উগান্ডাকে ছুঁয়ে ভারতের এখন ১ ম্যাচের অপেক্ষা
লক্ষ্ণৌতে প্রথম টি–টোয়েন্টিতে আগে ব্যাটিং করে ৬২ রানের বিশাল জয় পেয়েছিল ভারত। এই শ্রীলঙ্কা যে রান তাড়ায় খুব একটা ভালো দল নয়, লক্ষ্ণৌয়ের ম্যাচে সেটাও প্রমাণিত হয়েছে। এরপরও আজ ধর্মশালায় টস জিতে ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মা যে ফিল্ডিং নিলেন, তার কারণ হতে পারে একটাই। ধর্মশালায় এর আগে একটিমাত্র টি–টোয়েন্টি খেলেছে ভারত। ২০১৫ সালের সেই ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে ১৯৯ রান করেও দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হেরেছে তারা।
পরে ব্যাট করার কারণ যদি এটাই হয়, রোহিতকে তাহলে সঠিকই বলতে হবে। প্রথম টি–টোয়েন্টিতে ১৯৯ রান তাড়া করতে নেমে ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৩৭ রান তুলেছিল শ্রীলঙ্কা। সেই দলই আজ ধর্মশালায় প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে তুলেছে ১৮৩ রান। এরপরও অবশ্য জয়ের মুখ দেখেনি দাসুন শানাকার দল। রান তাড়া করতে নেমে ১৭ বল হাতে রেখে ৭ উইকেটের জয় পেয়েছে ভারত। টানা দুই ম্যাচ জিতে এক ম্যাচ হাতে রেখে ৩ ম্যাচের সিরিজ জয় নিশ্চিত করেছে রোহিতের দল।
টি–টোয়েন্টিতে এই নিয়ে টানা ১১ ম্যাচ জিতল ভারত। ৩১ অক্টোবর নিউজিল্যান্ডের কাছে হারার পর থেকে টি–টোয়েন্টিতে অপরাজেয় যাত্রা চলছে তাদের। টি–টোয়েন্টিতে টানা জয়ে তারা ছুঁয়ে ফেলেছে উগান্ডাকে। আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টিতে টানা জয়ের রেকর্ড অবশ্য যৌথভাবে আফগানিস্তান ও রোমানিয়ার। দুটি দলই জিতেছে টানা ১২টি করে ম্যাচ।
ভারতের জয়ের ভিত আজ গড়ে দিয়েছে মূলত সাঞ্জু স্যামসন ও শ্রেয়াস আইয়ারের তৃতীয় উইকেট জুটি। তৃতীয় উইকেট জুটিতে ৪৭ বলে ৮৪ রান করেছেন স্যামসন ও আইয়ার। জুটিটি ভাঙে লাহিরু কুমারার বলে স্লিপে বিনুরা ফার্নান্ডোর অসাধারণ এক ক্যাচ হয়ে স্যামসন আউট হয়ে ফিরলে। আউট হওয়ার আগে ২৫ বলে ২ চার ও ৩ ছয়ে ৩৯ রান করেন তিনি। স্যামসন অবশ্য ফিরে যেতে পারতেন ৬ রানেই। শানাকার বলে স্কয়ার লেগে ক্যাচ দিয়েও বেঁচে যান তিনি।
স্যামসনের আউটের পর আইয়ারের সঙ্গে জুটি বাঁধেন রবীন্দ্র জাদেজা। চার দিয়ে রানের খাতা খোলা জাদেজা ও আইয়ার আর কোনো উইকেট পড়তে না দিয়ে ভারতকে পৌঁছে দেন জয়ের বন্দরে। দুজনের অবিচ্ছিন্ন চতুর্থ উইকেট জুটিটি ৫৮ রানের। জাদেজা ১৮ বলে ৭ চার ও ১ ছয়ে করেছেন অপরাজিত ৪৫ রান। আর আইয়ার অপরাজিত ছিলেন ৪৪ বলে ৭৪ রান করে। ইনিংসটিতে তিনি ৬টি চার ও ৪টি ছয় মেরেছেন। ১৯ রান করলেই অধিনায়ক হিসেবে আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টিতে ১ হাজার রান পূর্ণ হতো রোহিতের। কিন্তু ভারত অধিনায়ক আউট হয়েছেন মাত্র ১ রান করে।
এর আগে শ্রীলঙ্কাকে বড় স্কোর এনে দেন উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান পাথুম নিশাঙ্কা ও অধিনায়ক শানাকা। দুজনে মিলে পঞ্চম উইকেট জুটিতে ২৬ বলে করেছেন ৫৮ রান। শ্রীলঙ্কার সবচেয়ে বড় জুটিটি অবশ্য ৬৭ রানের। উদ্বোধনী জুটিতে এই রান করেছেন গুনাতিলকা ও নিশাঙ্কা। তবে শুরুটা খুব শ্লথ ছিল শ্রীলঙ্কার। ৮.৪ ওভারে মাত্র ৬৭ রান তোলার পর দ্রুত ৩ উইকেট হারায় তারা। ৯ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে বিনা উইকেটে ৬৭ থেকে শ্রীলঙ্কার স্কোর হয়ে যায় ৩ উইকেটে ৭৬ রান।
১৫ ওভার শেষে শ্রীলঙ্কার রান ছিল ৪ উইকেটে ১০৩। এ সময়ে মনে হচ্ছিল প্রথম টি–টোয়েন্টির মতো আজও দেড় শ রানের আশপাশে একটা স্কোর করতে যাচ্ছে তারা। কিন্তু শেষ ৫ ওভারে ঝড় তোলেন নিশাঙ্কা ও শানাকা। সেই ঝড়ে আসে ৮০ রান। এর মধ্যে শেষ চার ওভারে ৭২। নিশাঙ্কা ৫৩ বলে ১১ চারে ৭৫ রান করে আউট হয়েছেন। শানাকা এরপর ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে চামিকা করুনারত্নেকে নিয়ে গড়েন ৬ বলে অবিচ্ছিন্ন ২৩ রানের জুটি। এই জুটির সব রানই শানাকার। কিন্তু এমন খেলার পরও পরাজিত দলেই থাকতে হলো তাঁকে। সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচটি আগামীকাল ধর্মশালায়।