কৃষ্ণাঙ্গ হওয়ায় কষ্ট সইতে হয়েছে এনটিনিকেও

দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক পেসার মাখায়া এনটিনি । ছবি সংগৃহীত।
দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক পেসার মাখায়া এনটিনি । ছবি সংগৃহীত।
কৃষ্ণাঙ্গ বলে সতীর্থদের কাছ থেকে বঞ্চনার শিকার হয়েছেন এনটিনি। দলের ভীড়ে থেকেও ‌'একা' হয়ে গিয়েছিলেন।

বর্ণবাদ বিরোধী আন্দোলনে যোগ দিয়ে কদিন আগেই জর্জ ফ্লয়েড হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ করেছেন দক্ষিণ আফ্রিকান পেসার লুঙ্গি এনগিডি। এর আগে 'ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার' আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন ক্রিস গেইল, ড্যারেন স্যামির মতো তারকা ক্রিকেটার। আইপিএলে খেলতে গিয়ে স্যামিকে শুনতে হয়েছে 'কালু' ডাক। তিক্ত অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গেছেন গেইলও। এবার তেমনই এক কষ্টের অভিজ্ঞতা জানালেন দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক পেসার মাখায়া এনটিনি। 

দক্ষিণ আফ্রিকার টেস্ট দলের কৃষ্ণাঙ্গ এই ক্রিকেটারকে কম মানসিক নির্যাতনের মধ্য দিয়ে যেতে হয়নি। গায়ের চামড়া কালো বলে সতীর্থদের কেউ সেভাবে ডেকে কথা বলতেন না। খাওয়ার সময় ডাকতেন না কেউ। এমনকি খাবার টেবিলে তাঁর পাশেও কেউ বসতে চাইতেন না। নিজেকে তখন খুব একা মনে হতো এনটিনির।
বর্ণবাদ নিয়ে আন্দোলন যখন তুঙ্গে, তখনই এসব বিষয়ে মুখ খুললেন এনটিনি। নিজের কষ্টের অভিজ্ঞতার কথা এভাবেই বললেন, 'আমি চিরকাল একা ছিলাম। রাতের খাবারের সময় কেউ আমাকে ডাকত না। সতীর্থরা দল নিয়ে পরিকল্পনা সাাজাত আমারই সামনে, কিন্তু আমাকে ছাড়াই এসব হতো। যখন সকালের নাস্তার জন্য যেতাম, কেউ আমার পাশে বসত না। আমরা একই জার্সি পরতাম এবং একই জাতীয় সঙ্গীত গাইতাম। কিন্তু আমাকে একাকীত্ব জয় করেই থাকতে হতো।'

দলের মধ্যে তীব্র বৈষম্যের শিকার হয়েছেন, কিন্তু কখনোই কাউকে বুঝতে দিতেন না এনটিনি, 'আমি টিম বাসের ড্রাইভারের হাতে ব্যাগ তুলে দিতাম। এরপর ক্রিকেট মাঠে দৌড়ে যেতাম। আসার সময়ও একই রকম কাজ করতাম। লোকে কখনো বুঝত না কেন আমি এসব করতাম। তাদের কখনো বলিনি যে কি এড়ানোর চেষ্টা করছি।'
দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে ১০১টি টেস্ট, ১৭৩ ওয়ানডে ও ১০টি টি-টোয়েন্টিতে ৬৫০ উইকেটের মালিকের ছেলে থান্ডো এনটিনিকেও বর্ণবাদের শিকার হতে হয়েছে। অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট ক্যাম্পে যাওয়াটা প্রায় বন্ধই হয়ে যাচ্ছিল থান্ডোর। সেই কষ্টের কথাটাও জানালেন এনটিনি, 'আমি একাকীত্ব থেকে পালিয়ে থেকেছি। আমি যদি বাসের পেছনের সিটে বসতাম তাহলে তারা গিয়ে বসতো সামনের দিকে। যখন আমরা জিততাম সবাই খুশি থাকতাম। কিন্তু হেরে গেলেই দোষ পড়ত আমার ঘাড়ে। আমার ছেলে থান্ডোকেও একই অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয়েছে। ওর অনূর্ধ্ব-১৯ ক্যাম্পে যাওয়াটা প্রায় বন্ধই হয়ে যাচ্ছিল।'