অবসর নিয়েই নিলেন মরগান

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আর দেখা যাবে না এউইন মরগানকেছবি: এএফপি

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বলেই দিলেন এউইন মরগান! ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের খবর সত্যি করে আজ অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ফর্ম ও ফিটনেস সমস্যায় ভোগা ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক।

পরশু রাতে ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান জানায় চোটের সঙ্গে লড়াই করা মরগান ক্রিকেট ছাড়ার চিন্তাভাবনা করছেন। আজই যে মরগান অবসরের সিদ্ধান্ত নিতে পারেন সেটিও জানিয়েছিল ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি

ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডের (ইসিবি) ওয়েবসাইটে দেওয়া বিবৃতিতে মরগান জানিয়েছেন অবসরের সিদ্ধান্ত নেওয়াটা সহজ ছিল না, ‘অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে সবকিছু বিবেচনা করেই আমি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিচ্ছি। আমার ক্যারিয়ারে সবচেয়ে উপভোগ্য অধ্যায় নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়াটা মোটেই সহজ ছিল না। তবে আমি বিশ্বাস করি ব্যক্তিগতভাবে আমার ও ইংল্যান্ডের সাদা বলের দলের ভালোর জন্য সরে দাঁড়ানোর এটাই সময়।’

বিশ্বকাপজয়ী দুটি দলের হয়ে খেলতে পেরে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করি। তবে আমি বিশ্বাস করি ইংল্যান্ডের সাদা বলের দলটি অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে এখন বেশি উজ্জ্বল। আমরা এখন আরও অভিজ্ঞ, আরও শক্তিশালী ও দলের গভীরতাও যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি।
এউইন মরগান, ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক

বিবৃতিতে পরিবার ও সতীর্থদের ধন্যবাদ দিয়েছেন মরগান, ‘আয়ারল্যান্ডের হয়ে শুরু করে ২০১৯ বিশ্বকাপ জয়, আমি কখনোই ভুলিনি আন্তর্জাতিক ক্রীড়াবিদের জন্য পরিবারের সমর্থন কতটা গুরুত্বপূর্ণ। আমার পাশে থাকার জন্য মা, বাবা, স্ত্রী টারা ও পরিবারের সবাইকে ধন্যবাদ। সতীর্থ, কোচ, সমর্থক ও পর্দার অন্তরালে থেকে যারা আমার ক্যারিয়ার গড়তে সাহায্য করেছেন সবাইকে ধন্যবাদ। খেলোয়াড় ও অধিনায়ক হিসেবে যা কিছু পেয়েছি তা নিয়ে আমি গর্বিত।’

নিজে সরে দাঁড়ালেও সাদা বলের ক্রিকেটে ইংল্যান্ডের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বলই দেখছেন মরগান, ‘বিশ্বকাপজয়ী দুটি দলের হয়ে খেলতে পেরে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করি। তবে আমি বিশ্বাস করি ইংল্যান্ডের সাদা বলের দলটি অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে এখন বেশি উজ্জ্বল। আমরা এখন আরও অভিজ্ঞ, আরও শক্তিশালী ও দলের গভীরতাও যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি।’

মরগানের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল আয়ারল্যান্ডের হয়ে। ছবিটি ২০০৭ বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকা–আয়ারল্যান্ড ম্যাচের
ছবি: এএফপি

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ছাড়লেও ঘরোয়া পর্যায়ে খেলে যেতে চান মরগান, ‘আমি সুযোগ পেলে ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলাটা উপভোগ করতে চাই। দ্য হানড্রেডের দ্বিতীয় সংস্করণে লন্ডন স্পিরিটের অধিনায়কত্ব করতে মুখিয়ে আছি আমি।’

ইসিবির পক্ষ থেকে ইংল্যান্ডের ছেলেদের দলের ম্যানেজিং ডিরেক্টর রব কি ধন্যবাদ দিয়েছেন মরগানকে।

৩৫ বছর বয়সী মরগান অনেক দিন থেকেই ফর্ম ও ফিটনেস সমস্যায় ভুগছেন। ইংল্যান্ড ওয়ানডে দলের সর্বশেষ সিরিজে পুঁচকে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে শূন্য রানে আউট হন মরগান। ২০০৯ সালে আয়ারল্যান্ড ছেড়ে ইংল্যান্ড দলে খেলা শুরু করা মরগান সিরিজের তৃতীয় ম্যাচটি খেলেননি কুঁচকির চোটকে কারণ দেখিয়ে।

২০১২ সালে ইংল্যান্ডের টি-টোয়েন্টি ও ২০১৪ সালে ওয়ানডে দলের অধিনায়কত্বের দায়িত্ব পেয়েছিলেন মরগান। মরগান অধিনায়ক হওয়ার পর ওয়ানডেতে আমূল বদলে যায় ইংল্যান্ড, ওয়ানডে খেলার ধরনটাও পাল্টে দেয় তাঁর দল। বদলে সেই ইংল্যান্ডই ২০১৯ সালে ফাইনালে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো ওয়ানডে বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হয়।

ইংল্যান্ডের হয়ে ২২৫ ওয়ানডেতে ১৩টি সেঞ্চুরিসহ ৬৯৫৭ রান মরগানের। ১১৫ টি-টোয়েন্টিতে করেছেন ২৪৫৮ রান। ১৬টি টেস্টও খেলেছেন ইংল্যান্ডের হয়ে, করেছেন দুটি সেঞ্চুরি।

মরগানের উত্তরসূরি হিসেবে উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান জস বাটলারকে ভাবা হচ্ছে। অলরাউন্ডার মঈন আলীর নামও আসছে সম্ভাব্য অধিনায়ক হিসেবে।

আরও পড়ুন