'সস্তার তিন অবস্থা' দেখাচ্ছেন তিনি

বিপদেই পড়ল জুভেন্টাস ফাইল ছবি
বিপদেই পড়ল জুভেন্টাস ফাইল ছবি

এ প্রজন্মের সেরা মিডফিল্ডারদের কাতারে থাকার কথা ছিল তাঁর। এখনো পায়ের কাজ কিংবা মাঠে সতীর্থদের খুঁজে বের করার ক্ষেত্রে তাঁর দক্ষতা ঈর্ষণীয়। এমন মিডফিল্ডারকে মুফতে পাওয়ার লোভ কে সামলাতে পারে? জুভেন্টাসও পারেনি, তাই গত দলবদলে দলে টেনেছে আদ্রিয়ান রাবিওতকে। কিন্তু সে সিদ্ধান্ত এখন বিষফোঁড়া হয়ে উঠেছে ইতালিয়ান চ্যাম্পিয়নদের জন্য।


করোনাভাইরাসের কারণে জুভেন্টাসের সব খেলোয়াড় ও কোচ চার মাসের বেতন না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এতে প্রায় ৮০ মিলিয়ন ইউরো খরচ বেঁচে যাবে ক্লাবের। যা দিয়ে আর্থিক ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাবে দলটি। এবং ক্লাবের সাধারণ কর্মকর্তাদের বেতন নিশ্চিত করতে পারবে তারা। এমন মহৎ কাজে সবাই রাজি হলেও রাবিওত রাজি হননি। ইতালির লা স্তাম্পা পত্রিকা জানিয়েছে, রোনালদোর পর ক্লাবের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেতন পাওয়া রাবিওত তাঁর বার্ষিক ৯ মিলিয়ন ইউরোর এক-তৃতীয়ংশ কমে যাওয়ার ব্যাপারে খুশি নন। তাই তাঁর মা ভেরোনিক রাবিওতের পরামর্শে নাকি এখনো ইতালিতে আসছেন না। ফ্রান্সে রয়ে গেছেন। ইতালির বাইরে থেকে যারা দেশটিতে ফিরছেন, তাদের ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকতে হয়। ফলে রাবিওত যত দেরি করে ফিরবেন, তাঁর অনুশীলনে ফেরার সময়টা তত পিছিয়ে যাচ্ছে। রাবিওতের আচরণে জুভেন্টাস বোর্ড ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছে। অবশ্য এই মিডফিল্ডারকে কেনার সময়ই ক্লাবটির বোঝা উচিত ছিল কোন ঝামেলায় পড়তে যাচ্ছে তারা।

ফ্রেঞ্চ মিডফিল্ডারের প্রতিভা নিয়ে কখনোই কারও সন্দেহ ছিল না। কিন্তু তাঁর আচরণ মাথাব্যাথার কারণ ছিল তাঁর আগের সব কোচের জন্যই। তাঁর এজেন্ট ও মা ভেরোনিকার উপস্থিতি সবকিছু আরও জটিল করে তুলত। পিএসজিতে থাকার সময়টায় দুদিন পরপরই ক্লাবের সঙ্গে ঝামেলায় যেতেন এ দুজন। এমনকি রাবিওত যেন ভালো খেলে সেটা নিশ্চিত করার জন্য কোন ধরনের ফুটবলার পিএসজির কেনা উচিত সেটাও বলে দিতেন তাঁরা।

এসবই নেইমার-এমবাপ্পেদের কেনার আগের কথা। এ দুই মহাতারকা আসার আগে দলের সব প্রতিভাবান ভাবা হতো তাঁকে। কিন্তু সত্যিকারের বিশ্বমানের দুই খেলোয়াড় পাওয়ার পর রাবিওতের বালখিল্য আচরণ আর পাত্তা দেয়নি পিএসজি। আচরণগত সমস্যার কারণে প্রায় পুরো মৌসুম মাঠে নামানো হয়নি তাঁকে। ওদিকে নিজের চুক্তিও নবায়ন না করে মুফতে পিএসজি ছাড়ার পথ করে নিয়েছেন রাবিওত।

পিএসজির সঙ্গে ঝামেলা করে দল ছেড়েছিলেন বার্সেলোনায় যাবেন বলে। ২০১৯ সালের প্রথম ছয় মাসে ব্যাপারটি প্রায় পাকা হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু যোগদানের জন্য সাইনিং বোনাস ও বেতন বেশি চাওয়ায় শেষ পর্যন্ত বার্সেলোনা তাঁকে আর দলে নিতে রাজি হয়নি। এ সুযোগেই রাবিওতকে নিয়েছিল জুভেন্টাস। কারণ, তাঁর মানের একজন মিডফিল্ডারকে পেতে চাইলে দলবদলে অন্তত ৫০ মিলিয়ন ইউরো খরচ করতে হতো। বেতন বেশি দিয়েও তাই রাবিওতকে নিয়ে নিয়েছিল জুভেন্টাস। কিন্তু 'প্রবলেম চাইল্ড' দলে টানার ফল এখন ঠিকই টের পাচ্ছে। এ কারণেই তো এক মৌসুম শেষ হওয়ার আগেই রাবিওতকে বিক্রি করে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে তারা।

তার আগে বেতন সংক্রান্ত ঝামেলাটা মেটাতে হবে তাদের!