এবারও ইউনাইটেডকে দেখিয়ে দেওয়া হলো না মরিনহোর

জয় না পাওয়ায় খুশি হওয়ায় কথা নয় হোসে মরিনহোর। ছবি: টুইটার
জয় না পাওয়ায় খুশি হওয়ায় কথা নয় হোসে মরিনহোর। ছবি: টুইটার
>

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে নিজেদের মাঠে ১-১ গোলে ড্র করেছে টটেনহাম হটস্পার

২০১৮ সালের শেষ দিকে বেশ বাজেভাবেই ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড থেকে বিদায় নেন পর্তুগিজ ম্যানেজার হোসে মরিনহো। মালিকপক্ষের সঙ্গে সমস্যা, শিষ্যদের সঙ্গে বাজে সম্পর্ক – ক্লাব থেকে চলে যাওয়ার সময় ইউনাইটেডের তেমন কোনো বন্ধুই পাননি এই পর্তুগিজ।

এক বছর পর সেই মরিনহোই টটেনহাম হটস্পারের ম্যানেজার। লন্ডনে যাওয়ার পর এই নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো নিজের সাবেক ক্লাব ইউনাইটেডের মুখোমুখি হয়েছিলেন মরিনহো। প্রথমবারের স্মৃতিটা অত সুমধুর নয়, মার্কাস রাশফোর্ডের জোড়া গোলে ২-১ গোলে হেরেছিল টটেনহাম। কাল দ্বিতীয় মুখোমুখিতেও জয় পাওয়া হল না মরিনহোর। দেখিয়ে দেওয়া হল না, ইউনাইটেড কাকে হারিয়েছে!
নিজেদের মাঠে ম্যানচেস্টারের লাল দলের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করেছে মরিনহোর টটেনহাম। দ্বিতীয় পেনাল্টি গোলে মহামূল্যবান ২ পয়েন্ট হারিয়েছে স্পাররা। এর সঙ্গে গামী মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগে সুযোগ পাওয়ার দৌড়ে এগিয়ে থাকার একটা সম্ভাবনাও।

প্রথম থেকেই ম্যাচের লাগাম ছিল ইউনাইটেডের হাতে। ছোট ছোট পাসে খেলা গড়ে আক্রমণে যাওয়ার ইচ্ছে ছিল ম্যাগুয়ার-ব্রুনো ফার্নান্দেজদের। তবে আক্রমণভাগে গিয়েই বারবার গোল বেঁধে যাচ্ছিল। সে সুযোগেই স্রোতের বিপরীতে ২৭ মিনিটে গোল করে বসেন স্পারদের ডাচ উইঙ্গার স্টিভেন বার্গউইন। তবে এই গোলে বার্গউইনের ভূমিকা যত বেশি, তাঁর চেয়ে বেশি 'ভূমিকা' হয়তো ইউনাইটেড ত্রয়ী মার্কাস রাশফোর্ড-হ্যারি ম্যাগুয়ার ও ডেভিড ডি গিয়ার।
মাঝমাঠে বলের দখল নিতে গিয়ে অলসভাবে টটেনহাম খেলোয়াড়দের কাছে হেরে যান রাশফোর্ড। বল চলে যায় বার্গউইনের কাছে। পরের কয়েক সেকেন্ডে স্পষ্ট হয়ে যায়, ইউনাইটেডের দুই সেন্টারব্যাক হ্যারি ম্যাগুয়ার, ভিক্টর লিন্ডেলফ ও লেফটব্যাক লুক শ যে কতটা ধীরগতির খেলোয়াড়।
দ্রুততার সঙ্গে দুই তিনজনকে কাটিয়ে বক্সে ঢুকেই ডান পায়ের শক্তিশালী শট নেন বার্গউইন। ম্যাগুয়ারের সাধ্যই ছিল না বার্গউইনকে আটকানোর। পরের ভুলটা করে বসেন ইউনাইটেডের গোলরক্ষক ডেভিড ডি গিয়া। যত জোরেই মারা হোক না কেন, বার্গউইন শটটা মেরেছিলেন ডি গিয়ার শরীর বরাবর। অন্য সময় হলে হয়তো ডি গিয়ার মানের গোলরক্ষক আটকাতে পারতেন।সেটা হয়নি। উল্টো ডা হেয়ার হাতে বল লেগে জালে ঢুকে যায়।

পরে শত চেষ্টা করেও ইউনাইটেড যখন ম্যাচে ফিরতে পারছিল না, শেষ চেষ্টা হিসেবে মেসন গ্রিনউড ও পল পগবাকে মাঠে নামান ইউনাইটেডের কোচ ওলে গুনার সুলশার। আর তাতেই খেলার গতিপথ পাল্টে যায়। পগবা যতক্ষণ মাঠে ছিলেন মুগ্ধ করেছেন। এমনকি ইউনাইটেড গোলটাও পেয়েছে পগবার কল্যাণে। বিপজ্জনকভাবে ডি-বক্সে ঢুকে যাওয়া পগবাকে আটকানোর জন্য ফেলে দেন টটেনহামের ইংলিশ সেন্টারব্যাক এরিক দিয়ের। সেই পেনাল্টি থেকে গোল করে ইউনাইটেডকে সমতায় ফেরান গত জানুয়ারিতে দলে আসা ব্রুনো ফার্নান্দেজ।
ব্রুনো দলে আসার পর থেকে ইউনাইটেড সমর্থকেরা আশায় বুক বেঁধেছিলেন, ব্রুনো-পগবা জুটি তাঁদের আবারও আগের অবস্থানে নিয়ে যাবে। গত রাতে যতক্ষণ দুজন একসঙ্গে খেলতে আশার বেলুনটা ক্রমাগত ফুলেছে। এমনকি ম্যাচের শেষদিকেও ব্রুনোর কল্যাণে আরেকটা পেনাল্টি পায় ইউনাইটেড। পরে যদিও ভিএআরের কল্যাণে সে পেনাল্টি বাতিল হয়।

৩০ ম্যাচে ৪৬ পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবিলের পাঁচে ইউনাইটেড। ওদিকে ৪২ পয়েন্ট নিয়ে আটে টটেনহাম।