পেলেকে ছাড়িয়ে যাবেন নেইমার!

ব্রাজিলের হয়ে খেললেই নেইমার হয়ে যান অন্য রকম। ফাইল ছবি
ব্রাজিলের হয়ে খেললেই নেইমার হয়ে যান অন্য রকম। ফাইল ছবি

ক্লাবের হয়ে মাঠ কাঁপিয়ে বেড়ান মেসি-রোনালদোরা। কিন্তু জাতীয় দলের জার্সি গায়ে চড়ালেই যেন ঠিক খুঁজে পাওয়া যায় না তাঁদের সেই সব মোহনীয় পারফরম্যান্স। এই খানেই অন্যদের সঙ্গে পার্থক্য নেইমারের সঙ্গে । ক্লাবের হয়ে যতই নিষ্প্রভ লাগুক না কেনো, হলুদ জার্সিতে ঠিকই জ্বলে ওঠেন তিনি। প্রতিপক্ষের সামনে বনে যান অপ্রতিরোধ্য।

পরিসংখ্যানও বলছে সেই একই কথা। বার্সেলোনার হয়ে মোট মাঠে নেমেছেন ৫০ বার, গোল পেয়েছেন ২৬টি। আর জাতীয় দলের হয়ে ৬২টি ম্যাচ খেলেই ঝুলিতে ভরেছেন ৪৩টি গোল। বয়স আর জাতীয় দলের হয়ে তাঁর অবিশ্বাস্য ধারাবাহিকতার কারণেই প্রশ্নটা উঠে গেছে। নেইমার কি পারবেন পেলেকে ছাড়িয়ে যেতে?
সর্বকালের সেরা ফুটবলার। তিনবারের বিশ্বকাপজয়ী। এক হাজারের বেশি ক্যারিয়ার গোল। পেলেকে ছাড়িয়ে যাওয়া আদৌ সম্ভব কিনা, সেই প্রশ্ন উঠতেই পাবে। কিন্তু অন্তত এক জায়গায় পেলের ওপর নিজের আসন করে নিতেই পারেন নেইমার। ব্রাজিলের সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায়। ৯২ ম্যাচ খেলে পেলে পেয়েছেন ৭৭টি গোল। সেখানে মাত্র ২৩ বছর বয়সেই সর্বোচ্চ গোল স্কোরারের তালিকার পাঁচ নাম্বারে চলে এসেছেন নেইমার। তিন আর চারে থাকা রোমারিও (৫৫) আর জিকোও (৪৮) আছেন হা​তের নাগালেই।
কোনো বিশেষ অঘটন না ঘটলে আরও দশ বছর শীর্ষ পর্যায়ে খেলবেন নেইমার। জাতীয় দলের হয়ে সাড়ে চার বছরের ক্যারিয়ারেই সেরা পাঁচে চলে আসা নেইমার কি পারবেন না আর ৩৫টা গোল করতে?
তা হয়তো পারবেন। সেই সম্ভাবনাই উজ্জ্বল। কিন্তু তা হলেই কি পেলেকে ছাড়িয়ে যাওয়া যাবে? জাতীয় দলের হয়ে যতই গোল করে চলুন, নেইমারকে অবশ্যই জিততে হবে বিশ্বকাপ। এই বিশ্বকাপটাই এমন এক শর্ত, যেটা পেলে-ম্যারাডোনাকে আলাদা করে দেয় ক্রুইফ-প্লাতিনিদের থেকে। গত বছর নেইমার পেয়েছিলেন সুবর্ণ সুযোগ। ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ। খেলছিলেনও দারুণ। কিন্তু এক ভয়ংকর চোট সর্বনাশ করে দিল।
২০১০ বিশ্বকাপে পুরো জাতির আকুল আবেদনের পরেও ‘কিশোর’ নেইমারকে দলে নেননি তখনকার কোচ কার্লোস দুঙ্গা। ২০২৬ বিশ্বকাপেও তাঁর খেলার সম্ভাবনা ক্ষীণ, তখন যে বয়স হয়ে যাবে ৩৪। নেইমার তাই বিশ্বকাপ জেতার শর্ত পূরণের সুযোগ পাবেন দুবার। আগামী দুই বিশ্বকাপে।
নেইমার-নিন্দুকেরা আরও একটি বিষয় তুলে আনেন। প্রীতি ম্যাচে নেইমার যতটা উজ্জ্বল, প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে চাপের কারণেই কিনা, ততটা আলো ছড়াতে পারেন না। হলুদ জার্সিতে নেইমারের বেশির ভাগ গোলই এসেছে প্রীতি ম্যাচে। প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে তাঁর গোল সংখ্যা মাত্র ১৩টি। ব্রাজিলকে কিছু এনে দিতে হলে প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচগুলোতেই তো ঢেলে দিতে হবে নিজের সেরাটা।
সম্ভাবনা আছে। আছে শঙ্কাও। নেইমার কি পারবেন সর্বকালের সেরাদের একজন হতে? সূত্র: ইয়াহু স্পোর্টস।