সাকিব–মাহমুদউল্লাহদের আচরণে আম্পায়ারিং ছাড়ছেন মুনিরুজ্জামান

বিসিবির আম্পায়ার ও সাবেক ক্রিকেটার মুনিরুজ্জামান।
ছবি: সংগৃহীত

আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে অসন্তোষ থাকতেই পারে। তাই বলে প্রতিবাদের ভাষা যদি হয়ে ওঠে অসদাচরণ, সেটি ক্রিকেটের চেতনার সঙ্গেই যায় না।

সদ্য শেষ হওয়া প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগে এ রকম একাধিক ঘটনা ঘটিয়েছেন দেশের তারকা ক্রিকেটাররাই। আর ক্রিকেটারদের এমন আচরণে মর্মাহত হয়ে আম্পায়ারিং থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিসিবির আম্পায়ার ও সাবেক ক্রিকেটার মুনিরুজ্জামান।

মুনিরুজ্জামানের শঙ্কা, বাংলাদেশের সিনিয়র ক্রিকেটারদের ঘটানো এসব অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে মাঠে আরও উগ্র আচরণ করতে প্রভাবিত করবে। আম্পায়ারিং ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া মুনিরুজ্জামান প্রথম আলোকে আজ বলেছেন, ‘সম্মান একটা বড় বিষয়। আর কাজের পরিবেশটাও গুরুত্বপূর্ণ। এই দুটো কারণেই আমি আম্পায়ারিং ছাড়ছি।’

সতীর্থ আম্পায়ারদের সঙ্গে মুনিরুজ্জামান।
ছবি: সংগৃহীত

খেলার মাঠে ক্রিকেটারদের এ রকম অসদাচরণ চলতে থাকলে ভবিষ্যতে আরও খারাপ কিছুই দেখছেন তিনি, ‘আমার কাছে এবারের ঢাকা লিগে সিনিয়র ক্রিকেটারদের আচরণ উদ্বেগজনক মনে হয়েছে। আমার মনে হয়েছে, তাদের দেখাদেখি অন্যরাও এতে উৎসাহিত হবে। ভবিষ্যতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।’

আম্পায়ার হিসেবে মুনিরুজ্জামানের মোটামুটি সুনামই আছে। আন্তর্জাতিক প্যানেলে থাকা বাংলাদেশের চার আম্পায়ারের পর আর যাঁদের ভালো আম্পায়ার হিসেবে ধরা হয়, তিনি সেই হাতে গোনা কয়েকজনেরই একজন। অথচ সেই মুনিরুজ্জামানই নিজের সম্মান বাঁচাতে ছেড়ে দিচ্ছেন আম্পায়ারিং!

এবারের ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে মুনিরুজ্জামান সব মিলিয়ে ১৩টি ম্যাচে আম্পায়ারিং করেছেন। গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ সুপার লিগের যে ম্যাচে আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত মানতে না পেরে মাটিতে শুয়ে পড়েছিলেন, সে ম্যাচে মুনিরুজ্জামান ছিলেন টিভি আম্পায়ার।

এ ছাড়া আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে ক্ষোভ জানিয়ে মোহামেডান অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের স্টাম্পে লাথি মারা ও স্টাম্প উপড়ে ফেলার মতো ঘটনাও ঘটেছে এবারের লিগে। ওই ঘটনার জন্য তিন ম্যাচ বহিষ্কার করা হয় সাকিবকে। জরিমানা করা হয় ৫ লাখ টাকা।

মুনিরুজ্জামান (বাঁ থেকে দ্বিতীয়) এরই মধ্যে বিসিবির আম্পায়ার্স বিভাগকে জানিয়েছেন তাঁর সিদ্ধান্ত।
ছবি: সংগৃহীত

বিসিবির বেতনভুক্ত আম্পায়ার না হলেও মুনিরুজ্জামান এরই মধ্যে বিসিবির আম্পায়ার্স বিভাগকে জানিয়েছেন তাঁর সিদ্ধান্তের কথা। আম্পায়ার্স বিভাগের একটি সূত্রও তা নিশ্চিত করেছে। তবে এ ব্যাপারে জানতে বিসিবির আম্পায়ার্স কমিটির প্রধান সাইফুল আলমের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

সাবেক ক্রিকেটার মুনিরুজ্জামান ছিলেন উইকেটকিপার–ব্যাটসম্যান। রাজশাহী ও বরিশালের হয়ে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলেছেন তিনি। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে বিভিন্ন ক্লাবে খেলেছেন ৯ বছরের মতো। ২০০৭ সালে খেলা ছেড়ে আম্পায়ারিং শুরু করেন। তিনি বর্তমানে বেক্সিমকো ফার্মার মানবসম্পদ বিভাগে কর্মরত আছেন।