ডি ভিলিয়ার্স যখন ‘নার্ভাস’ হয়ে পড়েন...

৩০ বলে ৫১, ২৪ বলে অপরাজিত ৫৫, ৩৩ বলে অপরাজিত ৭৩ ও ২২ বলে অপরাজিত ৫৫। এবারের আইপিএলে দারুণ ছন্দেই আছেন এবি ডি ভিলিয়ার্স। ৯ ইনিংসে চারটি ফিফটি করেছেন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর দক্ষিণ আফ্রিকান ব্যাটসম্যান। চারটি ম্যাচই জিতেছে বেঙ্গালুরু আর এই চার ম্যাচের তিনটিতেই ম্যাচসেরার পুরস্কার গেছে ডি ভিলিয়ার্সের অধিকারে।

এবি ডি ভিলিয়ার্স নার্ভাসও হন!
ছবি: বিসিসিআই

উইকেটের চারদিকে খেলতে পারেন, খেলতে পারেন সব ধরনের শট। সব মিলিয়ে অনেক আগেই নাম পেয়ে গেছেন ‘৩৬০ ডিগ্রি ব্যাটসম্যান’। ভয়ডরহীন ব্যাটিংয়ের অসাধারণ এক উদাহরণ তৈরি করেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক অধিনায়ক। দল ভালো অবস্থানে থাকলে তো কথাই নেই। মারকুটে ডি ভিলিয়ার্স হয়ে ওঠেন আরও ভয়ংকর। দল বিপদে থাকলেও তাঁর ব্যাটিংয়ে নার্ভাসনেসের কোনো ছিটেফোঁটাও থাকে না!

কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে অকুতোভয় এই ডি ভিলিয়ার্সও কখনো কখনো নার্ভাস হন! এই যেমন আইপিএলে কাল দুবাইয়ে রাজস্থান রয়্যালসের বিপক্ষে বেঙ্গালুরুর ৭ উইকেটের জয়ে ২২ বলে অপরাজিত ৫৫ রানের ইনিংসটি খেলার সময়ও নার্ভাস হয়ে পড়েছিলেন ডি ভিলিয়ার্স! ম্যাচ শেষে ম্যাচ সেরার পুরস্কার হাতে নিয়ে নিজেই তা বলেছেন। ইনিংসটি খেলার পথে একটি চারের পাশাপাশি ছয়টি ছয় মেরেছেন ডি ভিলিয়ার্স।

শেষ দুই ওভারে বেঙ্গালুরুর প্রয়োজন ছিল ৩৫ রান। পুরো ইনিংসে ছয়টি ছক্কার তিনটি তখনই মারেন ডি ভিলিয়ার্স। তাঁর এই অতিমানবীয় ব্যাটিংয়ে ২ বল হাতে রেখেই ম্যাচ জিতে যায় বেঙ্গালুরু। শেষ দুই ওভারে রাজস্থানের বোলারদের ওপর এমন তাণ্ডব চালালেও উইকেটে সেই সময়টা কেমন কেটেছিল তা ম্যাচ শেষে বলেছেন ডি ভিলিয়ার্স। ‘খুব খুব নার্ভাস লাগছিল’—ডি ভিলিয়ার্সের সরল স্বীকারোক্তি!

নিজের নার্ভাস ভাবটা ডি ভিলিয়ার্স কাটান নিজের মতো করেই।
ছবি: বিসিসিআই

এবারের আইপিএলে ডি ভিলিয়ার্সের চারটি ফিফটির মধ্যে কালকের ইনিংসটিরই অন্য মাহাত্ম্য আছে। প্রথম তিনটি ফিফটি তিনি করেছেন আগে আগে ব্যাটিং করে। কালকের ফিফটিই রান তাড়া করতে গিয়ে। আসলে শুধু শেষ দুই ওভারেই নয়, ডি ভিলিয়ার্স চাপ অনুভব করেছেন কাল উইকেটে যাওয়ার শুরু থেকেই। কেন? ক্যারিয়ারে এত এত ম্যাচ খেলে ফেললেও রান তাড়া করতে গেলে এমনটা হয় বললেই জানালেন সাবেক প্রোটিয়া উইকেটকিপার–ব্যাটসম্যান।

এবার আইপিএলে ব্যাট হাতে ঝড় তুলে চলেছেন প্রোটিয়া তারকা।
ছবি: বিসিসিআই

রান তাড়া করতে গিয়ে নার্ভাস হয়ে পড়ার ব্যাপারে ডি ভিলিয়ার্স বলেছেন, ‘আমি এ ক্ষেত্রে খুব নার্ভাস হয়ে পড়ি। আর এই নার্ভাস হয়ে পড়ার কারণে কখনো কখনো ভুলটুল করে ফেলি। অন্য যেকোনো খেলোয়াড়ের মতোই এসব ক্ষেত্রে আমি খুব চাপে পড়ে যাই।’ কাল রাজস্থানের বিপক্ষে কীভাবে এই চাপ কাটিয়েছেন তাও বলেছেন বেঙ্গালুরুর ব্যাটসম্যান, ‘আমি বিরাটের (কোহলি) সঙ্গে কথা বলেছি। আমরা শুরুতে একটা জুটি গড়তে চেয়েছি। পরিকল্পনা করেছি এরপর সামনে এগিয়ে যাব।’

শেষ ওভারে জয়ের জন্য ১০ রান প্রয়োজন ছিল বেঙ্গালুরুর। ওভারটি করেছেন রাজস্থানের সেরা বোলার জফরা আর্চার। ইংল্যান্ডের ফাস্ট বোলার প্রথম তিন বলে ৫ রান দিলেও আটকে রাখতে পারেননি ডি ভিলিয়ার্সকে। চতুর্থ বলেই বিশাল এক ছক্কা মেরে বেঙ্গালুরুকে জয় এনে দেন তিনি। শেষ ওভারটি নিয়ে ডি ভিলিয়ার্স বলেছেন, ‘আমি সব সময়ই বোলারদের শ্রদ্ধা করি। আমার বিপক্ষে ভালো বল করলে তারা চেপে বসতে পারে।’