বৃষ্টি আর দুই সেঞ্চুরির দিন

কোথাও রোদ, কোথাও বৃষ্টি। তারই মধ্যে কাল শুরু হলো জাতীয় লিগের দ্বিতীয় পর্বের খেলা। এই পর্ব প্রথম দিনে দুটি সেঞ্চুরিও দেখে ফেলল। খুলনায় সিলেটের বিপক্ষে বরিশালের ফজলে রাব্বি করেছেন ১০৩। রাজশাহীতে স্বাগতিকদের বিপক্ষে চট্টগ্রামের ইরফান শুকুরের ব্যাট থেকে এসেছে ১০২ রান।
শুরুতে বিপর্যয় হয়েছে, বিপর্যয় ঘটেছে শেষবেলায়ও। দলের ২৯ রানের মধ্যে ওপেনিং-সহোদর তামিম ইকবাল (০) ও নাফিস ইকবাল (৬) এবং চার নম্বরে নামা তাসামুল হকের (১) উইকেট হারিয়ে ফেলে চট্টগ্রাম। আর দিনের শেষ ৩ উইকেট তারা হারিয়েছে মাত্র ৩ রানের ব্যবধানে। এর মধ্যে দুটি প্রায় তিন বছর পর প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ফেরা পেসার শাফাক আল জাবিরের। ইনিংসের প্রথম ওভারে তিনি নিয়েছিলেন তামিমের উইকেটটিও।
কিন্তু মাঝের ৩ উইকেটে আসা ৩১২ রানের সুবাদে দিন শেষে চট্টগ্রামের স্কোরবোর্ডটা উজ্জ্বলই দেখাচ্ছে—৮ উইকেটে ৩৪৬। নার্ভাস নাইনটিজে তাইজুলের বলে এলবিডব্লু হওয়ার আগে চতুর্থ উইকেটে ইয়াসিরের সঙ্গে ১২২ রানের জুটি হয় মুমিনুলের (৯০)। ইয়াসির (৯১)-ইরফান ও ইরফান-সাইফুদ্দিনের (৪৬*) পরের দুই জুটিতে এসেছে ৯০ ও ১০০। সেঞ্চুরি না পেলেও মুঠোফোনে অধিনায়ক নাফিস ইকবাল ইরফানের সমান কৃতিত্বই দিলেন মুমিনুল-ইয়াসিরকে, ‘তিনজনই খুব ভালো ব্যাট করেছে। ওদের কারণেই আমরা ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছি। মুমিনুল, ইয়াসির অসাধারণ ব্যাট করেছে। তাদের সেঞ্চুরি না পাওয়াটা দুর্ভাগ্যজনক।’
বৃষ্টির কারণে ৬৯ ওভার পর খেলা বন্ধ হয়ে যায় খুলনায়। এক ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর বিকেল ৪-২৬ মিনিটে দিনের খেলার শেষ ঘোষণা করেন ম্যাচ কর্মকর্তারা। তবে ওই ৬৯ ওভারেই ৫ উইকেট হারিয়ে ২৯৫ রান করে ফেলে বরিশাল। ওপেনিং জুটিতে শাহরিয়ার নাফীস (৫২)-শাহীন হোসেনের (৫৮) ১১৬ রানের পর তাতে বড় ভূমিকা তিন নম্বর ব্যাটসম্যান ফজলে রাব্বীর ১২০ বলে ১০৩ রানের। শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামের ব্যাটিং উইকেটে নয়টি চারের সঙ্গে তিন ছক্কাও আছে রাব্বির। বৃষ্টি নামার আগে ঝোড়ো ব্যাটিং করেছেন সোহাগ গাজীও। ১৯ বলে ২৮ করেছেন দুই ছক্কা ও দুই চারে।
বৃষ্টি ব্যাঘাত ঘটিয়েছে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের খুলনা-ঢাকা মহানগরের ম্যাচেও। ৫৮.১ ওভার পর যখন বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হয়, খুলনার রান ৫ উইকেটে ২২৭। ৮৭ রানে অপরাজিত ছিলেন মোহাম্মদ মিঠুন। ৮০ রানে ৩ উইকেট পড়ার পর তুষার ইমরানের (৫৯) সঙ্গে জুটিতে যোগ করেছেন ৬৩।
বগুড়ায় ছিল পুরো উল্টো আবহাওয়া। প্রচণ্ড গরমের মধ্যে পুরো ৯০ ওভারই খেলেছে ঢাকা ও রংপুর। ঢাকার প্রায় সব ব্যাটসম্যানেরই শুরুটা হয়েছিল খুব ভালো। তবু বড় ইনিংস খেলতে পারেননি কেউই। দিন শেষে স্কোর ৬ উইকেটে ২৬৫। ফিফটি শুধু ওপেনার রনি তালুকদার ও রকিবুল হাসানের। ৯৩ রানের জুটি গড়ে পর পর দুই ওভারে দুই ওপেনার মজিদ ও রনি আউট হয়ে যান। এরপর তৃতীয় উইকেট জুটিতে ৮৮ রান যোগ করেছেন সাইফ হাসান ও রকিবুল। চা-বিরতির পর এক ওভারের ব্যবধানে ড্রেসিংরুমে ফেরেন তাঁরাও।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বরিশাল-সিলেট, খুলনা
বরিশাল ১ম ইনিংস
৬৯ ওভারে ২৯৫/৫ (রাব্বী ১০৩, শাহীন ৫৮, শাহরিয়ার ৫২, মোসাদ্দেক ৩১*; এনামুল ২/৫৪, আবুল হাসান ১/২৬, সাদিকুর ১/৪৪, রাহাতুল ১/৫৩)।
ঢাকা-রংপুর, বগুড়া
ঢাকা ১ম ইনিংস
৯০ ওভারে ২৬৫/৬ (রনি ৫৯, রকিবুল ৫২, মাইশুকুর ৩৫, সাইফুদ্দিন ৩৩, মজিদ ৩১; সোহরাওয়ার্দী ৩/৭০, তানভীর ২/৩১, সাদ্দাম ১/৩০)।
খুলনা-ঢাকা মহানগর, মিরপুর
খুলনা ১ম ইনিংস
৫৮.১ ওভারে ২২৭/৫ (মিঠুন ৮৭*, তুষার ৫৯, এনামুল ৩৪; সৈকত ১/১৩, শরীফুল্লাহ ১/২২, শহীদ ১/৩২, হায়দার ১/৪৬, ইলিয়াস ১/৬১)।
চট্টগ্রাম-রাজশাহী, রাজশাহী
চট্টগ্রাম ১ম ইনিংস
৮৮ ওভারে ৩৪৬/৮ (ইরফান ১০২, ইয়াসির ৯১, মুমিনুল ৯০, সাইফুদ্দিন ৪৬*; শাফাক ৩/৪০, মুক্তার ২/৫৬, তাইজুল ২/৮৯, ফরহাদ ১/৩৫)।