তাসকিনের মতো ফিটনেস নিয়ে বাড়তি পরিশ্রমে আগ্রহী সবাই
বাঁ হাতের চোট তাসকিন আহমেদকে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ থেকে ছিটকে ফেলেছিল। তারিখটা ছিল ১৮ জুন। ফিল্ডিংয়ের সময় হাত ফেটে গিয়েছিল তাঁর, দিতে হয়েছিল পাঁচটি সেলাই। দিন তিনেক পর ইনস্টাগ্রামে একটা ভিডিও পোস্ট করলেন বাংলাদেশ পেসার। বাঁ হাতে ব্যান্ডেজ, তবে সেটি নিয়েই ফিটনেসের জন্য জিমের শক্ত ড্রিল ঠিকই ধরছেন তিনি।
সম্প্রতি নিজের ফিটনেস নিয়ে কাজ করে তাসকিন আলোচনায় আছেন, মাঠের পারফরম্যান্সও ইঙ্গিত দিচ্ছে তাসকিন ২.০-এর। তিনি বলছেন, দলের কাউকে এখন আর ফিটনেস নিয়ে কাজ করতে বলতে হয় না, সবাই নিজের জন্য অতিরিক্ত কিছু না কিছু করে। এখন থেকেই তরুণদেরও এ ব্যাপারে সচেতন করতে বলছেন তিনি।
আল্লাহর রহমতে আমাদের দলের সবাই এখন ফিটনেস নিয়ে সচেতন এবং সবাই অতিরিক্ত কাজ করে। আমি নিশ্চিত, কাউকে ঠেলতে হয় না যে এটা করো, ওটা করো।
হারারেতে এদিন দ্বিতীয় দিনের মতো অনুশীলন করেছে বাংলাদেশ। শনি ও রোববার হবে একটি প্রস্তুতি ম্যাচ। হাতের চোট থেকে সেরে উঠেছেন তাসকিনও। ২০১৪ সালে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের অভিষেক হলেও এবারই প্রথম জিম্বাবুয়ে গেছেন তাসকিন। রোমাঞ্চিত তাসকিন বলছেন দলের ফিটনেস-সচেতনতার কথা, ‘আল্লাহর রহমতে আমাদের দলের সবাই এখন ফিটনেস নিয়ে সচেতন এবং সবাই অতিরিক্ত কাজ করে। আমি নিশ্চিত, কাউকে ঠেলতে হয় না যে এটা করো, ওটা করো। সবাই নিজের থেকেই নিজেরটা করছে।’
একসময় চোটের কারণে বেশ ভুগেছেন তাসকিন। জাতীয় দলে যাওয়া-আসার মধ্যে ছিলেন, এমনকি ডাক পেয়েও খেলতে পারেননি ম্যাচ। ফিটনেসের ব্যাপারে এবার তরুণদেরও সচেতন করতে বলছেন তিনি, ‘(ফিটনেসের ক্ষেত্রে) পেশাদার অ্যাথলেটদের ভাবভঙ্গি যেমন থাকা উচিত, সেটাই আছে। এরপরও আমাদের যারা নতুন, যারা আসবে ভবিষ্যতে বা অনূর্ধ্ব-১৯ খেলতে, তারা যদি এখন থেকেই এ প্রক্রিয়া কঠোরভাবে মেনে চলে এবং এসব শুরু করে দেয়, তাহলে ওদের হয়তো সামনের দিনগুলো সহজ হবে।’
প্রিমিয়ার লিগটাও অবশ্য খারাপ যায়নি তাসকিনের, ৮ ম্যাচে ১০ উইকেট নিয়েছিলেন ১৩.৮০ গড়ে ও ৭.০৭ ইকোনমি রেটে বোলিং করে।
সর্বশেষ শ্রীলঙ্কা সফরে চার বছর পর টেস্ট দলে ফিরেছেন তাসকিন। দুই টেস্ট মিলিয়ে পেয়েছেন ৮ উইকেট। তবে উইকেটসংখ্যার চেয়েও লাইন-লেংথের ধারাবাহিকতা আর টানা বোলিং দিয়ে নজরে এসেছেন নতুন করে। দুই টেস্টের প্রতিটি ইনিংসেই বাংলাদেশ পেসারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বোলিং করেছেন তাসকিনই। শেষ প্রিমিয়ার লিগটাও অবশ্য খারাপ যায়নি তাঁর, ৮ ম্যাচে ১০ উইকেট নিয়েছিলেন ১৩.৮০ গড়ে ও ৭.০৭ ইকোনমি রেটে বোলিং করে।
তাসকিনের অবশ্য উন্নতির সুযোগ দেখছেন এখনো, ‘আল্লাহর রহমতে আগের চেয়ে ভালো হচ্ছে। তবে এখনো উন্নতির জায়গা আছে। সেটি হচ্ছেও। কিন্তু আমি আসলে মাঠের বাইরের প্রক্রিয়াটাই সব সময় অনুসরণ করছি। ওটাই আমার নিয়ন্ত্রণে আছে, যেখানে আমি শতভাগ দিতে পারি। তো আমিও সেটিই দিয়ে যাচ্ছি। আল্লাহ যদি চায়, এভাবে যদি উন্নতি করতে পারি আরও, তাহলে ভবিষ্যতে আরও ভালো কিছু হবে এবং এই সিরিজ নিয়েও ভালো কিছু করার আশাবাদী আমি।’
জিম্বাবুয়ে সফরের তিন ফরম্যাটের দলেই আছেন তাসকিন, যে সফর শুরু হবে টেস্ট সিরিজ দিয়ে। আপাতত ৭ জুলাই শুরু একমাত্র টেস্টের দিকেই নজর দিতে চান তিনি। স্কিল ও ধৈর্য নিয়ে কাজ করছেন বলে জানিয়েছেন। অবশ্য জৈব সুরক্ষাবলয়ে থেকে খেলার ব্যাপারটা সহজ হবে না বলেও মনে করেন ডানহাতি এই পেসার। এর আগে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগেও একই রকম বলয়ে ছিলেন তাঁরা। তবে সবকিছুর পরও এসব বাদ দিয়ে দেশের হয়ে সেরাটাই দিতে চান।
এ ব্যাপারও হয়তো এখন তাসকিনের কাছে ফিটনেস নিয়ে কাজ করার মতোই। আঙুলে সেলাই থাকতে পারে, তবে ফিটনেস নিয়ে কাজ করা তো বন্ধ থাকতে পারে না।