উৎসবেও অবসর বিতর্ক

দীর্ঘদিনের আক্ষেপ ঘুচিয়ে ট্রফি নিয়ে দেশে ফিরেছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের নতুন চ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কা। বীরদের বরণ করতে রাস্তার দুধারে দাঁড়িয়ে ছিল হাজারো জনতা। ইনসেটে বিশ্বকাপ ও ম্যান অব দ্য ফাইনাল ট্রফি হাতে মালিঙ্গা-সাঙ্গাকারা। কাল কলম্বোতে, এএফপি
দীর্ঘদিনের আক্ষেপ ঘুচিয়ে ট্রফি নিয়ে দেশে ফিরেছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের নতুন চ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কা। বীরদের বরণ করতে রাস্তার দুধারে দাঁড়িয়ে ছিল হাজারো জনতা। ইনসেটে বিশ্বকাপ ও ম্যান অব দ্য ফাইনাল ট্রফি হাতে মালিঙ্গা-সাঙ্গাকারা। কাল কলম্বোতে, এএফপি

বাইরে হাজারো সমর্থকের ভিড়। কালো প্যান্টের সঙ্গে নীল টি-শার্ট পরা মালিঙ্গা-জয়াবর্ধনে-সাঙ্গাকারারা যখন কলম্বো বিমানবন্দরে নামলেন, শহরের প্রধান সড়কজুড়ে অপেক্ষমাণ সমর্থকদের দীর্ঘ লাইনটা ৩৫ কিলোমিটার ছাড়িয়ে গেছে।

গলায় ফুলের মালা পরিয়ে বীরবরণ হলো, ক্রিকেটারদের বহনকারী  গাড়িতে পুষ্পবর্ষণ অব্যাহত থাকল বিমানবন্দরের বাহির পথ থেকে ক্রিকেট বোর্ডের প্রবেশপথ পর্যন্ত। রাস্তার দুপাশে দাঁড়ানো সমর্থকদের হাতে ব্যানার-প্লাকার্ডে ক্রিকেটারদের বীরত্বগাথা। ভক্তরা নেচে-গেয়ে আরও রঙিন করে তুললেন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতে দেশে ফেরা নায়কদের বরণোৎসব।

উৎসবের সেটি ছিল কেবল শুরু। প্রেসিডেন্টের রাজকীয় সংবর্ধনা তখনো বাকি, রাতভর জমকালো পার্টির জন্য প্রস্তুত হয়ে ছিল ভারত মহাসাগরের কোলঘেঁষা গল ফেস গ্রিনও। তবে রঙিন হয়ে ওঠার আগেই অভূতপূর্ব এই মুহূর্তটা কিছুক্ষণের জন্য বিষণ্ন হয়ে গিয়েছিল  বিমানবন্দরে ক্রিকেটারদের সংবাদ সম্মেলনে। টি-টোয়েন্টির বিদায়ী দুই ক্রিকেটার জয়াবর্ধনে ও সাঙ্গাকারা তাঁদের অবসর ঘোষণা নিয়ে জল ঘোলা করায় ঝাল ঝেড়েছেন শ্রীলঙ্কান ক্রিকেট বোর্ডের ওপর।

বিশ্বকাপ খেলতে বাংলাদেশে আসার আগেই টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়ে এসেছিলেন সাঙ্গাকারা। ঢাকায় এসে বন্ধুকে অনুসরণ করেছেন জয়াবর্ধনেও। বোর্ডকে না জানিয়ে সংবাদমাধ্যমের কাছে অবসরের ঘোষণা দেওয়ায় এ দুই ক্রিকেটারের ওপর অসন্তুষ্ট ছিলেন প্রধান নির্বাচক সনাৎ জয়াসুরিয়া। সংবাদমাধ্যমে তিনি এ কারণে সমালোচনা করেছিলেন দুজনের। ব্যাপারটা পছন্দ করেননি সাঙ্গাকারা-জয়াবর্ধনেও।

অবসরের ঘোষণা নিয়ে বোর্ড তাঁদের ভুল বুঝেছে উল্লেখ করে জয়াবর্ধনে বলেছেন, তিনি সংবাদমাধ্যমের কাছে অবসরের ঘোষণা দেননি। স্থানীয় একটি কাগজে নাকি শুধু বলেছিলেন, বিশ্বকাপেই  হয়তো শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচটা খেলবেন। সংবাদমাধ্যমে সেটাকেই অবসরের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা হিসেবে লিখেছে। আর এটিকে ভিত্তি করেই নাকি ক্রিকেট বোর্ডের এক কর্মকর্তা সমালোচনা করেছেন তাঁদের দুজনের। বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তাই জয়াবর্ধনের ক্ষোভ, ‘আমি খুব হতাশ যে বোর্ডের ওই কর্মকর্তা আমাদের সঙ্গে কথা না বলে, ব্যাপারটা যাচাই না করেই আমাদের সমালোচনা করে গেছেন।’ পাশে দাঁড়িয়ে এ সময় বন্ধুকে সমর্থন দিয়ে গেছেন সাঙ্গাকারাও, ‘আমি ওর (জয়াবর্ধনে) সঙ্গে একমত।’

দুজনের কেউই সরাসরি ওই কর্মকর্তার নাম বলেননি, তবে ইঙ্গিতটা হয়তো জয়াসুরিয়ার দিকেই। যদিও ফিরতি কোনো জবাব আসেনি প্রধান নির্বাচকের পক্ষ থেকে। শ্রীলঙ্কান ক্রিকেট বোর্ডের পক্ষ থেকেও তাৎক্ষণিকভাবে এ দুজনের মন্তব্যের কোনো প্রতিক্রিয়া মেলেনি। হয়তো উৎসবের দিন বলেই অন্য সব তিক্ততা এদিন দূরে সরিয়ে রাখতে চেয়েছেন তাঁরা। ওয়েবসাইট।