জয়ের সঙ্গে সতর্কবার্তাও

কপিল দেব
কপিল দেব

ভারত ম্যাচটা হারলে আমি বিস্মিত হতাম। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজও আমাকে বিস্মিত করেছে। ব্যাট হাতে এমন গড়বড় করার পর বল হাতে কিছুক্ষণের জন্য হলেও ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এই জায়গায় আমি ভারতের কাণ্ডকীর্তি দেখেও অবাক হলাম। ৮৫ রানে ৭ উইকেট ফেলে দিয়েও ওয়েস্ট ইন্ডিজকে গুটিয়ে দিতে এত দেরি হলো! আর ওয়েস্ট ইন্ডিজের কথা কী বলব। এই টুর্নামেন্টে এ পর্যন্ত সবচেয়ে অননুমেয় দল।
এ রকম ম্যাচে একটা দলকে সবগুলো সুযোগ কাজে লাগাতে হয়। ওয়েস্ট ইন্ডিজ আলাদা। সুযোগ কাজে লাগাবে কী, ওরা বারবার সুযোগ হাতছাড়া করেছে। ভারতীয় বোলিংয়ের প্রশংসা করতেই হয়। গত ২০ বছরে আমি ভারতে এই মানের তিন পেসারকে একসঙ্গে দেখিনি। মোহাম্মদ শামি, উমেশ যাদব আর মোহিত শর্মা। এদের কাছাকাছি ছিল যখন জাভাগাল শ্রীনাথ আর জহির খান একসঙ্গে খেলত। কিন্তু এই তিনজন অনেক এগিয়ে। ওরা নিয়মিত ম্যাচ জেতাচ্ছে। ভারতের এই সাফল্যে বড় অবদান এই পেসারদের। বোলার হিসেবে আমি ওদের জ্বলে উঠতে দেখে আনন্দিত।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলারদের জন্যও এটা বড় পরীক্ষা ছিল। ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার পর তাদের সুযোগ ছিল নিজেদের সামর্থ্য দেখানোর। কিন্তু ভারতীয় টপ অর্ডারকে ধসিয়ে দিলেও শেষটা করতে পারল না ওরা।
কট বিহাইন্ড হওয়ার পর অজিঙ্কা রাহানেকে রিভিউ নিতে দেখে আমি অবাক হয়েছি। একজন ব্যাটসম্যান বল ব্যাটের কানায় লাগলে ঠিকই বুঝতে পারে, সেটা যত অল্পই হোক। বরং আমি তো বলব, ব্যাটসম্যানই সেটা সবচেয়ে ভালো বুঝতে পারে। রাহানে জানত যে সে আউট। সে খুবই প্রতিভাবান খেলোয়াড়, সে কারণেই এই ব্যাপারগুলোও তাকে শিখতে হবে। কখন রিভিউ নিতে হবে এটা জানা এবং নেওয়া অনেক সময় ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেয়।
বিরাট কোহলির ব্যাট করার ধরন আমার ভালো লেগেছে। কাউকে না কাউকে তো দায়িত্ব নিতে হতো। কোহলিই এটার জন্য সবচেয়ে যোগ্য। যতক্ষণ উইকেটে ছিল, সে দারুণ খেলেছে। অন্য ব্যাটসম্যানরা অনভিজ্ঞের মতো শট খেলে আউট হয়েছে। আমিও সব সময় বিশ্বাস করি, আক্রমণ হচ্ছে সর্বোৎকৃষ্ট পন্থা। কিন্তু সে আক্রমণে নিজের নিয়ন্ত্রণ থাকতে হবে!
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোঝা উচিত ছিল, তাদের বোলাররা সবগুলো ওভার শেষ করতে পারবে না। জিততে হলে এর আগেই ভারতকে অলআউট করতে হবে। ১৯৯১ সালে এই মাঠেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে একটা ম্যাচের কথা মনে পড়ছে আমার। আমরা ১২৬ রানে অলআউট হয়ে গেলাম। আমি জানতাম, জিততে হলে আমাদের যেভাবেই হোক ওদের অলআউট করতে হবে। কারণ ম্যাচটা ৪০ ওভারের বেশি যাবে না। আমাদের শুরুটা ভালোই হয়েছিল। প্রথম বলেই ডেসমন্ড হেইন্সকে আউট করলাম। শেষ পর্যন্ত ম্যাচটা ৪১ ওভার পর্যন্ত গিয়েছিল। শেষ ওভারটায় বল করেছিল শচীন টেন্ডুলকার। তাঁর দারুণ বোলিং আর মোহাম্মদ আজহারউদ্দিনের দারুণ ক্যাচে ম্যাচ টাই হলো।
যে কারণে ঘটনাটা বললাম, এ ধরনের ম্যাচে ফিল্ডিং খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। জয় পেলেও এদিন কিন্তু ফিল্ডিংটা আশানুরূপ হলো না মহেন্দ্র সিং ধোনির দলের। অন্তত চারটা ক্যাচ পড়েছে ভারতীয় ফিল্ডারদের হাত থেকে। এই পর্যায়ের ক্রিকেটে এসব ক্যাচ নিতে হবে। এটা ধোনির দলের জন্য তাই একধরনের সতর্কবার্তাও। (পিচ সলিউশন)


আজকের খেলা

দক্ষিণ আফ্রিকা-পাকিস্তান
(সকাল ৭টা, অকল্যান্ড)
জিম্বাবুয়ে-আয়ারল্যান্ড
(সকাল ৯-৩০ মি., হোবার্ট)
আগামীকালের খেলা
নিউজিল্যান্ড-আফগানিস্তান
(ভোর ৪টা, নেপিয়ার)
অস্ট্রেলিয়া-শ্রীলঙ্কা
(সকাল ৯-৩০ মি., সিডনি)
গতকালের ফল
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ৪৪.২ ওভারে ১৮২
ভারত: ৩৯.১ ওভারে ১৮৫/৬
ফল: ভারত ৪ উইকেটে জয়ী