মুক্তিযোদ্ধাদের জয় উৎসর্গ আবেগী মাশরাফির

লাল–সবুজ মাশরাফির হৃদয়েও! ছবি: এএফপি
লাল–সবুজ মাশরাফির হৃদয়েও! ছবি: এএফপি

ম্যাচ শেষে পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে যখন এলেন, চোখ তখন ছলছল তাঁর। মাথায় পেঁচানো লাল-সবুজ পতাকা। শুধু মাথায়ই নয়, হৃদয়েও আঁকা তাঁর লাল–সুবজ। কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করার পথে বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম স্মরণীয় জয়টি অধিনায়ক মাশরাফি উৎসর্গ করেছেন একাত্তরের বীর সেনানিদের। সমর্থকদের কথাও ভুলে যাননি তিনি। সময়ে-অসময়ে যাদের সমর্থন ও ভালোবাসায় ক্রিকেট আজ এতদূর এসেছে, তাদেরকেও ধন্যবাদ জানান তিনি।
৪৯তম ওভারের তৃতীয় বলে জেমস অ্যান্ডারসনকে আউট করে জয় নিশ্চিত করে বাংলাদেশ। সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে উপুড় হয়ে শুয়ে পড়েন মাশরাফি। সারা দেশ তখন উচ্ছ্বসিত। মাঠে মুখ চেপে একটু কি কেঁদেছিলেন মাশরাফি ? সেকথা জানা না গেলেও, ম্যাচের পর পরই যখন মাশরাফি ক্যামেরার সামনে এলেন চোখ তখন তাঁর মাথায় বাঁধা পতাকার বৃত্তের মতোই টসটসে লাল। স্বাধীনতার মাস মার্চে পাওয়া ঐতিহাসিক জয় নিয়ে আবেগী মাশরাফি বললেন, ‘অবশ্যই কোয়ার্টার ফাইনালে খেলা আমাদের জন্য অনেক গর্বের। আজকের জয়টি আমি উৎসর্গ করতে চাই আমাদের মহান মুক্তিযোদ্ধাদের। এবং এই জয়টি আমাদের সমর্থকদের জন্যও। সুসময়, দুঃসময় সব সময়ই তাঁরা পাশে থাকেন।’
সতীর্থদের কথাও​ ঘুরে ফিরে এসেছে বেশ কবার। আজকের ম্যাচেই সেঞ্চুরি পেয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। বিশ্বকাপের আসরে প্রথম কোনো বাংলাদেশি শতরানের মাইলফলক ছুঁতে পারার উচ্ছ্বাসের রেশ অধিনায়কের কণ্ঠেও। বিশেষ প্রশংসা পেয়েছেন রুবেল। পিঠ চাপড়ে দিয়েছেন মুশফিক-তাসকিনদেরও। অধিনায়কের নিজেরও যে প্রশংসা প্রাপ্য, সেটিও মনে করিয়ে দিয়েছেন উপস্থাপক। ৪৮ রানে ২ উইকেট। শুধু মিতব্যয়ী ছিলেন না, উইকেট দুটিও ইংল্যান্ডের তিন ও চার—দুই গুরুত্বপূর্ণ ব্যাটসম্যানের। দলের জন্য সব সময় নিজেকে উজাড় করে দেওয়া মাশরাফি নিজের ভাগে ক্যিছুই নিলেন না। সব বিলিয়ে দিলেন সতীর্থদের।
এমনকি আড়াল করলেন ৪৮তম ওভারে ক্রিস ওকসের মহাগুরুত্বপূর্ণ ক্যাচ ফেলে দেওয়া তামিমকেও, ‘তামিম আমাদের সেরা ফিল্ডারদের একজন। আমার মনে হয় সে নিজেও ওই ঘটনাটি নিয়ে বেশ বিব্রত। তবে দিন শেষে ম্যাচটা আমরাই জিতেছি। এটাই বড় কথা।’
না, মাশরাফি আসলে অধিনায়ক নন, ‘নেতা’!