মানুষ আত্মজীবনীতে যা-তা লেখে: স্টোকসকে নিয়ে হোল্ডিং

বেন স্টোকসের সমালোচনা করেছেন মাইকেল হোল্ডিং। ছবি: এএফপি
বেন স্টোকসের সমালোচনা করেছেন মাইকেল হোল্ডিং। ছবি: এএফপি

মাইকেল হোল্ডিং যা বলছেন, সেটিই যদি সত্যিই বেন স্টোকসের কৌশল হয়ে থাকে, তবে বলতে ইংল্যান্ড অলরাউন্ডার সফল। তাঁর আত্মজীবনী 'অন ফায়ার' এখনো বের হয়নি, তার আগেই যে বইটার নাম সবার মুখে মুখে চলে যাবার জোগাড়। অবশ্য বেন স্টোকস বলতে পারেন, 'আমি আর কী করেছি! আমি তো শুধু একটা ম্যাচ নিয়ে নিজের ভাবনাটাই জানিয়েছি!'

২০১৯ বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বে ভারতের বিপক্ষে যে ম্যাচটা ইংল্যান্ড ৩১ রানে জিতেছিল, তা নিয়েই যত কথা। স্টোকস বইতে 'সে ম্যাচে ভারত ইচ্ছে করে হেরেছে' লিখেছেন বলে জানিয়েছিল ভারতীয় সংবাদমাধ্যম। পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটার সিকান্দার বখত তো আরেক কাঠি সরেস। সে ম্যাচে ভারত জিতলে পাকিস্তানেরও সেমিফাইনালে যাওয়ার আশা বেঁচে থাকত। সিকান্দার বখত বলছেন, স্টোকস নাকি লিখেছেন, পাকিস্তানকে বিদায় করতেই ভারত সেই ম্যাচটা ইচ্ছা করে হেরেছে।

স্টোকস অবশ্য সেসব অস্বীকার করে বলেছেন, তিনি লিখেছেন, ভারতের জেতার আগ্রহ ছিল না। ভারত ইচ্ছে করে হেরেছে, এমনটা সংবাদমাধ্যম বানিয়েছে। এখন সেটি নিয়ে কথা বলেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ কিংবদন্তি মাইকেল হোল্ডিং। তাঁর কথা, স্টোকস ইচ্ছে করে বইয়ের কাটতি বাড়াতে অমন লিখেছেন।

সে ম্যাচে ৩৩৭ রান তাড়া করতে নেমে বিরাট কোহলি ও রোহিত শর্মার ধীরগতির ব্যাটিং আর শেষ দিকে মহেন্দ্র সিং ধোনির আরও হাত না খোলার কথা বইয়ে বলেছেন স্টোকস। কোহলি সেদিন ৭৬ বলে ৬৬ রান করেন, রোহিত করেন ১০৯ বলে ১০২। আর ধোনি ৩১ বলে ৪২ রান করলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট ছিল না।

কিন্তু হোল্ডিংয়ের মনে হচ্ছে, স্টোকসের এসব কথা যতটা না বিশ্লেষণ, তার চেয়ে বেশি বইয়ের কাটতি বাড়ানোর চেষ্টা। নিজের অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেল 'মাইকি–হোল্ড নাথিং ব্যাক'-এ হোল্ডিং বলেছেন, 'দেখুন, আজকাল মানুষ আত্মজীবনীতে যা ইচ্ছা তা-ই লিখে। কারণ এখন মানুষ নিজের মতামত জানানোর ক্ষেত্রে আরও স্বাধীন। আর যখন বই লিখে, তখন তাঁদের খবরের শিরোনামেও আসতে হয়।' বরং হোল্ডিংয়ের ব্যাখ্যা, 'সত্যি বলতে যাঁরা খেলাটা দেখেছেন সেদিন তাঁরা হয়তো স্টোকসের মতো উপসংহার টানবেন না যে ভারত সেদিন জেতার চেষ্টা করেনি।'

তবে আগেই সেমিফাইনাল নিশ্চিত হয়ে যাওয়ায় ভারত সেদিন শতভাগ দেয়নি, এমনটা একবার মনে হয়েছিল হোল্ডিংয়েরও, 'এটা এমন ম্যাচ ছিল না যেটা ভারতের জিততেই হতো। তবে আমার মনে হয় না কেউ বলতে পারবে ভারতের কৌশলই ছিল হেরে যাওয়ার। আমি ম্যাচটা দেখেছি, আর আমারও একবার মনে হয়েছিল ভারত শতভাগ দিচ্ছে না। ভুলটা ভাঙল যখন এমএস ধোনির প্রতিক্রিয়া দেখলাম। বুঝলাম যে ও খুব বেশি করেই জিততে চাইছিল। তাই আমার মনে হয় না হারাটা দলের সিদ্ধান্ত ছিল।'

ম্যাচটাতে বাঁচা-মরার সমীকরণ থাকলে অবশ্য ভারতের আরও তেজ চোখে পড়ত বলেই মনে হচ্ছে হোল্ডিংয়ের, '...তবে ডু অর ডাই ম্যাচে যেমন মরিয়া ভাব থাকত, সেটা ছিল না ভারতের। জিততেই হবে – এমন হলে সেদিন ভারতের কাছ থেকে আরও বেশি মরিয়া ভাব দেখতাম আমরা।'