অস্ট্রেলীয়রা অসুবিধা মনে করছে নিজেদের উচ্চতাকেই

উচ্চতাকেই নিজেদের বড় সমস্যা মনে করছে অস্ট্রেলিয়াছবি: শামসুল হক

এবার উচ্চতাকে নিজেদের অসুবিধা বলে মনে করছে অস্ট্রেলীয়রা। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের উইকেটে বাংলাদেশি স্পিনাররা কীভাবে বাড়তি সুবিধা আদায় করে নিচ্ছেন, কেন এই স্পিন–বান্ধব পরিবেশে অ্যাশটন অ্যাগার কিংবা অ্যাডাম জাম্পাদের চেয়েও নাসুম আহমেদ, সাকিব আল হাসান, শেখ মেহেদী হাসানরা বেশি ভয়ংকর হয়ে উঠছেন, এমনটা বিশ্লেষণ করতে গিয়ে নিজেদের উচ্চতাটাকেই বড় সমস্যা মনে হচ্ছে অস্ট্রেলীয়দের।

অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে অ্যাগার নিজের উচ্চতা দিয়ে বড় সুবিধা আদায় করে নেন। তাঁর বলে টার্নের সঙ্গে সঙ্গে থাকে বাড়তি বাউন্সও। কিন্তু মিরপুরে এসে সব কিছু যেন অন্য রকম মনে হচ্ছে তাঁর। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার কাছে অ্যাগার ব্যাপারটি খোলাসা করেছেন। তিনি উদাহরণ টেনে বলেছেন, নিজের ১৮৯ সেন্টিমিটার উচ্চতা দিয়ে যেখানে তিনি কিছুই করতে পারছেন না, সেখানে ১৬৭ সেন্টিমিটারের শেখ মেহেদী দুই দলের স্পিনারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি কৃপণ—দুই ম্যাচে ওভারপ্রতি মেহেদীর রান খরচের গড় ৪.৮৫। এই দুই ম্যাচে যে ৮ ওভার মেহেদী বোলিং করেছেন, তার অর্ধেকই তিনি করেছেন পাওয়ার প্লেতে—যখন ব্যাটসম্যানরা টি–টোয়েন্টিতে অনেক বেশি খুনে মেজাজে থাকে।

গতিপথ বদলে চাতুর্যের সঙ্গে বােলিং করেন সাকিব।
ছবি: প্রথম আলো
মেহেদী বোলার হিসেবে কৃপণ। পাওয়ার প্লেতে তাঁর বলে রান নিতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া
ছবি: প্রথম আলো

অ্যাগার বাংলাদেশি স্পিনারদের আরও কিছু বৈশিষ্ট্য তুলে ধরেছেন, ‘তাঁরা স্টাম্প লক্ষ্য করে বল করে বেশি। বাতাসে বেশি সময় ধরে বল রাখে। তাঁদের বল ব্যাটসম্যানদের কাছে নিচ থেকে ওপরের দিকে ওঠে। যেখানে অনেক সময় স্পিনারদের বল ওপর থেকে নিচে এসে থাকে।’

বাংলাদেশের স্পিন বোলিং কোচ যে রঙ্গনা হেরাথের মতো একজন সেরা স্পিন তারকা, অস্ট্রেলীয়রা খুব করেই মাথায় রেখেছে সেটি, ‘তাদের স্পিন বোলিং কোচ রঙ্গনা হেরাথ। বাংলাদেশি বোলাররা যা করছে, সেটি হেরাথ একসময় দারুণভাবে করত। সে এ ব্যাপারে বিশেষজ্ঞ।’ তিনি সাকিবের ব্যাপারে বলেন, ‘সাকিব প্রথম দুই ম্যাচেই কিছু বল করেছে, যেগুলো রীতিমতো গড়িয়ে এসেছে।’

বাতাসে ভাসিয়ে বোলিং করেন নাসুম।
ছবি: প্রথম আলো

অ্যাগার বাংলাদেশি স্পিনারদের সঙ্গে অস্ট্রেলীয় স্পিনারদের পার্থক্যের জায়গাটাও বলেছেন, ‘বাংলাদেশি স্পিনাররা একধরনের বিভ্রান্তিকর লেংথে বোলিং করে। বলকে বাউন্স করানো, নিচু করে দেওয়া, বাতাসে বেশিক্ষণ বল ভাসিয়ে রাখার ক্ষমতাটাই ওদের সঙ্গে আমাদের পার্থক্য।’

বাংলাদেশি তিন স্পিনার যেখানে দুই ম্যাচে ৫.৫৮ ইকোনমি রেটে রান দিয়েছেন, সেখানে অ্যাগার আর জাম্পা দুজন মিলে রান খরচ করেছেন ওভারপ্রতি ৫.৬০ রান দিয়ে। উইকেট নেওয়ার ক্ষেত্রেও বাংলাদেশি স্পিনাররা অনেক এগিয়ে। দুই ম্যাচে সাকিব, মেহেদী আর নাসুমের তুলে নেওয়া উইকেটের সংখ্যা ৮, যেখানে অ্যাগার আর জাম্পার সম্মিলিত সাফল্য তিন উইকেট।

এসব বিশ্লেষণ আজ তৃতীয় টি–টোয়েন্টি ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া কতটুকু কাজে লাগাতে পারে, এটাই দেখার বিষয়!