তিনিও মেসির মতো হতে পারতেন, যদি…

লিলোর প্রশংসায় পঞ্চমুখ ‘হতে না পারা মেসি’। ছবি: টুইটার
লিলোর প্রশংসায় পঞ্চমুখ ‘হতে না পারা মেসি’। ছবি: টুইটার
নিজের নতুন সহকারী কোচ রেখেছেন ম্যানচেস্টার সিটির ম্যানেজার পেপ গার্দিওলা। হুয়ানমা লিলো নামের এই কোচ অনেকের চোখেই নিজের কাজটা বেশ ভালো বোঝেন

কখনো শুনেছেন কোনো খেলোয়াড়ের নাম ‘কলম্বিয়ান মেসি?’

এমনিতেই নতুন মেসির অভাব নেই। অনেকের চোখে লিভারপুলের উইঙ্গার মোহাম্মদ সালাহ হলেন ‘মিসরীয় মেসি।’ সাবেক চেলসি তারকা মার্কো মারিন কিংবা বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের মারিও গোটশেকেও অনেকে বলেছেন ‘জার্মান মেসি’। জেনিত সেন্ট পিটার্সবার্গের সর্দার আজমুনকে বলা হয় ‘ইরানিয়ান মেসি।’ ওদিকে ‘তুর্কি মেসি’ এএস রোমার চেঙ্গিজ উনদের, ‘প্যারাগুয়ের মেসি’ হুয়ান ইতুর্বে আর ‘ম্যাক্সিকান মেসি’ হিসেবে ডিয়েগো লাইনেজের নামডাক আছে বেশ। বেশ আগে ‘আমেরিকান মেসি’ তকমা পেয়েছিলেন ফ্রেডি এডু। ‘দক্ষিণ এশিয়ার মেসি’ হিসেবে মালদ্বীপের আলি আশফাকও বেশ সমাদৃত।

কিন্তু কলম্বিয়ান মেসি হিসেবে কখনো কারও নাম সেভাবে শোনা যায়নি। যুগে যুগে কার্লোস ভালদেরামা, হামেস রদ্রিগেজ, দেলিও গাম্বোয়া, ফ্রেডি রিংকন কিংবা হুয়ান পাবলো অ্যানহেলের মতো তারকারা খেলে গেলেও সেভাবে কারও নাম ভেসে আসেনি। তবে এই ধারার ব্যতিক্রম ঘটেই যেত যদি মায়ের কান্দেলো তাঁর ক্যারিয়ারের শুরু দিকে হুয়ানমা লিলোকে কোচ হিসেবে পেতেন!

বিভ্রান্তি লাগছে, তাই তো? স্বাভাবিক। কে এই মায়ের কান্দেলো? হুয়ানমা লিলোই-বা কে? প্রশ্ন ওঠাই স্বাভাবিক। তাহলে খোলাসা করে বলা যাক।

হুয়ানমা লিলো বহু আগেই থেকেই স্পেনের ফুটবলে প্রজ্ঞাবান কোচ হিসেবে পরিচিত। ম্যানেজার ছিলেন রিয়াল সোসিয়েদাদ, টেনেরিফে, রিয়াল জারাগোজা, আলমেরিয়ার মতো ক্লাবগুলোর। সহকারী কোচের দায়িত্ব পালন করেছেন সেভিয়ায়। এমনকি কোপা আমেরিকাজয়ী চিলি দলে ম্যানেজার মার্সেলো বিয়েলসার সহকারী হিসেবেও কাজ করেছেন এই স্প্যানিশ। কিছুদিন আগেও আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা, থমাস ভারমিউলেন, সার্জি স্যাম্পারের কোচ ছিলেন জাপানি ক্লাব ভিসেল কোবে তে।

সেই হুয়ানমা লিলোই এখন দায়িত্ব নিয়েছেন ম্যানচেস্টার সিটির ম্যানেজার পেপ গার্দিওলার সহকারী হিসেবে। মিকেল আরতেতা আর্সেনালের ম্যানেজার হয়ে চলে যাওয়ার পর বহুদিন ধরে সহকারী জায়গাটা ফাঁকা ছিল সিটির। সে ফাঁকা জায়গা পূরণ করতে মাঝে শোনা গিয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদ, লিভারপুল ও বায়ার্ন মিউনিখের সাবেক মিডফিল্ডার জাবি আলোনসোর নাম। তবে আলোনসো নন, গার্দিওলা ভরসা রেখেছেন লিলোর ওপরেই।

আর এই লিলো যে ম্যানেজার হিসেবে কত ভালো, সেটা বোঝা গেছে কলম্বিয়ার ফুটবলার মায়ের কান্দেলোর কথায়। ক্যারিয়ার শুরুর দিকে লিলোকে কোচ হিসেবে পেলে আজ মেসির সমান হয়ে যেতেন বলে মনে করছেন কান্দেলো, ‘বিশ বছর বয়সে যদি লিলোকে কোচ হিসেবে পেতাম, আজ আমিই মেসি হতাম। ও আমাকে ফুটবল খেলতে শিখিয়েছে। ও যেভাবে আমাদের কোচিং করিয়েছে, আমি শ্রদ্ধা করি। অন্যান্যদের চেয়ে অনেক ব্যতিক্রম সে।’

১৯৯৬ সালে অভিষিক্ত হওয়া কান্দেলো কখনো দক্ষিণ আমেরিকার বাইরে ক্লাব ফুটবল খেলতে বের হননি। ২০১৪ সালে কলম্বিয়ান ফুটবল ক্লাব মিলিয়নারিসে খেলার সময় লিলোকে কোচ হিসেবে পেয়েছিলেন কান্দেলো। ক্যারিয়ারে মোটামুটি সফল একটা সময় সেখানেই কাটিয়েছেন।

কে জানে, ক্যারিয়ারের শুরুতে লিলোকে পেলে হয়তো কান্দেলোকে ইউরোপে খেলতেও দেখা যেত!