সাকিবের ব্যাটের পর আসিফের সোনার পদক

আসিফ করোনায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য নিলামে তুলতে চান তাঁর সোনার পদক। ছবি: প্রথম আলো
আসিফ করোনায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য নিলামে তুলতে চান তাঁর সোনার পদক। ছবি: প্রথম আলো

যে ব্যাটটি দিয়ে বিশ্বকাপে সেঞ্চুরি করেছিলেন, সেটি নিলামে তুলেছেন সাকিব আল হাসান। উদ্দেশ্য, ব্যাটটি বিক্রি করে যে টাকা পাওয়া যায়, সেটি দান করবেন করোনার বিপক্ষে লড়াইয়ে। সাকিবের ব্যাটটি নিলামে বিক্রি হয়েছে বাংলাদেশি মুদ্রায় ২০ লাখ টাকায়। সাকিবের মতো মুশফিকুর রহিমও চাচ্ছেন তাঁর ব্যাট নিলামে তুলতে। এবার ক্রিকেটারদের মতোই নিজেদের প্রিয় জিনিস বিক্রি করে করোনার বিপক্ষে লড়াইয়ে শামিল হতে চাচ্ছেন অন্য খেলার তারকারা। জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক আলফাজ আহমেদ নিজের একটি ঐতিহাসিক জার্সি নিলামে তুলতে চাচ্ছেন। প্রয়াত ফুটবল তারকা মোনেম মুন্নার স্ত্রী সুরভী মোনেম বিক্রি করতে চাচ্ছেন তাঁর স্বামীর একটি জার্সি। ২০০২ সালে কমনওয়েলথ গেমসে সোনাজয়ী শুটার আসিফ হোসেন খান এগিয়ে এসেছে তাঁর সেই সোনার পদকটি নিয়ে। জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক স্ট্রাইকার রোকনুজ্জামান কাঞ্চনও বিক্রি করতে চান তাঁর খুব প্রিয় একটা জার্সি।

মাত্র ১৫ বছর বয়সেই কমনওয়েলথ গেমসে সোনা জিতে হইচই ফেলে দিয়েছিলেন আসিফ। তাঁর কাছে হেরে গিয়েছিলেন ভারতের নামী শুটার অভিনব বিন্দ্রা। করোনার এই সময়ে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যে তিনি নিলামে তুলতে চান তাঁর সেই গর্বের সোনার পদটি।

আসিফ তাঁর পাবনার বাড়ি থেকে ফোনে আজ প্রথম আলোকে বলেন, 'করোনার এই সময়ে মানুষের পাশে দাঁড়াতে চাই। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি ২০০২ ম্যানচেস্টার কমনওয়েলথ গেমসের সোনার পদকটি নিলামে তুলব। আশা করি এই উদ্যোগ থেকে অন্তত কিছু মানুষকে সহায়তা করতে পারব। যা এখন খুব দরকার।'

দেশে ক্রিকেট ও ফুটবলের বাইরে এই প্রথম অন্য খেলার কেউ করোনা সহায়তায় নিজেদের প্রিয় কোনো জিনিস নিলাম করার উদ্যোগ নিলেন।

২০০৩ সালে বাংলাদেশ প্রথমবার সাফ ফুটবল জিতেছিল ঢাকায়। তাতে বড় অবদান রাখেন কাঞ্চন। সেমিফাইনালে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের ২-১ গোলের জয়ে প্রথম গোলটি তাঁর। গোল্ডেন গোল মতিউর মুন্নার। ফাইনালে মালদ্বীপের বিপক্ষে বাংলাদেশের একমাত্র গোল কাঞ্চনের। পরে টাইব্রেকারে জেতে বাংলাদেশ। টুর্নামেন্টে ৩ গোল করে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছিলেন স্ট্রাইকার কাঞ্চন।

২০০৩ সাল ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ দলে তারকা রোকনন কাঞ্চন বিক্রি করতে চান তাঁর প্রিয় জার্সি। ছবি: সংগৃহীত
২০০৩ সাল ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ দলে তারকা রোকনন কাঞ্চন বিক্রি করতে চান তাঁর প্রিয় জার্সি। ছবি: সংগৃহীত

আজ প্রথম আলোকে কাঞ্চন বলেন, '২০০৩ সালে ঢাকায় সাফ টুর্নামেন্ট জয় ছিল আমাদের দীর্ঘ প্রতিক্ষার ফল। আমরা প্রথমবার এই টুর্নামেন্ট জিতেছি। এই জয়ে অবদান রাখতে পেরে সব সময়ই গর্ব অনুভব করি। টুর্নামেন্টে ফাইনালের জার্সিটি আমার খুবই প্রিয়। এটি করোনায় ক্ষতিগ্রস্থদের সাহয়তায় উৎসর্গ করছি। নিলাম থেকে প্রাপ্ত অর্থ করোনায় অসহায় মানুষদের জন্য ব্যয় করব।'

আলফাজ আহমেদ আগেই ১৯৯৯ সালে কাঠমান্ডু সাফ গেমসে যের জার্সিটি পরে তিনি ফাইনালে গোল করেছিলেন সেটি নিলামে তুলতে চেয়েছেন। মোনেম মুন্নার স্ত্রীও জানান, ১৯৯৫ সালে মিয়ানমারে চারজাতি টুর্নামেন্ট জয়ে মুন্নার জার্সিটি তিনি নিলাম করতে চান। তবে মুন্নার স্ত্রী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে জার্সিটি দেখিয়েছেন সেটি ১৯৮৯ প্রেসিডেন্ট গোল্ডকাপে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ লাল দলের। সেটিও। ঐতিহাসিক জার্সি।

দেশের ফুটবল অঙ্গনে সবার আগে জার্সি নিলামে তোলার ঘোষণা দিয়েছেন সাবেক ফিফা রেফারি তৈয়ব হাসান। ২০১৩ সালে কাঠমান্ডুতেই সাফ ফুটবলের ফাইনাল পরিচালনা করার জার্সিটি নিলামে তোলার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। এরই মধ্য সাতক্ষীরার এক ব্যবসায়ী ২ লাখ টাকায় জার্সিটি কেনার আগ্রহ জানিয়েছেন।