আলাদিনের দৈত্যের কাছে ওই জীবনটাই চাইতেন মাশরাফি

নড়াইলে নিজ এলাকায় মাশরাফি। ছবি: মাশরাফির ফেসবুক পেজ
নড়াইলে নিজ এলাকায় মাশরাফি। ছবি: মাশরাফির ফেসবুক পেজ

শৈশবে ভীষণ দুরন্ত ছিলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। নড়াইলে দাপিয়েছেন চিত্রা নদীর পাড়। চড়েছেন গাছে, বন্ধুদের সঙ্গে মেতেছেন দুষ্টুমিতে।

জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার পর ক্যারিয়ারের শুরুর দিকেও এমন দুরন্ত ছিলেন সাবেক এ অধিনায়ক। বহুবারই নানা প্রসঙ্গে নিজের শৈশবের কথা বলেছেন মাশরাফি। এবার জানা গেল নতুন তথ্য, মাশরাফিকে নাকি নড়াইলের এক বাগানের 'টারজান' বলা হতো।

কাল মাশরাফির ব্রেসলেটের নিলামে উঠে এসেছে সে প্রসঙ্গ। নিলামে ৪২ লাখ টাকায় বিক্রি হয় মাশরাফির ব্রেসলেট। এ নিয়ে ফেসবুকে লাইভ অনুষ্ঠানে উঠে এল মাশরাফির শৈশব। সাবেক অধিনায়ক নিজেই বললেন, নড়াইলের প্রায় সবাই চিত্রা নদী 'মিস' করে। তাঁর শৈশবের সঙ্গে এই নদী ওতপ্রোতভাবে জড়িত। নিলামে লাইভ অনুষ্ঠানে এক ভক্তের মজার প্রশ্নের জবাবে ফের শৈশবে ফিরে গেলেন মাশরাফি।

তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, হুট করে আলাদিনের দৈত্য এলে কোন তিনটি জিনিস চাইবেন? মাশরাফির জবাব, 'আমি প্রথম চাইব, অবশ্যই প্রতিটি মানুষ যেটা চায়, শৈশবে ফিরে যেতে। স্কুলজীবনে ফিরতে চাই, স্কুলের বন্ধুদের পেতে চাই।'

মাশরাফি এরপর তাঁর দ্বিতীয় ইচ্ছার কথা বলেন, 'দ্বিতীয় জিনিস চাইব, ওই সময় পার করার পর আমার ক্যারিয়ারের শুরুর দিকটা। যদিও আলহামদুলিল্লাহ, অনেক কিছু হতে পারত আমাকে দিয়ে, বাংলাদেশের আরও ভালো ফল হতে পারত, আমি যদি ফিট থাকতাম, সুস্থ থাকতাম। তবে আল্লাহর অশেষ মেহেরবাণী এত দিন পর্যন্ত খেলতে পেরেছি। যেহেতু প্রশ্ন করলেন তাই বলছি, ওই সময়ে ফিরে যেতে পারলে বুঝতে পারতাম কীভাবে নিজের যত্ম নিলে সুস্থ থাকব এবং দেশের হয়ে ভালো কিছু করতে পারব।'

তৃতীয় ইচ্ছাটা খুঁজতে মোটেই সময় লাগেনি মাশরাফির, 'যে পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছি অবশ্যই সে পরিবারকেই আবার ফিরে পেতে চাই।'

এরপরই সবচেয়ে পরিচিত প্রশ্নটা করা হয় মাশরাফিকে, ছোটবেলা কেমন দুরন্ত ছিলেন? জাতীয় দলের পেসার এবার একটু নড়েচড়ে বসে বলেন,'অসম্ভব ভাই। এটার বর্ণণা করা খুবই কঠিন এত অল্প সময়ে। তবে হ্যাঁ, যেটা হচ্ছে গাছে ওঠা, নদীতে সাঁতরানো, বন্ধুদের সঙ্গে খেলাধুলা করা। বাসায় কম থাকা। পড়ালেখাকে মনে হতো মাথায় যেন...ওই যে একটা ছবি আছে না (সঞ্চালক ধরিয়ে দেন তারে জমিন পার), অক্ষরগুলো গুলিয়ে যেত, ঠিক ওইরকম ছিলাম।'

সঞ্চালকদের একজন জিজ্ঞেস করেন মাশরাফিকে, নড়াইলের কোনো একটি বাগানের 'টারজান' বলা হতো নাকি তাঁকে?

মাশরাফি হেসে সত্যতা স্বীকার করলেন। বললেন, 'ঠিক, তুলসির বাগানের টারজান। আমার বাড়ির সঙ্গে হাতের বাঁয়ের বাগানটি। এখন আর বাগান নেই, প্রচুর বাড়ি উঠেছে। মালিক জায়গাটা বিক্রি করে চলে গিয়েছিলেন ভারতে। তো ওই বাগানে আম, লিচু, আঁশফল, যা কিছুই হতো মনে হতো সব আমার আয়ত্বে।'

সঞ্চালক কৌতুক করলেন, এখন এমপি হিসেবে এসব মনে না হলেই হয়! হেসে ওঠেন মাশরাফি।