অবশেষে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের দেখা মিলল

আজ ঝড় তুলেছিলেন অ্যালেনছবি: প্রথম আলো

গতি শব্দটা যেন বাংলাদেশ বোলিং লাইনআপ থেকে হারিয়েই গিয়েছিল। অস্ট্রেলিয়া সিরিজ ও নিউজিল্যান্ড সিরিজের প্রথম চার ম্যাচে দুই পেসার মোস্তাফিজুর রহমান, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনরা খেললেও উইকেটের চরিত্রের কারণে তাঁরা কাটার, নাকল বলের মতো কম গতির বলই বেশি করছিলেন।

চতুর্থ ম্যাচ জিতে সিরিজ জয় নিশ্চিত করার পর আজ সিরিজের শেষ ম্যাচের উইকেটে আসে পরিবর্তন। আর তাতে পরিবর্তন আসে বাংলাদেশ দলের একাদশেও। ক্রিকেটারদের চোটও আরেকটি কারণ। যার কারণে চারটি পরিবর্তন এনে খেলতে নামে বাংলাদেশ দল। দুই পেসার মোস্তাফিজ ও সাইফউদ্দিনের জায়গায় সুযোগ পান তাসকিন আহমেদ ও শরীফুল ইসলাম। সাকিব আল হাসান ও মেহেদী হাসান না থাকায় দলে ফিরেছেন সৌম্য সরকার ও শামীম হোসেন।

আর তাতে বাংলাদেশ দলের বোলিং আক্রমণ হয়ে যায় কার্যত তিন বোলার কেন্দ্রিক। তবে বাংলাদেশের বোলার শূন্যতার সুবিধাটা পুরোপুরি নিতে পারেনি নিউজিল্যান্ড। টসে জিতে তুলনামূলক ভালো ব্যাটিং উইকেটে দারুণ শুরুর পরও নিউজিল্যান্ড করেছে ৫ উইকেটে ১৬১ রান। সিরিজ জয়ের ব্যবধান ৪-১ করতে বাংলাদেশ দলের দরকার ১৬২ রান।

শরীফুল দিয়েছেন জোড়া ধাক্কা
ছবি: প্রথম আলো

তাসকিন দলে ফেরায় টানা ৯ ম্যাচ পর আজই প্রথম স্পিড মিটারে চোখ দেওয়ার আগ্রহ জাগে। কারণ অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের সিরিজের ৯ ম্যাচ পর আজই প্রথম পেসার দিয়ে ইনিংসের শুরু করেছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। নতুন বল হাতে পেয়ে তাসকিনও গতির ঝড় তোলেন। দুই ওভারের প্রথম স্পেলে মাত্র ৭ রান দেন তিনি। এর মধ্যে স্পিডমিটারকে একবার ৯০ মাইলও পেরোতে দেখা গেছে।

তবে একটু ব্যাটিং সহায়ক উইকেট বাংলাদেশের বাকি দুই বিশেষজ্ঞ বোলার খুব একটা পছন্দ করছিলেন না। শরীফুল ও নাসুম দুজনই ব্যাটিং পাওয়ার প্লেতে ছিলেন খরুচে। কিউই ওপেনার ফিন অ্যালেন আজ হাত খুলে খেলার স্বাধীনতা পেয়ে তেতে ওঠেন। চার-ছক্কার বৃষ্টি নামিয়ে ২৪ বলে ৪১ রান করেন অ্যালেন।

তাসকিন প্রথম স্পেলে দারুণ করেছেন
ছবি: প্রথম আলো

অ্যালেন ও আরেক ওপেনার রচিন রবীন্দ্রকে পাওয়ারপ্লের শেষ ওভারে আউট করেন শরীফুল। ওপেনিং জুটিতে ৫৮ রান নিউজিল্যান্ড ইনিংসকে মজবুত ভিত এনে দেয়। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারের চতুর্থ বলে ক্যাচ তুলে আউট হন রবীন্দ্র। পঞ্চম বলে আউট হন অ্যালেন। সেবার রিভিউ নিয়ে বেঁচে গেলেও পরের বলেই লেগ স্টাম্পে বলের লাইন মিস করে বোল্ড হয়েছেন।

এ জুটি অবশ্য ৫৬ রানই বাড়তি পেয়েছে। নাসুমের প্রথম বলেই ক্যাচ দিয়েছেন রবীন্দ্র। শামীম হোসেন মিড উইকেট বাউন্ডারিতে তখন ১ রানে থাকা রবীন্দ্রর ক্যাচ না ছাড়লে জুটিটা ২ রানেই থামত। মাঝের ওভারে অবশ্য নিউজিল্যান্ডের রানের গতি কমাতে সক্ষম হয় বাংলাদেশ দল।

সিরিজে ল্যাথামের দ্বিতীয় ফিফটি
ছবি: প্রথম আলো

অনিয়মিত বোলাররাও এই সময়টা ভালো বোলিং করেন। আফিফ হোসেন, শামীম হোসেন, সৌম্য সরকার ও অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ নিজেও হাত ঘুরিয়ে সাফল্য পান। আফিফের বলে উইল ইয়াং আউট হন। আর নাসুম বোলিংয়ে ফিরে টানা চতুর্থবারের মতো কলিন ডি গ্র্যান্ডহোমকে আউট করেন। নিউজিল্যান্ড ব্যাটিং যখন বিপদে, তখন ৩৫ বলে ৩৫ রানের জুটি গড়েন অধিনায়ক ল্যাথাম ও হেনরি নিকোলস।

দুজনই ডেথ ওভারে দ্রুত কিছু রানের খোঁজে ছিলেন। ১৭তম ওভারে ওয়াইড ইয়র্কারে নিকোলসকে নুরুল হাসানের অবিশ্বাস্য ক্যাচে পরিণত করেন তাসকিন। আর তাতেই ভাঙে ভয়ংকর হয়ে ওঠা ল্যাথাম-নিকোলস জুটি। পরে অবশ্য ক্ষতিটা একাই পুষিয়ে দেন ল্যাথাম। তাসকিনের ১৯তম ওভারে দুটি ছক্কা ও একটি চার মেরে ১৮ রান তোলেন কিউই অধিনায়ক। শেষ ওভারে পূর্ণ করেন সিরিজে তাঁর দ্বিতীয় ফিফটিও। তাঁর ইনিংসে ৩৭ বলে অপরাজিত ৫০ রানের ইনিংসে নিউজিল্যান্ড ৫ উইকেট হারিয়ে করেছে ১৬১ রান।