দলের নীতিনির্ধারকেরা পুরোপুরি ব্যর্থ

গাজী আশরাফ হোসেন
ফাইল ছবি

শেষ একটা লড়াই দেখার ইচ্ছা ছিল। খেলোয়াড়দের সে তাড়না আছে বলে মনে হলো না। তবে পরিকল্পনা, দল নির্বাচনে বড় একটা ঘাটতি দেখলাম। তিনজন পেসার নিয়ে খেলার সাহস দেখানোর কথা বলেছিলাম। লড়াইয়ের মানসিকতার ছাপ দল নির্বাচনে থাকাটা গুরুত্বপূর্ণ। টেলিভিশনে দেখেই বোঝা যায়, উইকেট ঘাস, পেস সহায়কই হবে। এমন একটা উইকেটে টসে জিতলে তো ফিল্ডিংই করতাম। এমন উইকেটে দুজন পেসার? অধিনায়ক পরিকল্পনায় ভুল করলে সেটা শুধরে দেওয়ার জন্যই তো কোচ।

উইকেটে গতি, মুভমেন্ট, বাউন্স থাকলে পেসাররা ভয়ংকর হয়ে উঠবেই। রুবেলকে যদি পছন্দ না হয়, তাহলে মোস্তাফিজকেই খেলাতে পারত। তবে এমন উইকেটে মোস্তাফিজের কাটারের চেয়ে রুবেলের গতি বেশি কার্যকর—এটা তো সহজেই অনুমেয়। আবার মোস্তাফিজ ক্লান্ত, পারফর্ম করতে পারছে না। এমনিতেই সেরা একাদশ গড়ার সুযোগ নেই, রুবেল থাকলেও তাকে খেলানোর সুযোগটা নিলাম না।

এমন একজন ব্যাটসম্যানকে খেলানো হলো, যে রান পাচ্ছে না, মানসিকভাবে বিপর্যস্ত মনে হচ্ছে। মিডল অর্ডারের সব ব্যাটসম্যানই কয়েক ওভার বেশি পেলে ইনিংস বড় করতে চায়। সৌম্যকে দোষ দেওয়া যায় না, এমন ডেলিভারিতে আউট হলে কিছু করার থাকে না। আফিফ ১২ ওভার পেয়েছিল আজ, এরপর নেমেই যে শট খেলল, সেটা অবিশ্বাস্য। দলের সঙ্গে থেকেও একজন ক্রিকেটারের মানসিকতা পড়তে না পারাটা কিন্তু দলের নীতিনির্ধারকদের একটা ব্যর্থতা। এর আগে মাহমুদউল্লাহ-মুশফিকের আউট হওয়া দেখার পরও একজন ব্যাটসম্যান যখন প্রথম বলেই ডাউন দ্য উইকেটে যায়, তার মানসিক অবস্থাটা বোঝা যায়।

দলের পাশে দাঁড়াতে এ দলের নীতিনির্ধারকদের পুরোপুরি ব্যর্থ মনে হয়েছে আমার। কোচ, বিশ্লেষক, নির্বাচক—সবাই থাকার পরও এসব সিদ্ধান্ত আসে। মানসিকভাবে বিপর্যস্ত একটা দলকে গাইড করা বা কন্ডিশন বিবেচনায় দল নির্বাচনের সামর্থ্য নেই তাদের। আমার মনে হয়, এ ম্যাচের পরিকল্পনার অভাব বা দল নির্বাচন দেখে ক্রিকেট বোর্ডের কাজটা খুব সহজ হয়ে গেল। এ কোচের চুক্তি নবায়ন করলে বাংলাদেশের ক্রিকেট কোন দিকে যাবে, সেটার প্রমাণ পাওয়া গেছে। ফলে তাকে বাদ দেওয়াটা সহজ এখন। সে যে থাকার উপযুক্ত না, সেটা প্রমাণ আজ দিয়েছে।

অবশ্য ব্যক্তিগতভাবে দুই দল মিলিয়ে পাঁচ পেসার, বিশেষ করে রাবাদা ও তাসকিনের বোলিং উপভোগ করেছি আমি। এ ম্যাচের পেস বোলিংয়ে টেস্টের একটা আমেজ পাওয়া গেছে। এমন পিচে অভ্যস্ত ব্যাটসম্যানদের বিপক্ষে তাসকিনের বোলিং দুর্দান্ত লেগেছে। তবে বিদেশি বাউন্সি কন্ডিশনে আমাদের সিনিয়র দুই ব্যাটসম্যান মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহর ব্যাটিংয়ের ধরন একটা চিন্তার কারণ। আজকে একটা জিনিস পরিষ্কার হয়ে গেল, উইকেট মন্থর হোক বা এমন পেস বোলিং সহায়ক হোক—এক প্রান্ত থেকে একজন না খেললে বাংলাদেশের জন্য ১২০ রানও পার করা কঠিন। বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টিতে যে এখনো কতটা নবীন দল, সেটা বোঝা গেল। হয়তো সেরা একাদশ ছিল না, তবে এতটা বাজে পারফরম্যান্স প্রত্যাশা করিনি।