একেকটা বল করার জন্যই পাবেন ২ লাখ টাকা

আইপিএলে গত মৌসুমেও দিল্লি ক্যাপিটালসের হয়ে খেলেন কাগিসো রাবাদাছবি: ইনস্টাগ্রা

দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে নিশ্চয়ই টিভিতে চোখ রাখছেন অনেকেই। স্টার স্পোর্টসের চ্যানেলে গেলেই শোনা যাচ্ছে, হাতুড়ির বাড়ি ও কোটি কোটি রুপির হিসাব। টেবিলগুলোতেও হিসাব কষতে কষতে সাবেক তারকা ও কোচদের মাথার চুল পড়ে যাওয়ার দশা। আইপিএলের নিলাম বলে কথা!

টাকার বস্তা নিয়ে নামা ফ্র্যাঞ্চাইজি দলগুলোর মধ্যে খেলোয়াড় নিয়ে কাড়াকাড়ি পড়াই স্বাভাবিক। নিলাম শুরুর আধা ঘণ্টার মধ্যেই যেমন ঠিকানা পাল্টে গেল দক্ষিণ আফ্রিকার পেসার কাগিসো রাবাদার।

দিল্লি ক্যাপিটালস তাঁকে আগের মৌসুমে ছেড়ে দিয়েছিল। কিন্তু আজ নিলামে সেই রাবাদার জন্যই গুজরাট টাইটানসের সঙ্গে দাম নিয়ে ‘মল্লযুদ্ধ’ শুরু করে দিল্লি।

তাতে দুই কোটি রুপি ভিত্তিমূল্যের রাবাদার দামও ধীরে ধীরে চড়তে শুরু করে। পাঞ্জাব কিংসের টেবিলে বসে থাকা অনিল কুম্বলে ও জন্টি রোডস তা বেশ উপভোগও করছিলেন। দিল্লি–গুজরাট মল্লযুদ্ধকে হুট করেই ত্রিমুখী যুদ্ধে পরিণত করে পাঞ্জাব। রাবাদাকে কেনার লড়াইয়ে যোগ দেয় এই ফ্র্যাঞ্চাইজি।

৮.২৫ কোটি রুপি দাম হেঁকে রাবাদাকে কেনার লড়াইয়ে আবির্ভূত হয় পাঞ্জাব। দিল্লি এরপর সরে দাঁড়ালেও গুজরাট লড়াই চালিয়ে যায়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ৯.২৫ কোটি রুপিতে রাবাদাকে পেয়ে যায় পাঞ্জাবই।

২০১৯ আইপিএলে ১২ ম্যাচে ২৫ উইকেট নিয়ে সে মৌসুমে দিল্লির সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি হওয়া রাবাদা ২০২০ সালেও আলো ছড়ান। ১৭ ম্যাচে নেন ৩০ উইকেট। গত মৌসুমে ১৫ উইকেট নিলেও প্লে–অফ থেকে বাদ পড়ে দিল্লি।

রাবাদা এবার যে দামে বিক্রি হলেন, তা নিয়ে এবার এক হিসাব কষা যায়। ধরে নেওয়া যাক, রাবাদা এবার আইপিএলে সর্বোচ্চ ১৭ ম্যাচ খেলবেন। গ্রুপ পর্বে ১৪ ম্যাচ ও কোয়ালিফায়ার, এলিমিনেটর এবং ফাইনাল মিলিয়ে হিসাবটি কষা হয়েছে। সব মিলিয়ে পাঞ্জাবের হয়ে এবার সর্বোচ্চ ১৭ ম্যাচ খেলার সুযোগ রয়েছে রাবাদার।

টি–টোয়েন্টিতে প্রতি ম্যাচে ৪ ওভার করে বল করার সুযোগ থাকায় ১৭ ম্যাচে রাবাদার মোট ওভারসংখ্যা দাঁড়ায় ৬৮ ওভার। বলসংখ্যা ৪০৮। অর্থাৎ এবারের আইপিএলে সর্বোচ্চ ৪০৮টি বৈধ বল করার সুযোগ পাবেন রাবাদা। তাহলে রাবাদার প্রতিটি ডেলিভারির দাম টাকায় কত দাঁড়াচ্ছে?

বাংলাদেশি মুদ্রায় রাবাদার দাম প্রায় ১০ কোটি ৫১ লাখ ৪৭ হাজার ৭২৮ টাকা। অর্থাৎ এবার আইপিএলে রাবাদার প্রতিটি ডেলিভারির দাম হবে ২ লাখ ৫৭ হাজার ৭১৫ টাকা।

চাইলে অন্য মুদ্রায়ও হিসাবটা বের করা যায়। ভারতীয় রুপিতে রাবাদার প্রতিটি ডেলিভারির দাম হবে প্রায় ২ লাখ ২৭ হাজার রুপি। মার্কিন ডলারে ৩০০০, পাউন্ডে ২২০০, অস্ট্রেলিয়ান ডলারে ৪২০০, নিউজিল্যান্ড ডলারে ৪৫০০, দক্ষিণ আফ্রিকান র‌্যান্ডে ৪৫,৬০০ ও পাকিস্তানি রুপিতে ৫ লাখ ২৫ হাজার মূল্য আসে।

তবে ইরানি রিয়ালে সংখ্যাটা চোখ রগড়ে দেওয়ার মতো হবে। এই মুহূর্তে ইরানিয়ান রিয়ালকেই ধরা হয় সবচেয়ে সস্তা মুদ্রা। ভারতের এক রুপিতে ৫৫৮.৫৪ রিয়াল (ইরানি) পাওয়া যায়। সে হিসাবে,পাঞ্জাব যদি ইরানি রিয়ালে রাবাদাকে কিনত তাহলে ৫ হাজার ১৬৬ কোটি ৫৩ লাখ ১৮ হাজার ৭০৫ টাকা দিতে হতো।

অর্থাৎ, ইরানি রিয়ালে এবার আইপিএলে রাবাদার প্রতিটি বৈধ ডেলিভারির দাম হবে ১২ লাখ ৬৬ হাজার ৩০৬ টাকা!