চেষ্টা করেও জোন্সকে বাঁচাতে পারেননি লি

অস্ট্রেলিয়ার সাবেক পেসার ব্রেট লি।ছবি: টুইটার

কারও জীবন বাঁচানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হওয়া মর্মান্তিক ও ভয়াবহ অভিজ্ঞতাই। সে হিসেবে ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে ব্রেট লিকে। মুম্বাইয়ে ট্রাইডেন্ট হোটেলে ডিন জোন্স হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর তাঁর পাশে ছিলেন লি। চেষ্টা করেছিলেন তাঁকে সারিয়ে তোলার। কিন্তু জোন্সকে বাঁচাতে পারেননি। এ ব্যাপারটি হয়তো সারা জীবনই তাড়া করে ফিরবে অস্ট্রেলিয়ার সাবেক ফাস্ট বোলারকে।

আইপিএলে ম্যাচ শুরুর আগে ‘সিলেক্ট ডাগ আউট’ শো তে বিশ্লেষকের ভূমিকায় জোন্সের সঙ্গে ছিলেন ব্রেট লি ও নিউজিল্যান্ডের সাবেক ক্রিকেটার স্কট স্টাইরিস। আইপিএল ধারাভাষ্যের কাজে মুম্বাইয়ে ছিলেন তাঁরা। হোটেল লবিতে জোন্স হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হওয়ার সময় তাঁর সঙ্গেই ছিলেন লি। এর পর জোন্সকে জাগিয়ে তোলার চেষ্টা করেন তিনি। সাহায্য চেয়েছিলেন বাকিদের, ডেকেছিলেন অ্যাম্বুলেন্সও। পরে শোক কাটিয়ে নিজের কাজটা টিভিতে করেছেন লি পাশে জোন্সের চেয়ার খালি রেখে।

সংবাদমাধ্যমকে লি বলেন, ‘সে একজন প্রশ্নাতীত কিংবদন্তি। আজকের ডাগ আউট শো-টা জোন্সের জন্যই। আমি নিশ্চিত সে চাইত, আমরা যে খেলাটিকে আমরা ভালোবাসি তার স্বার্থেই অনুষ্ঠান চালিয়ে যাই। তার পরিবার এবং বন্ধু বর্গের প্রতি সমবেদনা রইল। বাস্তবিকভাবেই আজকের দিনটা ছিল সবার জন্য ভীষণ কঠিন।’ জোন্সকে বাঁচাতে সিপিআর পরীক্ষার সময়ও পাশে ছিলেন লি। অ্যাম্বুলেন্সে করে পাশের হাসপাতালে তাঁকে নেওয়া হলেও বাঁচানো যায়নি। কাল ৫৯ বছর বয়সে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান অস্ট্রেলিয়ার সাবেক এ ক্রিকেটার।

স্কট স্টাইরিস জোন্সের কথা বলতে গিয়ে নিজেকে আর ধরে রাখতে পারেননি। ভেঙে পড়েন নিউজিল্যান্ডের সাবেক এ অলরাউন্ডার, ‘কে ভেবেছিল...আজ (কাল) সকালে ঘুম ভাঙার পর ডিনোর সঙ্গে নাশতা করেছি। এরপর একটু দৌড়েছে। এভাবে সে নিজেকে ফিট রাখত। হ্যাঁ, মুম্বাইয়ে আমরা জৈব সুরক্ষিত পরিবেশের মধ্যেই রয়েছি। কে ভেবেছিল কয়েক ঘণ্টা পরই তার হার্ট অ্যাটাক কিংবা হৃদ্‌যন্ত্রে সমস্যা দেখা দেবে...।’

আইপিএলের ধারাভাষ্যে আছেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক ওপেনার মাইকেল স্লাটার। চ্যানেল সেভেনকে তিনি বলেন, ‘ব্রেট লি কেভিন পিটারসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। ব্রেট তার পাশেই ছিল এবং কিছু বন্ধুর সাহায্য চাচ্ছিল। অ্যাম্বুলেন্স আসার আগে আধ ঘণ্টা ধরে সে তাকে সুস্থ করে তোলার চেষ্টা করেছে। বলতে বাধ্য হচ্ছি, খেলা সম্প্রচার করা কখনো এত কঠিন মনে হয়নি।’

অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটের অন্যতম সেরা তারকা জোন্স ১৯৮৪ থেকে ১৯৯৪ পর্যন্ত মাঠ মাতান। ৫২ টেস্ট আর ১৬৪টি ওয়ানডে খেলে ৯ হাজার ৬৩১ (টেস্টে ৩,৬৩১ আর ওয়ানডেতে ৬০০০) রান তাঁর। টেস্টে ৪৬.৫৫ গড়ে ১১টি শতক। ওয়ানডেতেও আছে ৭টি সেঞ্চুরি আর ৪৬টি ফিফটি। ২০১৯ সালে অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটের ‘হল অব ফেমে’ স্থান পান জোন্স। ক্রিকেট ছাড়ার পর থেকেই কোচিং ও ধারাভাষ্যের সঙ্গে জড়িয়ে ছিলেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি আইপিএলে ধারাভাষ্য দিয়েছেন।