উমরানদের গতিতে টানা চার জয়ে শীর্ষ চারে হায়দরাবাদ

২৮ রানে ৪ উইকেট নেন উমরান মালিকআইপিএল

মাঠে গতির ঝড়ের সঙ্গে টুইটারেও একটা ঝড় বইয়ে দিলেন উমরান মালিক। জম্মু-কাশ্মীরের ২২ বছর বয়সী তরুণ যে ভারতকে দেখাচ্ছেন নতুন কিছুই! ধারাবাহিকভাবে এ গতিতে বোলিং করে যাওয়ার মতো কজনকেই বা দেখেছে তারা! মালিকের সঙ্গে ভুবনেশ্বর কুমার, থাঙ্গারাসু নটরাজনকে যোগ করলে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের পেস আক্রমণ প্রতিপক্ষের জন্য বড় হুমকিই। নাবি মুম্বাইয়ের ডিওয়াই পাতিল স্টেডিয়ামে আজ সেটি টের পেল পাঞ্জাব কিংস।

শেষ ৩ উইকেটসহ মালিক নিয়েছেন ৪ উইকেট, ভুবনেশ্বর ও নটরাজন মিলে ৪টি। লিয়াম লিভিংস্টোনের ঝড়ের পরও পাঞ্জাব আটকে গেছে ১৫২ রানের মধ্যেই, ৭ বল ও ৭ উইকেট বাকি রেখেই সেটি টপকে গেছে হায়দরবাদ। দুই দলের জন্যই এ ম্যাচে জয় দিয়ে শীর্ষ চারে উঠে আসার হাতছানি ছিল। টানা চতুর্থ জয়ে সেটি করল কেইন উইলিয়ামসনের হায়দরাবাদই।

এ মৌসুমে বড় স্কোর গড়ায় বেশ অভ্যস্ত হয়ে উঠেছিল পাঞ্জাব। সবচেয়ে বেশি চারবার ১৮০ বা এর বেশি রানের স্কোর তাদের, আগের ৫ ম্যাচে পাওয়ারপ্লে-তে ৬০-এর নিচে স্কোর ছিল মাত্র একটি। টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নামা সে পাঞ্জাবই আটকে গেল হায়দরাবাদের পেস আক্রমণে।

হায়দরাবাদের পেস আক্রমণ আইপিএলে প্রতিপক্ষের জন্য বড় হুমকিই
আইপিএল

ম্যাচের আগেই অবশ্য একটা ধাক্কা খায় পাঞ্জাব। ফিল্ডিং অনুশীলনের সময় চোট পেয়ে ছিটকে যান নিয়মিত অধিনায়ক মায়াঙ্ক আগারওয়াল। তাঁর বদলে পাঞ্জাবকে নেতৃত্ব দিয়েছেন শিখর ধাওয়ান। ব্যাট হাতে অবশ্য সময়টা ভালো যায়নি ধাওয়ানের, ১১ বলে ৮ রান করে ভুবনেশ্বর কুমারের প্রথম শিকার তিনি।

আগারওয়ালের বদলে দলে আসা প্রভসিমরান সিংও বেশিক্ষণ টেকেননি। পাঞ্জাব এরপর উইকেট হারিয়েছে নিয়মিত বিরতিতে, একদিকে শুধু টিকে ছিলেন লিয়াম লিভিংস্টোন। তবে শাহরুখ খান ছাড়া সেভাবে তাঁকে সঙ্গ দিতে পারেননি কেউ। পঞ্চম উইকেটে এ দুজন ৪৯ বলে যোগ করেন ৭১ রান। ২৮ বলে ২৬ রান করে শাহরুখ ফিরলে আরেকবার ধাক্কা খায় পাঞ্জাব।

অবশ্য লিভিংস্টোন খেলছিলেন যেন ভিন্ন এক কন্ডিশনে। মাত্র ২৬ বলে অর্ধশতক পান, ১৯তম ওভারের শেষ বলে আউট হওয়ার আগে ৩৩ বলে ৬০ রান করেছেন ১৮১.৮১ স্ট্রাইক রেটে। পাঞ্জাবের অন্য কেউই এদিন ১৩৭-এর ওপর স্ট্রাইক রেটে খেলেননি।

হায়দরাবাদের জয় নিশ্চিত করেছে মার্করাম-পুরান জুটি
আইপিএল

এরপরই এসেছে উমরান মালিকের আগুনে ওভার। ডট, উইকেট, ডট, উইকেট, উইকেট, উইকেট—মালিকের শেষ ওভার ছিল এমন। চতুর্থ ও পঞ্চম বলে উইকেট নিয়ে হ্যাটট্রিকের সামনে দাঁড়িয়েছিলেন, শেষ বলের উইকেটটা অবশ্য এসেছে রানআউটে। হ্যাটট্রিক পাননি, তবে আইপিএলে ২০তম ওভারে মেডেন করা মাত্র চতুর্থ বোলার হয়ে গেছেন ভারতের নতুন ‘গতিতারকা’।

রান তাড়ায় চতুর্থ ওভারে কেইন উইলিয়ামসনকে হারালেও ওপেনার অভিষেক শর্মা ও তিনে নামা রাহুল ত্রিপাঠি শক্ত ভিত এনে দেন হায়দরাবাদকে। তৃতীয় উইকেটে দুজন যোগ করেন ৪৮ রান। উইকেটে গ্রিপ করছিল বল, ফলে স্পিনারদের সফল হওয়ার সম্ভাবনাও ছিল ভালোই। পরপর ২ ওভারে অভিষেক-ত্রিপাঠিকে ফিরিয়ে পাঞ্জাবকে আশাও জোগান রাহুল চাহার। তাঁকে তুলে মারতে গিয়ে ২২ বলে ৩৪ রানেই থামেন আগের ম্যাচে ৭১ রানের ইনিংস খেলা ত্রিপাঠি, ২৫ বলে ৩১ রান অভিষেকের।

দ্রুত ২ উইকেট হারানোর চাপ হায়দরাবাদকে বুঝতে দেননি এইডেন মার্করাম ও নিকোলাস পুরান। ৫০ বলে ৭৫ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি তাদের। জয় নিশ্চিত হওয়ার সময় ২৭ বলে ৪১ রানে অপরাজিত ছিলেন মার্করাম, পুরান অপরাজিত ছিলেন ৩০ বলে ৩৫ রানে।