কেন 'কপিল দেব' তৈরি হয় না ভারতে?

কপিল ও চেতন শর্মা
কপিল ও চেতন শর্মা

কপিল দেব ক্রিকেটে ছেড়েছেন বহু বছর হয়ে গেছে। গঙ্গা-যমুনা-ভাগীরথী দিয়ে এরপর গড়িয়েছে অনেক জল। কিন্তু কপিলের কাছাকাছি মানের একজন অলরাউন্ডারও তৈরি করতে পারেনি ভারত।
ভারতীয় ক্রিকেটে কেন একজন কপিল তৈরি হয় না? তার একটা ব্যাখ্যা দিয়েছেন সাবেক ভারতীয় পেসার চেতন শর্মা। তাঁর মতে, ভারতীয় বাবা-মায়েরা ছেলেদের একজন ভবিষ্যৎ​ শচীন টেন্ডুলকার কিংবা রবিচন্দ্রন অশ্বিন বানানোর জন্য যত উন্মুখ, ভবিষ্যৎ​ কপিল বানানোর জন্য ততটা নন।
চেতনের হাত ধরেই বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো হ্যাটট্রিক দেখেছিল ক্রিকেট বিশ্ব। আশির দশকে বেশ কয়েক বছর কপিলের সঙ্গে নতুন বল ভাগাভাগি করেছিলেন। তিনি মনে করেন, অতিরিক্ত পরিশ্রম করতে হয় বলেই ভারতীয় বাবা-মায়েরা ছেলেদের অলরাউন্ডার কিংবা ফাস্ট বোলার হতে অনুপ্রাণিত করেন না। এটি ভারতীয় ক্রিকেটের একটা বড় সমস্যা বলেই মনে করেন চেতন।
তবে তাঁর মতে, সমস্যাটি মানসিকতার, ‘ছোটবেলা থেকেই ছেলেদের মাথায় ঢুকিয়ে দেওয়া হয় ব্যাপারটা। তাদের টেন্ডুলকার কিংবা অশ্বিন হতে হবে। কপিল দেব অবশ্যই নয়। এটা একটা বিরাট সমস্যা। অতিরিক্ত পরিশ্রম করতে হবে বলেই অলরাউন্ডার কিংবা ফাস্ট বোলার হতে উৎসাহ না দেওয়াটা অবশ্যই মানসিকতার ব্যাপার।’
আরও একটি সমস্যা দেখেন চেতন। ভারতীয় বাবা-মায়েরা খুব দ্রুত ফলাফল চান। নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলেছেন, ‘বিভিন্ন একাডেমিতে ফাস্ট বোলিং প্রশিক্ষণ দিই। নেট অনুশীলন থেকে একাডেমির বাইরে গিয়েই অবিভাবকদের একটা প্রশ্নেরই মুখোমুখি হই, “আমার ছেলে কবে ভারতীয় দলে খেলবে, স্যার?” অথচ এমন প্রশ্ন যাঁরা করেন, তাঁদের ছেলের বয়স হয়তো খুব বেশি হলে বারো। আমার মতে মানসিকতার সমস্যাটা এখানেই।’
এই মুহূর্তে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের প্রতিভা অন্বেষণ কর্মসূচিতে প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করছেন। তাঁর দায়িত্ব স্কুল পর্যায় থেকে উদীয়মান প্রতিভা তুলে নিয়ে আসা। নিজে বোলার ছিলেন বলেই তাঁর আগ্রহ কপিল দেবের মতো অলরাউন্ডার কিংবা নিজের মতো পেসার খোঁজার দিকেই। নিজের অভিজ্ঞতা থেকে কিছুটা হতাশাই ঝরেছে তাঁর কণ্ঠে, ‘কয়েক কোটি ছেলে ভারতজুড়ে ক্রিকেট খেলে। আমিও অনেক বছর ধরেই প্রতিভা অন্বেষণ কর্মসূচিতে কাজ করছি। কিন্তু হতাশার সঙ্গেই বলছি, এত ছেলের ভেতর থেকে আজ পর্যন্ত কোনো প্রতিভাদীপ্ত অলরাউন্ডার চোখে পড়েনি। আমার মনে হয় বিসিসিআইয়ের এ ব্যাপারে বাড়তি মনোযোগই দেওয়া উচিত।’ সূত্র: আইএএনএস।