টেন্ডুলকার যেভাবে 'শচীন পাজী' হয়েছিলেন

কপিলের পর টেন্ডুলকারেরই সুযোগ হয়েছে ‘পাজী’ ডাক শোনার। ছবি: এএফপি
কপিলের পর টেন্ডুলকারেরই সুযোগ হয়েছে ‘পাজী’ ডাক শোনার। ছবি: এএফপি

এর আগে সম্মানটা শুধু একজনের জন্যই বরাদ্দ ছিল—১৯৮৩ সালে ভারতকে প্রথম বিশ্বকাপের স্বাদ এনে দেওয়া অধিনায়ক কপিল দেব। ক্যারিয়ারের শেষ দিকে এসে সে সম্মান পেয়েছেন শচীন টেন্ডুলকারও। ভারতে কাউকে সম্মান দেখাতে 'পাজী' ডাকা হয়, শেষদিকে এসে টেন্ডুলকারকে 'শচীন পাজী' ডাকা হতো। এর আগে যেভাবে কপিলকে ডাকা হতো ‘কপিল পাজী’।

কিন্তু এই ‘পাজী’র সম্মান কীভাবে জুড়ে গেল টেন্ডুলকারের নামের সঙ্গে? কখনই-বা জুড়ে গেল? ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই তো আর তাঁকে ‘শচীন পাজী’ ডাকতেন না কেউ! টেন্ডুলকারের সেই সম্মানে জড়িয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে একটা ম্যাচ আর টেন্ডুলকারের বিশেষ একটি ইনিংস। যে গল্প এত দিন পর জানা গেল সাবেক ভারতীয় পেসার আশিষ নেহরার কাছে।

২০০৩ বিশ্বকাপে পাকিস্তানকে হারানোর পথে ৯৮ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেছিলেন টেন্ডুলকার। ভারতীয় ব্যাটিং কিংবদন্তির ওয়ানডে ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা ইনিংসই ভাবা হয় সেটিকে। সেঞ্চুরিয়নে সেই ইনিংস দিয়েই ওয়ানডেতে ১২ হাজার রানের মাইলফলকও ছুঁয়েছিলেন টেন্ডুলকার।

সাঈদ আনোয়ারের সেঞ্চুরিতে পাকিস্তান সেদিন ২৭৪ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দিয়েছিল ভারতের সামনে। জবাবে ৫৩ রানের মধ্যেই বীরেন্দর শেবাগ ও সৌরভ গাঙ্গুলীকে হারালেও টেন্ডুলকারের ৭৩ বলে ৯৮ রানের দারুণ ইনিংসে জয়ের পথ খুঁজে পায় ভারত। ইনিংসে ১২ চারের পাশাপাশি শোয়েব আখতারকে পয়েন্টে বিশাল এক ছক্কাও মেরেছিলেন টেন্ডুলকার। ভারত ম্যাচটা জেতে ৬ উইকেটে, ২৬ বল হাতে রেখে।

সেই ম্যাচের পরই টেন্ডুলকারের নামের সঙ্গে যোগ হয় ‘পাজী’। ক্যারিয়ারের শেষ দিক থেকে শুরু করে এখনো ভারতের বর্তমান ও সাবেক ক্রিকেটাররা—এমনকি তাঁর একসময়ের সতীর্থরাও—তাঁকে শচীন পাজী নামেই ডাকেন।
‘এর আগে তাঁকে আমরা শচীন নয়তো শচীন ভাই বলে ডাকতাম। “পাজী” শব্দটা আমরা প্রথম ব্যবহার করি ২০০৩ বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচের পর’—ভারতীয় টিভি চ্যানেল স্টার স্পোর্টসে ভারত-পাকিস্তানের ২০০৩ বিশ্বকাপের সেই ম্যাচ ফিরে দেখার অনুষ্ঠানে বলেছেন নেহরা।
তা টেন্ডুলকারকে এভাবে সম্মানিত করার ভাবনাটা প্রথম আসে কার মাথায়? নেহরার উত্তর, ‘আমরা হোটেলে ফেরার সময় বাসের পেছন থেকে হরভজন সিং “পাজী নাম্বার ওয়ান” গাইতে শুরু করল। সেখান থেকেই শচীন টেন্ডুলকারকে সবাই পাজী ডাকা শুরু করল। এর আগে শুধু একজনই পাজী ছিলেন—কপিল পাজী।’
ইনিংসটা বিশেষ ছিল, সে জন্য টেন্ডুলকার উপহারটাও পেয়েছেন বিশেষ।