সবার আগে সেমিফাইনালে পাকিস্তান

নামিবিয়াকে হারিয়ে সেমিফাইনালে উঠল পাকিস্তান। নামিবিয়ার আরেকটি উইকেট নেওয়ার পর পাকিস্তানের খেলোয়াড়দের উদযাপনছবি: এএফপি

বাংলাদেশ ও নামিবিয়া খেলেছে একই মাঠে। পার্থক্য শুধু সময়ের। বাংলাদেশ খেলেছে দিনের আলোয়, নামিবিয়া খেলল ফ্লাডলাইটে। কিন্তু কৃত্রিম আলোয় মাঠের খেলার উজ্জ্বলতায় আইসিসির সহযোগি দেশটি বাংলাদেশকেও ছাপিয়ে গেছে।

বিকালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে পুরো ২০ ওভার খেলতে পারেনি বাংলাদেশ। রান তাড়ার চাপও ছিল না। তবু স্কোরবোর্ডে রান উঠেছে ৮৪। নামিবিয়ার রান তাড়ার চাপ ছিল। আগে ব্যাট করে ২ উইকেটে ১৮৯ রান তুলেছে পাকিস্তান।

নামিবিয়া এ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে খেলেছে পুরো ২০ ওভার। শেষ পর্যন্ত ৪৫ রানে হারলেও ৭ উইকেটে ১৪৪ রান তোলাটা তাঁদের সামর্থ্যের পরিচায়ক।

টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পাকিস্তান যেভাবে খেলছে তাতে এ ম্যাচে নামিবিয়াকে কেউ পাত্তা দেয়নি। স্কটল্যান্ডকে হারিয়ে আফ্রিকার দলটি আজ পাকিস্তানের বিপক্ষেও লড়াকু মানসিকতা দেখাল।

শাহিন শাহ আফ্রিদি ও হারিস রউফদের বিপক্ষে নামিবিয়ার ২০ ওভার খেলাই তার প্রমাণ। এর পাশাপাশি পাকিস্তানি বোলারদের বল সুযোগমতো সীমানাছাড়া করতে পারার সামর্থ্যও নজর কেড়েছে। তবে পাকিস্তান ঠিকই টানা চার জয়ে টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে প্রথম দল হিসেবে উঠেছে সেমিফাইনালে।

নিজেদের জুটিতে দ্রুত রান তোলেন রিজওয়ান ও হাফিজ
ছবি: এএফপি

আবুধাবির উইকেট পুরোপুরি পেসবান্ধব না হলেও পেসাররা বল তুলতে পেরেছেন। স্পিনারেরাও বাঁক পেয়েছেন সন্ধ্যার ম্যাচে। বোলারদের দিকে তাকিয়ে টস জিতে নামিবিয়াকে আগে ব্যাটিংয়ে পাঠানোর সুযোগ পেয়েছিলেন পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজম।

কিন্তু তিনি সম্ভবত ব্যাটিংটা আগে ঝালিয়ে নিতে চেয়েছেন। সন্ধ্যায় শিশিরের মধ্যে বল ‘গ্রিপ’ করা কঠিন জেনেও চ্যালেঞ্জটা নেন বাবর। সতীর্থরা তাঁকে হতাশ করেননি।

বাবর–মোহাম্মদ রিজওয়ান ১৪.২ ওভার পর্যন্ত খেলে ওপেনিং জুটিতেই তুলেছেন ১১৩ রান। ৭ চারে ৪৯ বলে ৭০ রান করেন বাবর। দুই পাকিস্তানি ওপেনারের এ জুটিতে নামিবিয়ান বোলারদের খাটো করে দেখলে ভুল হবে।

পাওয়ার প্লে–তে বাবর–রিজওয়ানকে মাত্র ২৯ রান তুলতে দেয় নামিবিয়া। এর মধ্যে প্রথম ওভার আবার মেডেন নেন পেসার রুবেন ট্রাম্পেলমান।

ফিফটি তুলে নেন বাবর আজম
ছবি: এএফপি

প্রথম ১০ ওভারেও সেভাবে হাত খুলতে পারেননি বাবর–রিজওয়ান। বিনা উইকেটে ৫৯ রান তুলেছিল পাকিস্তান। ১৬তম ওভারে ফখর জামান (৫) আউট হওয়ার পর ইনিংসের বাকি পথটা সামাল দেন রিজওয়ান ও মোহাম্মদ হাফিজ।

তৃতীয় উইকেটে ২৬ বলে অবিচ্ছিন্ন ৬৭ রানের জুটি গড়েন দুজন। ১৬ বলে ৩২ রানে অপরাজিত ছিলেন হাফিজ। ৪ ছক্কা ও ৮ চারে ৫০ বলে ৭৯ রানে অপরাজিত ছিলেন রিজওয়ান।

বড় রান তাড়া করতে নেমে পাওয়ারপ্লে–তে পাকিস্তানের চেয়ে বেশি রান তুলেছে নামিবিয়া। ৬ ওভার শেষে নামিবিয়ার স্কোর ছিল ১ উইকেটে ৩৪। ওপেনার মাইকেল ফন লিনগেনকে (৪) তুলে নেন হাসান আলী।

১০ ওভার শেষেও অন্তত রানে এগিয়ে ছিল নামিবিয়া—২ উইকেটে ৭০। পাকিস্তানের বোলাররা পার্থক্য গড়েছেন শেষ ১০ ওভারে। আর নামিবিয়া ম্যাচটা হেরেছে অভিজ্ঞতার কাছে মার খেয়ে।

শেষ ১০ ওভারে আরও ৩ উইকেট হারিয়ে ৭৪ রান তুলেছে নামিবিয়া। ৩১ বলে ৪৩ রানে অপরাজিত ছিলেন ডেভিড ভিসা। ৩৭ বলে ৪০ রান করেন ক্রেগ উইলিয়ামস।

১টি করে উইকেট নেন হাসান আলী, হারিস রউফ, শাদাব খান ও ইমাদ ওয়াসিম। নামিবিয়ার হয়ে ১টি করে উইকেট ভিসে ও ইয়ান ফ্রাইলিঙ্কের।