রশিদের ঘূর্ণিতে দিশেহারা দিল্লি

দিল্লির বিপক্ষে দারুণ বোলিং করেছেন রশিদ খানছবি: টুইটার

রশিদ খানের স্পেল শেষেই প্রশ্নটা বেশি করে উঠছিল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। সানরাইজার্সের এই আফগান কি এখন বিশ্বের সেরা স্পিনার?

জবাবটা তার আগেই টুইটে দেন ভারতের ধারাভাষ্যকার ও বিশ্লেষক হর্শা ভোগলে, ‘রশিদ খানই সেরা। ২২০ রান তাড়ায় ৩ ওভার শেষে ৬ রানে ২ উইকেট। চ্যাম্পিয়ন।’

আফগান লেগ স্পিনার এরপর আরও এক ওভার বল করেন। ১৩তম ওভারে—দিল্লি ক্যাপিটালসের ঋষভ পন্ত ও অক্ষয় প্যাটেল তখন উইকেটে। বাকি ৪৮ বলে পাড়ি দিতে হবে ১৩৮ রান-পর্বত। রশিদ এ ওভারেও ধরে রাখেন কিপটেমি, মাত্র ১ রান দিয়ে নেন অক্ষয়ের উইকেট। অর্থাৎ ৪ ওভারে ৭ রানে ৩ উইকেট!

আগেই ম্যাচ থেকে প্রায় ছিটকে পড়ার পথে থাকা দিল্লি এরপর শুধু ২০ ওভার ব্যাটিং শেষ করে আসার প্রার্থনাই করতে পারত। সেটিও তারা পারেনি। ১৯ ওভারে ১৩১ রানে অলআউট হয়ে সানরাইজার্সের কাছে ৮৮ রানের হার মেনে নিতে হয় শ্রেয়াস আইয়ারের দলকে।

দিল্লির ব্যাটসম্যানরা রশিদের সামনে খাবি খেয়েছেন। পন্ত একটু লড়লেও তা যথেষ্ট ছিল না
ছবি: টুইটার

আইপিএলে এবার রশিদের এই বোলিং ফিগারই এখন পর্যন্ত সবচেয়ে কিপটে। তাঁর দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে জয় তুলে নিয়ে প্লে অফে খেলার আশা টিকিয়ে রাখল সানরাইজার্স। ১২ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলে ছয়ে রয়েছে ডেভিড ওয়ার্নারের দল। প্লে অফের আশা টিকিয়ে রাখতে শেষ দুই ম্যাচে জিততে হবে সানরাইজার্সকে।

দিল্লির বিপক্ষে তাদের ব্যাটিং এগিয়ে রেখেছিল ম্যাচে। জনি বেয়ারস্টোকে বসিয়ে ঋদ্ধিমান সাহাকে নামিয়ে জুয়া খেলেছিল সানরাইজার্স। ৪৫ বলে ৮৭ রানের দুর্দান্ত ইনিংসে তার প্রতিদান দেন ঋদ্ধিমান। ৩৪ বলে ৬৬ রান করেন ডেভিড ওয়ার্নার। মণীশ পাণ্ডের ৩১ বলে অপরাজিত ৪৪ রানের ইনিংসে ভর করে ২ উইকেটে ২১৯ রান তুলেছিল সানরাইজার্স।

তাড়া করতে নেমে শুরুতেই পিছিয়ে পড়ে দিল্লি। প্রথম ওভারেই কোনো রান না করে সন্দ্বীপ শর্মাকে উইকেট দেন দিল্লি ওপেনার শিখর ধাওয়ান। পরের ওভারে মার্কাস স্টয়নিসকে তুলে নেন শাহবাজ নাদিম। সপ্তম ওভারে রশিদ যখন বোলিং এলেন দিল্লি তখনই ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ার শঙ্কায়—৮৪ বলে দরকার ১৬৬।

এই লক্ষ্য মানসিকভাবে দ্বিগুণ করে দেন রশিদ সপ্তম ওভারে—পাঁচ বলের মধ্যে তিনি তুলে নেন অজিঙ্কা রাহানে (২৬) ও শিমরন হেটমায়ারকে (১৬)। উইকেটে বাঁক ও বাউন্সের সঙ্গে চমৎকার গুগলির মিশেল ঘটিয়ে দিল্লির ব্যাটসম্যানদের নিয়মিতই বোকা বানাচ্ছিলেন রশিদ।

শেষ ১০ ওভারে ১৪৭ রান দরকার ছিল দিল্লির। হাতে ৬ উইকেট। এখান তাদের যেভাবে ব্যাট করা উচিত ছিল তা হয়নি। ১১তম ওভারে মাত্র ৩ রান দিয়ে শ্রেয়াস আইয়ার ও ঋষভ পন্তকে দমিয়ে রাখেন রশিদ।

পরের ওভারে আইয়ার আউট হওয়ার পর শেষ ভরসা হিসেবে ছিলেন শুধু ঋষভ। ১৭তম ওভারে সন্দ্বীপ শর্মা পন্তকে (৩৬) তুলে নেওয়ার আগেই হার নিশ্চিত হয় দিল্লির। ওই ওভার শেষে ১৮ বলে ১১০ রান দরকার ছিল দিল্লির। শেষ পর্যন্ত দলটি পুরো ২০ ওভারও খেলতে পারেনি। ১২ ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তিনে দিল্লি।