ম্যাকগ্রার সিংহাসনে এখন অ্যান্ডারসন

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পেস বোলিং সিংহাসনের এখন একচ্ছত্র অধিপতি ইংল্যান্ড কিংবদন্তিরয়টার্স

মোহাম্মদ শামিকে বোল্ড করে সবার আগে গিয়ে অ্যালেস্টার কুককে জড়িয়ে ধরলেন জেমস অ্যান্ডারসন। বন্ধু কুকের জন্য সে উইকেটটি যেন ছিল তাঁর বিদায়ী উপহার। ২০১৮ সালে ওভালে কুকের ক্যারিয়ারের শেষ টেস্টটি শেষ হয়েছিল অ্যান্ডারসনের পাওয়া ওই উইকেটে, যে উইকেট দিয়ে টেস্টের সফলতম পেসার হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। গ্লেন ম্যাকগ্রার ৫৬৩ উইকেট ছাড়িয়ে গিয়েছিলেন সেদিন।

গতকাল ওল্ড ট্রাফোর্ডে আরেকটি জায়গায় ম্যাকগ্রাকে টপকে গেলেন অ্যান্ডারসন। দক্ষিণ আফ্রিকার সাইমন হারমারকে বোল্ড করে হয়ে গেলেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সফলতম পেসার। তিন সংস্করণ মিলিয়ে অ্যান্ডারসনের উইকেট এখন ৯৫১টি, ম্যাকগ্রার ৯৪৯টি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পেস বোলিং সিংহাসনের এখন একচ্ছত্র অধিপতি তাই ইংল্যান্ড কিংবদন্তি।

২০১৫ সালের বিশ্বকাপের পর থেকে সীমিত ওভারের কোনো ম্যাচ খেলেননি অ্যান্ডারসন। পেসার হয়েও, ৪০ পেরিয়েও যে এখনো খেলে যাচ্ছেন—সেটির পেছনে যে এই এক সংস্করণে খেলার ভূমিকা আছে, সেটি এখন আর রহস্য নয়। তবে অ্যান্ডারসন যে নিয়মিত সাফল্য পেয়ে যাচ্ছেন, সেটিই আসলে ঘুরেফিরে আসে আলোচনায়।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি উইকেট (পেসার)

২০১৫ সালের আগপর্যন্ত ওয়ানডেতে নিয়মিতই ছিলেন অ্যান্ডারসন, ১৯৪ ম্যাচে নিয়েছিলেন ২৬৯টি উইকেট, এখনো যেটি ইংল্যান্ডের ওয়ানডে রেকর্ড। ১৯ ম্যাচ ক্যারিয়ারের শেষ আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিটি অবশ্য অ্যান্ডারসন খেলেছিলেন ২০০৯ সালে। এ সংস্করণে ১৮টি উইকেট তাঁর।

গ্লেন ম্যাকগ্রার আরেকটি রেকর্ড নিজের করে নিলেন অ্যান্ডারসন
ফাইল ছবি

ম্যাকগ্রা অবশ্য সাদা বলে অ্যান্ডারসনের চেয়ে আরেকটু বেশি সফল। ২৫০ ওয়ানডের ক্যারিয়ারে অস্ট্রেলীয় কিংবদন্তির উইকেট ৩৮১টি। অ্যান্ডারসনের মতো তিনিও নিজ দেশের সবচেয়ে বেশি ওয়ানডে উইকেটের মালিক। সব দেশ মিলিয়ে অবশ্য এ সংস্করণে ম্যাকগ্রার চেয়ে বেশি উইকেট আছে ছয়জনের।

সব মিলিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি উইকেটশিকারির তালিকায় অ্যান্ডারসন এখন আছেন চারে। তাঁর ওপরে থাকা তিনজনই স্পিনার।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি উইকেট

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ইনিংস ব্যবধানে জয়ের ম্যাচে অ্যান্ডারসন নিয়েছেন ৬ উইকেট। দুই ইনিংসেই গুরুত্বপূর্ণ ব্রেকথ্রু এনে দিয়েছেন তিনি। গতকাল তৃতীয় দিনে দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক ডিন এলগারকে বোল্ড করেন, ইনিংসে যেটি ছিল ইংল্যান্ডের পাওয়া প্রথম উইকেট।

ওই উইকেটের পর অ্যান্ডারসনের উদ্‌যাপনের ছবি পোস্ট করে ল্যাঙ্কাশায়ার ক্রিকেট ক্লাব লিখেছিল, ‘রাজপ্রাসাদে রাজা’। ল্যাঙ্কাশায়ার অ্যান্ডারসনের কাউন্টি ক্লাব, ওল্ড ট্রাফোর্ড তাই ঘরের মাঠ। ম্যাকগ্রাকে ছাড়িয়ে যাওয়ার পর অ্যান্ডারসনকে নিয়ে এখন বলাই যায়, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পেস বোলিংয়ের রাজপ্রাসাদের অধিকারও এখন তাঁরই।