নতুন কিছু করার সুযোগ

গাজী আশরাফ হোসেনফাইল ছবি

আমার ব্যক্তিগতভাবে মনে হয়, এ টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ সেমিফাইনালের যে স্বপ্ন নিয়ে সুপার টুয়েলভ শুরু করেছিল, সেটা প্রায় ধূলিসাৎ হয়ে গেছে। পরিস্থিতিটাই এমন, বাংলাদেশ এখন বিচ্ছিন্ন কিছু জয়ের কথা ভাবতে পারে।

ব্যক্তিগতভাবে কিছু অর্জনের কথা চিন্তা করতে পারে। সুযোগের কথা যখন বলছি, শুরুর দিকের তিন-চারজন ব্যাটসম্যানই বড় স্কোর গড়ার সুযোগ পাবে। বোলারদের সবারই সুযোগ থাকলেও আগের ম্যাচে তো বিধ্বস্ত হতে হলো। আবার একই মাঠেই পরের ম্যাচে আফগানিস্তান ১৯০ করল। তবে শারজার সে ছোট মাঠে খেলতে হবে না, এটা একটা স্বস্তি।

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচে দুটি সহজ ক্যাচ নিতে পারেননি লিটন
ফাইল ছবি: প্রথম আলো

অবশ্য বাংলাদেশের একাদশ গড়ার আলোচনায় লিটনের কথা আসবেই। অমন দুইটা ক্যাচ ফেলার পর স্বাভাবিকভাবেই সাংঘাতিক বিপর্যস্ত থাকার কথা তার। ব্যাটিংয়েও আহামরি কিছু করছে না। এমন অবস্থায় স্বাভাবিক থাকাটা মুশকিলই। মানসিক দিক দিয়ে তার একটা বিশ্রাম প্রয়োজন। তাকে সেটা দেওয়া উচিত।

লিটন না খেললে বাংলাদেশ কি ওপেনিংয়ে সৌম্যকে আবার আনবে? এটা গৎবাঁধা সিদ্ধান্ত। দুজন শীর্ষ সারির ওপেনারই যখন ব্যর্থ হচ্ছে, পরিস্থিতির চাহিদা অনুযায়ী বাংলাদেশের বিকল্প ভাবনা আছে কি না, সেটা প্রশ্ন। এখানে একটু ঝুঁকি নেওয়াই যায়। ওপেনিংয়ে আমার মতে বিকল্প হতে পারে নুরুল। তার শটের পরিধি অনেক বড়। হুক, পুল, ড্রাইভ—সবই খেলতে পারে, ওপর দিয়েও খেলার সামর্থ্য আছে। ভবিষ্যতের কথা ভেবেও নুরুলকে এ পজিশনে চেষ্টা করা যায়। যারা ছয় বছর সুযোগ পেয়েও তেমন কিছু করতে পারেনি, তারা আগামী দিনে দলে আরও চার-পাঁচ বছর খেলতে পারবে কি না, সেটা নিয়ে আমার অনেক বড় সংশয় আছে।

সৌম্য সরকার
প্রথম আলো

নুরুল ওপেনিংয়ে গেলে বোলিংয়ে আমরা তাসকিনকে ফেরাতে পারি। তাহলে বাড়তি একজন বোলার নিয়ে আক্রমণটা আরেকটু স্থিতিশীল করা যায়। নাসুমকেও বিশ্বকাপের মতো মঞ্চে আরেকটু সুযোগ দেওয়ার পক্ষে আমি। আগের ম্যাচে তার ওপর তেমন আস্থা দেখলাম না অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহর। আশা করি বোলিংয়ে বাংলাদেশ ২০ ওভারের ছকটা কষেছে, প্ল্যান এ, বি, সি ভেবে রেখেছে। সেসবের প্রতিফলন দেখতে চাই। প্রতিপক্ষ প্রতি-আক্রমণ করলে সেটার জন্য প্রস্তুত থাকা দরকার। ব্যাটিংয়ে যে উন্নতির একটু ছাপ আছে, সেটার ধারাবাহিকতাই দেখতে চাই। আগে ব্যাটিংয়ের সুযোগ এলে যাতে লড়াই করার মতো একটা স্কোর গড়া যায়।

এসব বলছি, কারণ, নতুন কিছু করে দেখার জন্য ইংল্যান্ডকে উপযুক্ত প্রতিপক্ষ মনে হচ্ছে। এমনিতেও তারা অনেক শক্তিশালী, তাদের সঙ্গে ম্যাচের ফলে আসলে তেমন কিছু যায়-আসে না। ইংল্যান্ড নিশ্চিতভাবেই এ টুর্নামেন্টের অন্যতম ফেবারিট দল, সেমিফাইনালের জন্য তো হট ফেবারিট।

মুশফিক-মাহমুদউল্লাহরা কি পারবেন আজ?
ফাইল ছবি: বিসিবি

এসব দল কখনোই কাউকে, বিশেষ করে আমাদের আরও খাটো করে দেখবে না। শুধু আমাদের শক্তিমত্তার জন্য নয়, তাদের অভ্যাসই এমন। নিজেদের যাত্রাপথটা মসৃণ করতে তারা কোনো সুযোগই দেবে না। মার্ক উড সুস্থ হলে হয়তো একটা পরিবর্তন দেখা যেতে পারে ইংল্যান্ড একাদশে, এ ছাড়া মোটামুটি একই থাকার কথা। স্পিনে আদিল রশিদ ও মঈন আলী তো দারুণ করেছে প্রথম ম্যাচে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের মতো দলকে ওভাবে হারিয়ে বাড়তি একটা আত্মবিশ্বাসও কাজ করছে তাদের। আবার ইংল্যান্ড এটাও জানে, বাংলাদেশ নিজেদের ঘর গোছাতেই ব্যস্ত।

বিচ্ছিন্ন যে জয়ের স্বপ্ন, সেটা ইংল্যান্ডের বিপক্ষে কঠিন। বেন স্টোকস, জফরা আর্চার, স্যাম কারেনকে ছাড়াও তারা দাপটের সঙ্গে টুর্নামেন্ট শুরু করেছে। এমন দলের বিপক্ষে নিজেদের যাচাই করারও একটা সুযোগ বাংলাদেশের সামনে।