রিয়াল জার্সির ওজন নিতে পারছেন না হ্যাজার্ড?

হ্যাজার্ডের ওপর অনেক ভরসা জিদানের। ছবি: রয়টার্স
হ্যাজার্ডের ওপর অনেক ভরসা জিদানের। ছবি: রয়টার্স

খবরটি প্রকাশ হতেই মজা পেয়েছিলেন সবাই। এবার লা লিগায় রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে মোটে এক গোল করেছিলেন এডেন হ্যাজার্ড। তবু লা লিগা জয়ের কারণে দলবদলের শর্ত মেনে চেলসিকে ১৫ মিলিয়ন ইউরো দিতে হবে রিয়ালকে। লিগ জয়ে যাঁর বলতে গেলে কোনো অবদান নেই তাঁর জন্য এত অর্থ খরচ! ‘টাকা পানিতে ফেলা’র খুব ভালো উদাহরণ বলা যায় একে।

মৌসুমের শুরুতে রিয়াল নিশ্চয় এমনটা ভাবেনি। জিনেদিন জিদান বহুদিন ধরেই রিয়ালে চাচ্ছেন হ্যাজার্ডকে। ২০১২ সালে যাকে চেয়েছিলেন তাঁকে ২০১৯ সালে পেয়েছেন ১০০ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে। সঙ্গে শর্ত সাপেক্ষে আরও ৩০ মিলিয়ন ইউরো তো আছেই। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো রেখে যাওয়া শূন্যস্থান পূরণ করার দায়িত্বটা দেওয়া হয়েছিল হ্যাজার্ডকে। আর সে মৌসুমকেই ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বাজে মৌসুম বলে নিজেই স্বীকার করে নিয়েছেন বেলজিয়ান উইঙ্গার।

সাবেক রিয়াল মাদ্রিদ কোচ ফ্যাবিও ক্যাপেলোর ধারণা, রিয়াল মাদ্রিদের জার্সির ওজনটাই কাল হয়ে গেছে হ্যাজার্ডের জন্য। এর আগেও অনেক তারকা রিয়ালে এসে প্রত্যাশিত সাফল্য পাননি। বহু অর্থের বিনিময়ে ক্লাবে যোগ দিয়েও প্রায় কোনো দাগ কাটতে পারেননি ব্যালন ডি’অর জয়ী রিকার্ডো কাকা। মিডফিল্ডার ইয়ারামেন্দিকে দলবদলের স্প্যানিশ রেকর্ড ভেঙে এনেছিল রিয়াল। নিজের ছায়া হয়ে দুই মৌসুম কাটিয়ে আবার আগের দলে ফিরে গেছেন। হ্যাজার্ডের ক্ষেত্রেও এমন কিছু ঘটবে না তো—প্রশ্ন উঠে গেছে এখনই।

দুবার চোটে পড়ে লিগে মাত্র ১৬ ম্যাচ খেলতে পেরেছেন। সব মিলিয়ে ২১ ম্যাচে মাত্র ১ গোল করেছেন। অথচ চেলসির হয়ে গত মৌসুমেও লিগে ৩২ ম্যাচে ১৬ গোল করেছেন, সতীর্থদের দিয়ে করিয়েছেন ১৫ গোল। ক্যাপেলোর ধারণা দুই ক্লাবের মানের পার্থক্যটা প্রভাব ফেলেছে হ্যাজার্ডের পারফরম্যান্সে, ‘চেলসিতে যেমন ছিল তেমন খেলতে পারছে না, এটা তো পরিষ্কার। অনেক সময় চোটে পড়েছিল, দলের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারেনি। ওকে সব সময় দারুণ খেলোয়াড় হিসেবেই জানি। কিন্তু এটাও সত্যি, রিয়াল মাদ্রিদের জার্সির ভার অনেক। এবং হ্যাজার্ড সে চাপে গুটিয়ে ছিল। আগামী মৌসুমে নির্ঘাত ভালো করবে।’

ক্লাবের ইতিহাসের সবচেয়ে দামি খেলোয়াড়ের ব্যর্থতাও রিয়ালের লিগ শিরোপায় বাধা হয়নি। গ্যারেথ বেল, রদ্রিগো, ভিনিসিয়ুস জুনিয়র ও লুকা ইয়োভিচরাও গোল খরার মধ্য দিয়ে গেছেন। তাও কোচ জিদানের দ্বিতীয় লিগ জয়টা এক ম্যাচ আগেই নিশ্চিত হয়েছে। আর এর পেছনে স্ট্রাইকার করিম বেনজেমার অবদান অনেক। ২১ গোল করেছেন, আটটি গোল বানিয়ে দিয়েছেন বেনজেমা। ক্যাপেলোর চোখে মাদ্রিদ ক্যারিয়ারের সেরা সময় পার করছেন বেনজেমা, ‘রিয়াল মাদ্রিদে সে নতুন মানদণ্ড ঠিক করছে। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো থাকার সময়টায় যে দায়িত্ব নিতে হতো না, সেটাই বুঝে নিয়েছে। আমার চোখে ও রিয়ালে আসার পর এটাই সেরা মৌসুম ছিল।’