ভাই-ভাইয়ের লড়াই!

পাকিস্তানের খেলোয়াড়দের সঙ্গে ব্যক্তিগত চেনাজানা আছে?
—হ্যাঁ। ওরা সবাই আমার বন্ধু।
সংযুক্ত আরব আমিরাত অধিনায়ক আমজাদ জাভেদের উত্তর শুনে হেসে উঠলেন সঙ্গে থাকা সতীর্থরাও। যেন এমন মজার উত্তর কখনো শোনেননি! প্রশ্নটা কি হাস্যকর হয়ে গেল তবে?
পাকিস্তানি খেলোয়াড়দের সঙ্গে তাঁদের ব্যক্তিগত পরিচয় থাকাটা তো স্বাভাবিক মনে হতেই পারে। জন্মসূত্রে হোক আর ক্রিকেটের সম্পর্ক থেকে, পাকিস্তান-আমিরাত তো একে-অপরের পরিচিতই। লাহোর, রাওয়ালপিন্ডি, শিয়ালকোট, খাইবার—পাকিস্তানের এসব শহরে আমিরাতের বেশির ভাগ খেলোয়াড় কিংবা তাঁদের পূর্বপুরুষের বেড়ে ওঠা। একপর্যায়ে জীবিকার টানে সবাই পাড়ি জমিয়েছেন মরুর দেশে।
পাকিস্তানের সঙ্গে এই দলের সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হয়েছে কোচ আকিব জাভেদের সূত্র ধরে। সত্যি বলতে কী, পাকিস্তান জাতীয় দলের ‘ঘর’ও তো এখন এই আরব আমিরাত। সাত বছর ধরে বলতে গেলে আন্তর্জাতিক ম্যাচ পাকিস্তানে হয়-ই না। সেই ম্যাচগুলো হচ্ছে দুবাই-শারজা-আবুধাবিতে। এমনকি পিএসএলও হয়েছে এখানেই।
তবে আমিরাতের ম্যানেজার মাজহার খান জানালেন, এই আরব আমিরাত দলের খেলোয়াড়দের সঙ্গে পাকিস্তানের শেকড়টা অত শক্ত নয়, ‘ব্যক্তিগতভাবে তাদের একে-অপরের সঙ্গে পরিচয় যতটা আছে বলে মনে করছেন, ততটা আসলে নেই। পাকিস্তান থেকে তাঁদের পূর্বপুরুষ বহু আগেই পাড়ি জমিয়েছেন আমিরাতে। আর দলের বেশির ভাগ খেলোয়াড়ের কাছে ক্রিকেট খেলা খণ্ডকালীন কাজ। ফলে এটা নিয়ে সব সময় পড়ে থাকার সুযোগ নেই তাঁদের। তাঁরা ক্রিকেট খেলে শুধু ভালোবাসা-আবেগ থেকে।’
তবু আজকের লড়াইটার পোশাকি নাম ‘ভাই-ভাই’ যুদ্ধ বলে চালিয়ে দিতে পারেন। তবে যতই ভাই-ভাইয়ের লড়াই বলা হোক না কেন, শোয়েব মালিকের মতো পেশাদার ক্রিকেটের কাছে জয়ই শেষ কথা। পাকিস্তান অলরাউন্ডার বললেন, ‘যদি আপন দুই ভাইও একে-অপরের বিপক্ষে খেলে, দুজনই কিন্তু জিততে চায়। এখানেও একই ব্যাপার থাকবে।’
পাকিস্তান যদি জিততে মরিয়া থাকে, আমিরাতও নিশ্চয়ই চাইবে অঘটন ঘটাতে। যদিও ঐতিহ্য-শক্তিমত্তায় যোজন যোজন এগিয়ে পাকিস্তানই। ওয়ানডেতে তিনবার মুখোমুখি হয়ে প্রতিবারই জিতেছে পাকিস্তান। কিন্তু টি-টোয়েন্টিতে এই প্রথম দুদল খেলছে একে-অপরের বিপক্ষে।
আমিরাতের আত্মবিশ্বাসের জ্বালানি হিসেবে কাজ করতে পারে এশিয়া কাপের বাছাইয়ের ম্যাচগুলো। সেখানে ইনজামাম-উল-হকের দল আফগানিস্তানকে হারিয়ে দিয়েছিলেন আকিব জাভেদের শিষ্যরা। চূড়ান্ত পর্বে ব্যাটিংটা যাচ্ছেতাই হলেও তাদের বোলিং কিন্তু বেশ নজর কেড়েছে। আকিব জাভেদের প্রভাব দেখা যাচ্ছে স্পষ্ট। হয়তো পুরোনো ‘বন্ধু’ ওয়াকার ইউনিসের দলের বিপক্ষেও খেলা বলে আকিবও বাড়তি প্রেরণা পাবেন!