার করা যাবে কিন্তু অন্য কিছু ব্যবহার করা যাবে না। অন্য উপায়ে বলের অবস্থা পরিবর্তন করার যেকোনো চেষ্টাই অনৈতিক, এটিই বল টেম্পারিং।

বৈধ উপায়ে বল চকচক করার যে কটি উপায় আছে, এর মধ্যে লালা-থুতুর ব্যবহারটাই বেশি করেন ক্রিকেটাররা। কিন্তু কোভিড-১৯ রোগ মহামারি রূপ নেওয়ায় বলে থুতু ব্যবহার নিয়ে নতুন করে ভাবতে হচ্ছে। থুতু ব্যবহার যদি বন্ধ হয় তাহলে বোলাররা পড়বেন বিপাকে।

পুরোনো লাল বলে মুভমেন্ট পাওয়া হবে কঠিন। তখন ব্যাটসম্যানদের জন্য কাজটা হবে বেশ সহজ। কদিন আগে অস্ট্রেলিয়ান পেসার জশ হ্যাজলউড তাই বলছিলেন, '(থুতু না ব্যবহার করে) সাদা বলে সমস্যা না হতে পারে। তবে টেস্ট ক্রিকেটে কঠিন। বোলাররা বাতাসে যেকোনো ধরনের সাইডওয়েজ মুভমেন্টের ওপর অনেক নির্ভর করে। শুরুর দিকে ঔজ্জ্বল্য চলে যাওয়ার পর যদি ৮০ ওভার বলটা ঠিকঠাক রক্ষণাবেক্ষণ না করতে পারেন, ব্যাটসম্যানদের জন্য কাজটা অনেক সহজ হয়ে যায়। লাল কিংবা ঘাম যেটাই ব্যবহার করেন, একজনই এটা করতে পারে। তবে নিশ্চিত নই সমাধানটা কী। এটা নিয়ে আরও আলোচনা করার আছে। আশা করি ভালো সমাধান আসবে।'

থুতু বা লালা যদি ব্যবহার নাই করতে দেওয়া হয়, সেক্ষেত্রে বল উজ্জ্বল রাখতে বিকল্প একটা ভাবনার কথা এসেছে। ব্যাটে-বলের লড়াইটা সমান রাখতে আম্পায়ারের সামনেই স্বীকৃত কৃত্রিম কোনো বস্তু দিয়ে বল উজ্জ্বল করা যাবে। ভাবনাটা বাস্তবে রূপ নিলে বলা যায় আরেক অর্থে টেম্পারিংয়েরই বৈধতা দেওয়া হবে। স্বাস্থ্য ঝুঁকি বেড়ে যাওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিকল্পও নেই। আগামী মাসের শেষ দিকে কিংবা জুনের শুরুতে ক্রিকেটের দুই আইন প্রণেতা আইসিসির ক্রিকেট কমিটি এবং এমসিসি এটি নিয়ে আলোচনায় বসতে পারে।

এ বিষয়ে আইসিসির মেডিকেল কমিটির প্রধান ড. পিটার হারকোর্ট বলেছেন, 'পরিস্থিতি দ্রুত বদলাচ্ছে। এখনো কোভিড -১৯ রোগ সম্পর্কে অনেক কিছু জানার আছে। এতে সিদ্ধান্ত নেওয়াটা আরও কঠিন হয়ে যেতে পারে। ক্রিকেট যে সমস্যাগুলো মোকাবিলা করছে, সেগুলোর ব্যাপারে যেন একটি পরিপূর্ণ চিত্র পাওয়া যায়, আইসিসির মেডিকেল কমিটি সদস্য দেশগুলোর মেডিকেল প্রতিনিধিদের সঙ্গে কাজ করছে।'