সাঙ্গাকারার পছন্দ লারা, দুঃস্বপ্ন আকরাম

ব্রায়ান লারা তখন ফর্মের তুঙ্গে। ওয়াসিম আকরাম তাঁর ক্যারিয়ারের সায়াহ্নে। ২০০০ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কুমার সাঙ্গাকারার অভিষেকটা ঠিক এমন সময়ে। উইকেটের পেছন থেকে দেখেছেন লারার শৈল্পিক ব্যাটিং। ব্যাটিংয়ের সময় সামলেছেন ওয়াসিমকে। দুই অভিজ্ঞতা থেকেই নিজের পছন্দের ব্যাটসম্যান ও বোলার হিসেবে লারা ও আকরামকে বেছে নিয়েছেন সাঙ্গাকারা।

শ্রীলঙ্কার হয়ে ১৫ বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেছেন সাঙ্গাকারা। ১৩৩ টেস্টে ৫৭.৭৯ গড়ে ১২ হাজার ৩১০ রান করেছেন আধুনিক ক্রিকেটের এই কিংবদন্তি। ৩৮টি টেস্ট সেঞ্চুরি ও ৫১ ফিফটির মালিক তিনি। টেস্টে সর্বকালের সেরা রান সংগ্রাহকদের মধ্যে ষষ্ঠ হলেও ওয়ানডেতে আছেন দ্বিতীয়তে। শচীন টেন্ডুলকারের ১৮ হাজার ৪২৬ রানের পরই সাঙ্গাকারার ১৪ হাজার ২৩৪। ২০১৪ সালে বাংলাদেশের মাটিতে বিশ্বকাপ টি-টোয়েন্টিও জিতেছেন সাঙ্গাকারা।

এই লঙ্কান কিংবদন্তির ব্যাটিং প্রেমের শুরু অবশ্য ভিভ রিচার্ডসকে দেখে। আশির দশকে ভিভের বিধ্বংসী ব্যাটিং অনুপ্রাণিত করে সাঙ্গাকারাকে। তবে সাঙ্গাকারার ব্যাটিংয়ে ভিভের একটুও ছায়া নেই। স্পিনারদের বিপক্ষে সাঙ্গাকারার ব্যাটিংয়ে কিছুটা মিল আছে ব্রায়ান লারার। দুজনই স্পিনে খুবই পারদর্শী। কদিন আগে সাঙ্গাকারা বলছিলেন, ‘ব্রায়ান লারা আসার আগে আমার ব্যাটিং নায়ক ছিলেন ভিভ রিচার্ডস। এরপর থেকে দুজনে সমান আগ্রহ আমার।’

তবে সাঙ্গাকারার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার হওয়ায় স্বপ্ন দেখা শুরু হয় ১৯৯৬ সালের বিশ্বকাপ থেকে। শ্রীলঙ্কা বিশ্বকাপ জেতায় পুরো দেশে নাকি ক্রিকেটের জোয়ার শুরু হয়। সাঙ্গাকারাও বাদ যাননি। স্কুল ক্রিকেটের গন্ডি পার করেই সুযোগ মিলে জাতীয় দলে খেলার। উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান হিসেবে সাঙ্গাকারা জায়গা নেন ১৯৯৬ বিশ্বকাপজয়ী উইকেটকিপার রমেশ কালুভিথারানার। এরপর আর পেছনে তাকাননি সাঙ্গাকারা। তাঁর অবসরের সময় ভারতের কোচ রবি শাস্ত্রী বলছিলেন, 'আমি তাঁর অভিষেক দেখেছি। আজ শেষ দেখলাম। কিন্তু ১৫ বছরে তাঁর কখনো ফর্ম খারাপ দেখিনি।'

এত বড় মাপের ব্যাটসম্যান, তবু তিনি যমের মতো ভয় পেতেন পাকিস্তানি কিংবদন্তি ওয়াসিম আকরামকে। আরেক বাঁহাতি পেসার জহির খানের নামও নিয়েছেন। জহির তাঁর সেরা সময়ে বিশ্বের যেকোনো বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের ঘুম হারাম করার সামর্থ্য রাখতেন। নতুন বলে সুইং, পুরোনো বলে রিভার্স সুইং—এই দুইয়ের মিশেলে জহিরও হতে উঠতেন ভয়ংকর। সাঙ্গাকারা বলছিলেন, ‘ওয়াসিম আকরামকে খেলা ছিল দুঃস্বপ্নের মতো। জাহির খানকেও আমি অনেক খেলেছি। তাঁকে খেলাও খুব কঠিন ছিল।’