মিরপুরে আরেকটি মুনিম ‘শো’

আজও দুর্দান্ত মুনিম।ছবি: প্রথম আলো

যেখানে ফিল্ডার নেই, সেখানে বল পাঠানোই ভালো ব্যাটিংয়ের মূল সূত্র। কিন্তু ঘরোয়া টি-টোয়েন্টিতে ব্যাটিংয়ের এই সহজ সূত্র অনেক ব্যাটসম্যানই যেন ভুলে যান। তবে আবাহনীর তরুণ ওপেনার মুনিম শাহরিয়ার পরপর দুই দিন দেখালেন, টি-টোয়েন্টির ব্যাটিংটা এভাবেও করা যায়।

মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে গতকাল প্রাইম ব্যাংকের বিপক্ষে ৯২ রানে অপরাজিত ছিলেন মুনিম। এখন পর্যন্ত এবারের লিগে এটাই ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ। আজ মিরপুরে শেখ জামালের বিপক্ষে তিনি করেছেন ৪০ বলে ৭৪ রান। বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচটি ডাকওয়ার্থ–লুইস (ডি–এল) পদ্ধতিতে তাঁর দল জিতেছে ৪৯ রানে। বিকেএসপিতে বিকেলের অন্য ম্যাচে পয়েন্ট ভাগাভাগি করেছে মোহামেডান ও ব্রাদার্স ইউনিয়ন। পাশের মাঠেই ডি–এলে ৯ উইকেটে পারটেক্সকে হারিয়েছে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স।

আজও ঝড় তুলেছেন মুনিম।
ছবি: প্রথম আলো

আগের দিনের মতো আজও মুনিমের ব্যাট শুরু থেকেই ছিল আক্রমণাত্মক। প্রাইম ব্যাংকের অধিনায়ক এনামুল হক যেমন কাল মুনিমকে থামাতে হিমশিম খাচ্ছিলেন, আজ একই অবস্থা হয় শেখ জামাল অধিনায়ক নুরুল হোসেনেরও। ইবাদত হোসেনের এক ওভারেই মুনিম পয়েন্টের ওপর দিয়ে ছক্কা মেরেছেন, চার মেরেছেন কভার ও মিড অফ দিয়ে।

শেখ জামালের বাকি বোলাররাও মুনিমের ঝোড়ো ব্যাটিং ঠেকাতে পারছিলেন না। আবাহনী ইনিংসের সপ্তম ওভারেই ২৪ বলে পূর্ণ করেন ফিফটি। আউট হওয়ার আগে ৯ বাউন্ডারি ও ৩ ছক্কায় মুনিমের ইনিংসের স্ট্রাইকরেট ছিল ১৮৫।
মুনিমের ব্যাটিংয়ের পাশে নাজমুল হোসেনের ৪২ বলে ৬৫ রানের ইনিংসটিকেও ম্লান মনে হচ্ছিল। দুই ব্যাটসম্যানের ফিফটি ছাড়ানো ইনিংসে আবাহনী এগোচ্ছিল ২০০ রানের দিকে। কিন্তু বৃষ্টিও যেন চাইছে না, এবারের প্রিমিয়ার লিগ ২০০ রানের ইনিংস দেখুক!

শান্তও দারুণ খেলেছেন।
ছবি: প্রথম আলো

১৮.২ ওভারে ৪ উইকেটে ১৮১ রান করার পর বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হওয়ার পর আর ব্যাটিংয়ে নামা হয়নি আবাহনীর। ঘণ্টাখানেক পর খেলা শুরু হলে ডি–এলে শেখ জামালের নতুন লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৩ ওভারে ১৪৮ রান। আবাহনীর দুর্দান্ত বোলিংয়ের সামনে ১৩ ওভারে ৮ উইকেটে তারা করতে পেরেছে মাত্র ৯৮। দলে ফিরে বাঁহাতি পেসার মেহেদী হাসান নেন ৩ উইকেট, যার তিনটিই নিজের প্রথম ওভারে। আবাহনীর ৪৯ রানের বড় জয়ে প্রত্যাশিতভাবেই ম্যাচসেরা মুনিম।

শূন্য হাতে ফিরেছেন মুশফিক।
ছবি: প্রথম আলো

বিকেএসপিতে নিষ্প্রভই ছিলেন মোহামেডানের ব্যাটসম্যানরা। ব্রাদার্স ইউনিয়নের বিপক্ষে ওপেনার আবদুল মজিদের ৩৫ রানই দলের ৯ উইকেটে করা ১৪৩ রানে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত সংগ্রহ। কিন্তু বৃষ্টির কারণে মাঠ খেলার অনুপযুক্ত হয়ে পড়ায় পরে ম্যাচটাই পরিত্যক্ত হয়।

পাশের মাঠে পারটেক্স–গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের ম্যাচটা অবশ্য বৃষ্টির মধ্যেও শেষ হতে পেরেছে। পারটেক্সকে ১০৭ রানে অলআউট করার পর ৩.৩ ওভারেই ৪৩ রান করে ফেলে গাজী গ্রুপ। ওপেনিংয়ে নেমে মেহেদী হাসান ১২ বলে ৩৩ রান করলে ম্যাচের ফল সেখানেই অনেকটা নিশ্চিত হয়ে যায়। বৃষ্টিবিরতির পর আবার খেলা শুরু হলে গাজী গ্রুপের নতুন লক্ষ্য দাঁড়ায় ৮ ওভারে ৪৭ রান, যা ১ উইকেট হারিয়ে ৫.৩ ওভারেই টপকে যায় তারা।