রমিজ রাজাকে আইপিএলের টাকার গরম বুঝিয়ে দিলেন চোপড়া
পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান হওয়ার পর থেকেই আলোচনায় রমিজ রাজা। কখনো ব্যয় সংকোচনের জন্য চা কম খেতে বলে, কখনো দেশটির ক্রিকেটের উন্নতির জন্য কার্যকরী পদক্ষেপ নিয়ে। দেশটির ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টি লিগ নিয়ে বেশ রোমাঞ্চিত রমিজ। এবার সাফল্যের সঙ্গে পাকিস্তান সুপার লিগ (পিএসএল) আয়োজন করার পর তাঁর আত্মবিশ্বাসও বেড়েছে। তাই আগামী দিনে খেলোয়াড় ড্রাফট নয়, একেবারে নিলাম আয়োজন করার চিন্তা রমিজের।
নিলাম হলে খেলোয়াড়েরা বেশি অর্থ পাবেন। আর বেশি অর্থ পেলে আইপিএল ছেড়ে অধিকাংশ ক্রিকেটার পিএসএলই খেলবেন—এমন কথা শোনা গেছে তাঁর মুখে। কিন্তু পিসিবি প্রধানকে বলতে গেলে মাটিতে নামিয়ে এনেছেন আকাশ চোপড়া। বলেছেন, চাইলেও আইপিএলের মতো এত টাকা দেওয়ার ক্ষমতা নেই পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের।
বিশ্বের এই মুহূর্তে সবচেয়ে আকর্ষণীয় ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট লিগ আইপিএল। ভারতের এই ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে পাকিস্তান বাদে বিশ্বের সব সেরা খেলোয়াড় খেলেন। ঘরোয়া লিগেও তাই প্রতিটি ম্যাচে পাওয়া যায় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের স্বাদ। ক্রিকেটের সঙ্গে চোখ কপালে তোলা অর্থও মিলে আইপিএলে। সে সঙ্গে বলিউডের গ্ল্যামারও যোগ হয়। আর সবকিছুর শুরুটা হয় আইপিএল নিলামে। এবার মেগা নিলামই যেমন টানা দুই দিন ক্রিকেট বিশ্বের সব আকর্ষণ ধরে রেখেছিল।
এ দেখেই নতুন চিন্তা ঢুকেছে রমিজ রাজার মাথায়। ক্রিকইনফোর সঙ্গে কথোপকথনে রাজা নিজের উচ্চাশার কথা জানিয়েছেন। এ বছরই পিএসএলের আয় ৭১ শতাংশ বেড়েছে। আইপিএলের মতো নিলাম শুরু হলে খেলোয়াড়েরা পিএসএলকেই বেশি গুরুত্ব দেবেন বলে ধারণা পিসিবি প্রধানের, ‘এটা দিন শেষে টাকার খেলা। দেশে ক্রিকেটীয় অর্থনীতি উন্নত হলে আমাদের সম্মানও বাড়বে। ক্রিকেটীয় অর্থনীতি উন্নত করার প্রধান হাতিয়ার হলো পিএসএল। আমরা যদি পিএসএলে নিলাম প্রক্রিয়া চালু করি, ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোকে বেশি খরচ করার ক্ষমতা দিই, তাহলে আমরা অনায়াসে পিএসএলকে আইপিএলের কাতারে নিয়ে আসতে পারি। তারপর দেখব, কে পিএসএল বাদ দিয়ে আইপিএলে খেলতে যায়।’
আকাশ চোপড়া অবশ্য রমিজের এমন দাবিকে পাত্তাই দিচ্ছেন না। ভারতীয় ক্রিকেট বিশ্লেষক ও সাবেক ব্যাটসম্যান নিজের ইউটিউব চ্যানেলে বলেছেন, ‘যদি ড্রাফটের বদলে নিলামও করে, এটা (পিএসএল আইপিএলের সারিতে আসা) হবে না। কারণ, পিএসএলে আপনি কাউকে ১৬ কোটি রুপি পেতে দেখবেন না। এটা হবেই না। এই বাজারটাই এমন যে এটা হতে দেবে না। একদম সহজ ব্যাপার।’
সাবেক ভারতীয় ওপেনার এ ক্ষেত্রে ক্রিস মরিসের উদাহরণ টেনেছেন। গত মৌসুমে দক্ষিণ আফ্রিকান অলরাউন্ডারকে পেতে ১৬ কোটি ২৫ লাখ রুপি খরচ করে রাজস্থান রয়্যালস। ২০২১ আইপিএলে ১১ ম্যাচ খেলে ১৫ উইকেট পেলেও মাত্র ৬৭ রান করেছিলেন কিছুদিন আগেই অবসর নেওয়া মরিস। নিলামে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর ভুল চাল দেওয়া নতুন কিছু নয়। কিন্তু দলগুলো এ নিয়ে দুবার ভাবে না। কারণ, তাদের তহবিলে যে অঢেল অর্থ।
চোপড়া সেটাই মনে করিয়ে দিয়েছেন, ‘সত্যি বলি, শেষবার যখন খেলেছে, ক্রিস মরিসের একটি বলের মূল্য অন্য লিগে খেলোয়াড়ের বেতনের চেয়েও বেশি ছিল। আইপিএলের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় যাওয়া বা তুলনা করা কি সম্ভব? সেটা পিএসএল, বিগ ব্যাশ, হান্ড্রেড, সিপিএল—যে লিগই হোক না কেন। এটা কি একটু হলেও ভুল হলো না (রমিজের কথা)?’
নিলাম হলেই ক্রিকেটারকে আইপিএলের চেয়ে বেশি অর্থ দেওয়া কেন সম্ভব নয়, সেটাও ব্যাখ্যা করে দেখিয়েছেন চোপড়া, ‘(খেলোয়াড়ের) দাম নির্ভর করছে আপনি স্বত্ব থেকে কত পাচ্ছেন, দলগুলো কত কোটিতে বিক্রি হয়েছে...এরপর আপনাকে একটা নির্দিষ্ট খরচসীমা দেওয়া হবে, সে অনুযায়ীই তো খেলবেন। এগুলো সব একে অন্যের সঙ্গে জড়িত। কেউ যদি এগুলোকে আলাদাভাবে দেখে, সে হারতে বাধ্য।’