তাঁর বয়সটা মেসি-রোনালদোর চেয়েও কম

লাইপজিগ কোচ ইউলিয়ান নাগালসমান। কাল অ্যাটলেটিকোর বিপক্ষে ম্যাচে। ছবি: এএফপি
লাইপজিগ কোচ ইউলিয়ান নাগালসমান। কাল অ্যাটলেটিকোর বিপক্ষে ম্যাচে। ছবি: এএফপি

হতে চেয়েছিলেন ফুটবলার। কিন্তু হাঁটুর চোট স্বপ্নপূরণ হতে দেয়নি। অগসবুর্গ ও মিউনিখের মূল দলে খেলার সুযোগ পাননি। অনূর্ধ্ব-১৯ দলে থাকতেই তাঁকে ইতি টানতে হয় ফুটবল ক্যারিয়ারের। এরপর আর কী থাকে!

যেটুকু বাকি থাকে সেটাও স্বপ্ন। ফুটবলের সঙ্গে লেগে থাকার স্বপ্ন। ইউলিয়ান নাগলসমান তাই কোচ হতে চেয়েছিলেন। চার সেমিস্টার ব্যবসায় প্রশাসনে পড়ার পর তিনি চলে যান ক্রীড়া বিজ্ঞানে। এরপর নেমে পড়লেন কোচিংয়ে। ২০১৬ সালে হফেনহেইমের মূল দলের দায়িত্ব পান তিনি। ২৮ বছর বয়সে হয়ে যান বুন্দেসলিগার কনিষ্ঠতম কোচ। যে বয়স অনেক ফুটবলারের জন্য ক্যারিয়ারের সেরা সময়, নাগালসমান সে বয়সেই সামলাতে শুরু করেন ডাগ আউট, ড্রেসিং রুম, খেলোয়াড়ের মতো সংবেদনশীল সব বিষয় ও মানুষ।

কিন্তু ওই যে স্বপ্নের কথা বলা হলো, তা থাকলে বাধা-বিপত্তি জয়ের খিদেটাও থাকে। গত বছর ১৯ জানুয়ারি বুন্দেসলিগার ইতিহাসে কনিষ্ঠতম কোচ হিসেবে ১০০ ম্যাচের মাইলফলক ছুঁয়ে ফেলেন নাগলসমান। থেমে যাওয়ার পাত্র তিনি নন। গত বছর বদলে ফেলেন স্বপ্নের পরিধি। দায়িত্ব নেন জার্মান ফুটবলে ধূমকেতুর মতো উত্থান ঘটানো লাইপজিগের। এখন পাড়ি দিচ্ছেন সামনের পথটুকু। কাল রাতে সে পথেরই মোড়ে নাগালসমান দেখা পেলেন অনন্য এক রেকর্ডের। এই রেকর্ড নিঃসন্দেহে পৃথিবীর তাবৎ তরুণ কোচের জন্য প্রেরণার, ব্যর্থ হলেও যে হাল ছাড়তে নেই—নাগলসমানের অর্জন এই পুরোনো কথাটাই টেনে আনে সামনে।

চ্যাম্পিয়নস লিগ কোয়ার্টার ফাইনালে কাল রাতে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদকে ২-১ গোলে হারিয়েছে লাইপজিগ। এ ম্যাচে ডাগ আউটে নাগালসমানের পোশাক নিয়ে বেশ রসিকতাও হয়েছে। স্যুটের সঙ্গে ট্রাউজার, সেটিও প্রায় ইঞ্চি দু-এক খাটো। পায়ে কেডস। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একজনের মন্তব্য, কাল রাতে ইউরোপে সবচেয়ে দুর্দান্ত মানুষটা বুঝি নাগলসমান? ম্যাচ শেষে খেলোয়াড়দের সঙ্গে হাত মেলানোর সময় মনে হচ্ছিল এ বুঝি আরেক ফুটবলার! ঝামেলা শুধু পরনের স্যুট।

সে যাই হোক ৩৩ বছর বয়সী নাগলসমান এখন চ্যাম্পিয়নস লিগ সেমিফাইনালে ওঠা সর্বকনিষ্ঠ কোচ। লিওনেল মেসি ও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোও বয়সে তাঁর চেয়ে এগিয়ে। শুধু এ দুই তারকা নয়, লুইস সুয়ারেজ, জেরার্ড পিকে, সার্জিও রামোস, ম্যানুয়েল নয়্যার, ডেভিড লুইজরাও লাইপজিগ কোচের চেয়ে বয়সে বড়। শুধু কী তাই, অ্যাটলেটিকো কোচ ডিয়েগো সিমিওনের পেশাদার ফুটবলে অভিষেক ১৯৮৭ সালে, নাগলসমানের জন্ম তার কয়েক মাস আগে।