জুয়ার থাবা থেকে ক্রিকেটারদের বাঁচাতে চান গুচ
![জুয়া নিয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করবেন গ্রাহাম গুচ। ফাইল ছবি](https://images.prothomalo.com/prothomalo%2Fimport%2Fmedia%2F2017%2F03%2F23%2F9cc036ba2d55a98ea7b7b7d690d025aa-58d3cda7567b6.jpg?auto=format%2Ccompress)
ইউরোপে বা পশ্চিমা দুনিয়ায় বাজি ধরা বেআইনি কিছু নয়। ফুটবল, ক্রিকেট, রাগবিসহ বিভিন্ন খেলায় বাজির লেনদেন হয় কোটি কোটি টাকার। এ কারণেই হয়তো জুয়ার বিভিন্ন ফাঁকফোকর বের করে নানা রকম অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
সাবেক ইংলিশ অধিনায়ক গ্রাহাম গুচ এ ব্যাপারেই ‘সচেতন’ করে তুলতে চান তরুণ ক্রিকেটারদের। সে কারণে ইংল্যান্ডের পেশাদার ক্রিকেটারদের সংগঠন—পিসিএকে ৫০ হাজার পাউন্ড দিচ্ছেন। এই অর্থে বাজি ও জুয়ার ব্যাপারে তরুণ ক্রিকেটারদের সচেতন করার জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণের আয়োজন করবে পিসিএ।
গুচ অনেক বছর ধরেই তরুণ ক্রিকেটারদের গড়ে তোলার জন্য পিসিএতে একটি বৃত্তি পরিচালনা করছেন। সে বৃত্তি নিয়ে উপকৃত হয়েছে অনেক তরুণ ক্রিকেটার। সদ্য সাবেক হওয়া ইংলিশ টেস্ট অধিনায়ক অ্যালিস্টার কুক হচ্ছেন গুচের পরিচালিত বৃত্তির সাফল্যের দারুণ এক উদাহরণ।
প্রতিষ্ঠার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে পিসিএ তাঁর সদস্যদের কাছ থেকে অতিরিক্ত চাঁদা আহ্বান করেছিল। যেন সংস্থাটি তাদের বার্ষিক তহবিল ৪ লাখ পাউন্ড থেকে বাড়িয়ে ৬ লাখে উন্নীত করতে পারে। গুচ তহবিলে অতিরিক্ত যে ৫০ হাজার পাউন্ড দিয়েছেন, সেটি দিয়েই বাজি ও জুয়ার বিষয়ে সচেতনতা তৈরির পাঠ্যক্রম সাজাচ্ছে পিসিএ।
এ ব্যাপারে বিশেষ আগ্রহই দেখিয়েছেন গুচ, ‘এই মুহূর্তে পৃথিবীতে বিপদের শেষ নেই। অনলাইনে জুয়ার ব্যাপারে তরুণ ক্রিকেটারদের সচেতন করতে চাই যেন তারা কোনো বদাভ্যাসে জড়িয়ে না পড়ে। অনলাইন জুয়া নিয়ে চিন্তিত হওয়ার যথেষ্ট কারণ আছে।’
গুচের এই কোর্সটি পরিচালনা করবেন পল বাক—যিনি জুয়ায় আসক্ত হয়ে ৩২ মাসের কারাদণ্ড পেয়েছিলেন। পরে সাড়ে এগারো মাসের মাথায় সমাপ্তি ঘটে তাঁর জেলজীবনের। বাক সেই তরুণদের সঙ্গে কথা বলবেন, যারা মনে করে জুয়ার আসক্তির কারণে তাদেরও বিপদে পড়ার শঙ্কা আছে।
ইংল্যান্ডে জুয়ার আসক্তি ভয়াবহ এক চেহারা ধারণ করেছে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে। এক হিসেবে দেখা যাচ্ছে, গত পাঁচ বছরে মোট ১ হাজার ৪৪৪ জন জুয়ার আসক্তির কারণে নানা ধরনের অপরাধে জড়িয়ে জেল খেটেছে। লিঙ্কন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় দেখা গেছে যুক্তরাজ্যে জুয়ায় আসক্ত মানুষের সংখ্যা ১০ লাখের বেশি। নির্দিষ্ট করে বললে ১০ লাখ ১০ হাজার। এই আসক্ত ব্যক্তিরা দেউলিয়া হওয়া থেকে শুরু করে নানা ধরনের সমস্যায় আক্রান্ত। এগুলোর মধ্যে আছে দাম্পত্য কলহ, বিচ্ছেদ ও মানসিক বিষণ্নতা।
পেশাদার ক্রিকেটারদের নিয়ে ভয়ের ব্যাপারটি সবচেয়ে বেশি। এমনিতেই তরুণ বয়সে প্রচুর অর্থের মালিক হয়ে যান। এই টাকা খরচের সঠিক জায়গা না পেয়ে তারা জুয়ায় আসক্ত হয়ে উঠতে পারে। ক্রিকেটারদের এই মুহূর্তে ‘সমস্যা’ হিসেবেই দেখা হচ্ছে—যাঁরা জুয়ার আসক্তিতে অপরাধপ্রবণতায় জড়িয়ে পড়তে পারেন। পিসিএর প্রধান নির্বাহী ডেভিড লেথারডেল বলেন, ‘যেহেতু ১৮ থেকে ২৪ বছর বয়সী ছেলেদের মধ্যে প্রতি চারজনের একজনের জুয়ায় আসক্ত হওয়ার প্রবণতা বেশি, তাই এটা একটা ভয়াবহ সমস্যা।’
গুচ ও পিসিএর এই উদ্যোগ সফল হলে ক্রিকেটেরই উপকার হয়। ম্যাচ ফিক্সিং, স্পট ফিক্সিং ইত্যাদি তো জুয়ারই উপজাত। সূত্র: ইএসপিএন ক্রিকইনফো।