সুপার টুয়েলভ শুরু করছে বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচ শ্রীলঙ্কার সঙ্গে। খুব পরিচিত প্রতিপক্ষ। আমরাও শ্রীলঙ্কার খুব চেনা। কিছুদিন আগেই তাদের সঙ্গে সিরিজ খেলেছি, ভালো করেছি। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শুরুর আগেও লঙ্কান দলের সঙ্গে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছি, তাই দুই দলই ম্যাচটা খেলতে নামবে, এক অন্যের সম্পর্কে সম্যক ধারণা নিয়ে।
ম্যাচটা শারজায়। ১৯৯৫ সালের পর এই মাঠে প্রথম খেলবে বাংলাদেশ। এত জায়গায় বাংলাদেশ খেলেছে, কিন্তু শারজায় ২৬ বছরে খেলেনি, এটা বেশ অদ্ভুত ব্যাপার। যা–ই হোক, একটা বিষয় বলা যেতে পারে, শারজার উইকেট কিন্তু আমাদের মিরপুরের উইকেটের মতোই। আইপিএলে কয়েকটা ম্যাচ দেখলাম, খুব বেশি যে রান হয় বলা যাবে না। তবে শ্রীলঙ্কা এ মাঠে বাংলাদেশের বিপক্ষে একটু এগিয়ে থেকেই নামবে। শুক্রবার প্রথম রাউন্ডের শেষ ম্যাচটা নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে তো ওরা শারজাতেই খেলল। লঙ্কান বোলাদের হাতে নেদারল্যান্ডস রীতিমতো নাকাল হলো।
শনিবার সুপার টুয়েলভে বাংলাদেশের চার প্রতিপক্ষের খেলা দেখলাম। অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাটিং ভালো করতে পারেনি। ওয়েস্ট ইন্ডিজ তো ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৫৫ রানেই গুটিয়ে গেছে। এটা কীভাবে হলো বুঝতে পারলাম না। দুবাইয়ের উইকেট যে ব্যাটিংয়ের জন্য খুব কঠিন ছিল, এমনটা মনে হয়নি। আসলে ইংল্যান্ডের বোলাররাই ভালো বল করেছে। এই গ্রুপে ইংল্যান্ডকেই আমার কাছে সবচেয়ে গোছানো দল মনে হয়েছে। তবে আমি মনে করি এ গ্রুপে আমরা খুব খারাপ করব না, নিজেদের খেলাটা খেলতে পারলেই বাংলাদেশ সবার পরীক্ষা নিতে পারবে।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচের প্রসঙ্গে ফিরি। খুব ভালো লাগবে ম্যাচটা যদি জিততে পারে। মানসিকভাবে দল অনেকটাই এগিয়ে যাবে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বিশ্বকাপ শুরুর আগে প্রস্তুতি ম্যাচটা আমরা জিততে জিততে হেরেছি। ওরা ৬ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর ভালো একটা জুটি গড়ে ম্যাচ বের করে নিয়েছে, ওই ম্যাচটা জিততে পারলে খুব ভালো হতো, আমরা চনমনে মেজাজ নিয়ে মাঠে নামতে পারতাম।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দলে পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা নেই বলেই মনে হচ্ছে। প্রথম পর্বের শেষ দুই ম্যাচে (ওমান আর পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে) মনে হয়েছে আমাদের ব্যাটসম্যানরা ফর্মে ফিরছে। সাকিব আল হাসান দুই ম্যাচেই ছিল দুর্দান্ত, মাহমুদউল্লাহ ব্যাটে রান ফিরে পেয়েছে। লিটন দাসের ব্যাটিংয়েও ফেরার ইঙ্গিত আছে। মুশফিকুর রহিম ফর্মে নেই, তবে সে বড় মঞ্চের খেলোয়াড়, আমি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওকে নিয়ে আশাবাদী। নুরুল হাসান, আফিফ হোসেন আর সাইফউদ্দিনের কাছে আমার অনেক আশা। নাঈমও ভালো করেছে যেহেতু একটা ম্যাচে, তাই ওকে নিয়েও আমি আশাবাদী।
বোলিংটা ভালো হচ্ছে, আরও ভালো হওয়া দরকার। পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে একটা জিনিস আমাকে চিন্তায় ফেলেছে। ওরা একপর্যায়ে ২৯ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল, শেষ পর্যন্ত তারা থেমেছে ৯৭ রানে। শ্রীলঙ্কা বা অন্য বড় দলের সঙ্গে এমন বোলিং হলে কিন্তু আমরা বড় বিপদে পড়ব। স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচের কথাই ধরুন, ৫৩ রানে ওরা ৬ উইকেট হারালেও শেষ পর্যন্ত করল ১৪০, আমরা ম্যাচটা হারলাম। এসব জায়গাগুলোয় ভুল করলে চলবে না। মোস্তাফিজ শেষ ম্যাচে কেন এত খরুচে হলো, বুঝতে পারলাম না। যাহোক, শ্রীলঙ্কা দলে বেশ কয়েকজন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান আছে, তাই মেহেদী হাসানকে বড় ভূমিকা নিতে হবে, আফিফের বোলিংটাও ব্যবহার করলে ভালো হবে।
শেষ করার আগে একটা কথাই বলব, চাপ নিয়ে খেলার দরকার নেই। শারজার উইকেট ১৪০ রানের, এটা মাথায় নিয়েই খেলুক দল। নির্ভার ক্রিকেট খেলে সবাইকে গর্বিত করুক দল।
বাংলাদেশ দলের জন্য শুভকামনা রইল!