রান করা কত সহজ, রান করা কত কঠিন!

প্রথম ইনিংসে পাকিস্তান করল ৫৭৯। সেটিও মাত্র ৩ উইকেটে। ইনিংস ঘোষণা করেছিল বলে রক্ষা। না হলে মনে হচ্ছিল, পাকিস্তান বুঝি কয়েক হাজার রানই করে ফেলবে! দুবাই টেস্টে পাকিস্তানের ব্যাটিং মনে করাচ্ছিল, রান করা কতই–না সহজ। সেই পাকিস্তানই দ্বিতীয় ইনিংসে অলআউট হলো ১২৩ রানে! তাদের দুই ইনিংসের মধ্যে ব্যবধান ৪৫৬ রানের!
একই টেস্টে একই দলের দুই ইনিংসে রানের ব্যবধানের রেকর্ডে এটি আছে প্রথম পাঁচের মধ্যেই। সর্বোচ্চ ব্যবধানের রেকর্ডটিও পাকিস্তানের। সেটি আবার ওয়েস্ট ইন্ডিজেরই বিপক্ষে। ১৯৫৮ সালের ব্রিজটাউন টেস্টে পাকিস্তানের দুই ইনিংসের মধ্যে ব্যবধান ছিল ৫৫১ রানের!
সেই টেস্টটি অবশ্য অন্য আরেকটি কারণে আলোচিত। টেস্টের উত্তাল সাগরে পাকিস্তান তখন হাবুডুবু খাওয়া এক দল। এক হানিফ মোহাম্মদ শক্ত করে হাল ধরেছিলেন। কদিন আগে প্রয়াত এই লিটল মাস্টারের সেরা কীর্তি হয়ে আছে সেই ব্রিজটাউন টেস্ট। যেখানে তিনি ৯৭০ মিনিট ধরে ব্যাটিং করেছেন। যেটি এখনো মিনিটের হিসাবে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে ব্যাটিংয়ের রেকর্ড।
ওই টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ৫৭৯ রানের জবাবে প্রথম ইনিংসে পাকিস্তান অলআউট হয়ে গিয়েছিল মাত্র ১০৬ রানে। ফলোঅন করতে নামা পাকিস্তানের জন্য ইনিংস ব্যবধান যখন অবধারিত মনে হচ্ছিল, তখনই রুখে দাঁড়ান হানিফ। তাঁর ৩৩৭ রানের ইনিংস, ওপেনিংয়ে ইমতিয়াজ আহমেদকে (৯১) নিয়ে ১৫২ রানের জুটি; আরও বাকি সবার অবদানে পাকিস্তান দ্বিতীয় ইনিংসে ৮ উইকেটে তোলে ৬৫৭ রান। তাদের দুই ইনিংসের ব্যবধান হয়ে যায় ৫৫১ রানের। যে রেকর্ড আজও ভাঙেনি।
দুই ইনিংসের ব্যবধানের পরের দুটি রেকর্ডই নিউজিল্যান্ডের। দুটিই হয়েছে ওয়েলিংটনে। ১৯৯১ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচটিতে নিউজিল্যান্ড দুই ইনিংসে করেছিল ১৭৪ ও ৬৭১/৪। ব্যবধান ৪৯৭ রানের। ২০১৪ সালে ভারতের বিপক্ষে নিউজিল্যান্ড দুই ইনিংসে করেছিল ১৯২ ও ৬৮০/৮। ৪৮৮ রানের ব্যবধান।
২০০১ সালের সেই বহুল আলোচিত কলকাতা টেস্টেও ঘটেছিল এমন। সেবার তো ফলোঅন করতে নামা ভারত উল্টো অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়েই দিয়েছিল। ভিভিএস লক্ষ্মণের বীরত্বে। দুই ইনিংসে ভারতের রান ছিল ১৭১ ও ৫৬৭/৭। ব্যবধান ৪৮৬ রানের।
এই চারটি ম্যাচেরই একটা মিল আছে। সবগুলো দল এখানে প্রথম ইনিংসে খাবি খেয়ে অসাধারণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল পরের ইনিংসে। দুবাই টেস্টে পাকিস্তানের বেলায় কিন্তু উল্টোটা ঘটেছে। ২০১১ সালে মুম্বাই টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজেরও এমনটা হয়েছিল। প্রথম ইনিংসে ৫৯০ করার পর দ্বিতীয় ইনিংসে ১৩৪। দুই ইনিংসের ব্যবধান ৪৫৬ রানের।