সাকিবরা ভালোই 'শান্তি'তে আছেন

কাল অ্যান্টিগায় স্যার ভিভ রিচার্ডস স্টেডিয়ামে সাকিব আল হাসানের সংবাদ সম্মেলন। ছবি: বিসিবি
কাল অ্যান্টিগায় স্যার ভিভ রিচার্ডস স্টেডিয়ামে সাকিব আল হাসানের সংবাদ সম্মেলন। ছবি: বিসিবি
>আজ শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজের অ্যান্টিগা টেস্ট। টেস্ট সিরিজের আগে সংবাদ সম্মেলনে ব্যতিক্রম অভিজ্ঞতাই হলো সাকিব আল হাসানের। বাংলাদেশ অধিনায়ককে প্রশ্ন করার মতো বাংলাদেশি সাংবাদিকই যে ছিলেন না

ঢাকা থেকে সাংবাদিকদের অনুরোধে কাল অ্যান্টিগা থেকে হোয়াটসঅ্যাপে দুটি ছবি পাঠিয়েছেন বিসিবির মিডিয়া ম্যানেজার রাবিদ ইমাম। সাকিব আল হাসানের সাক্ষাৎকার নিচ্ছেন দুই সাংবাদিক। আসলেই দুই সাংবাদিক কি না, সেটি নিয়ে সংশয় আছে। তাঁদের মধ্যে একজনের গায়ে ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজের জার্সি দেখে প্রশ্নটা আরও জোরালো হলো, আসলেই কোনো সংবাদমাধ্যমের সাংবাদিক কাল অ্যান্টিগার স্যার ভিভ রিচার্ডস স্টেডিয়ামে উপস্থিত ছিলেন কি না!

এই সিরিজ কাভার করতে বাংলাদেশ থেকে এখনো কোনো সাংবাদিকের পা পড়েনি অ্যান্টিগায়। বাংলাদেশ দলের খোঁজখবর সবাইকে দূর থেকেই নিতে হচ্ছে। ক্রিকেট প্রতিবেদকদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপটাই এখন ‘মিডিয়া সেন্টার’। সে গ্রুপেই কাল বিকেলে রাবিদ ইমাম জানালেন, স্থানীয় সময় বেলা সাড়ে ১১টা আর বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৯টায় হবে বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের সিরিজ-পূর্ব সংবাদ সম্মেলন।

এই সংবাদ সম্মেলনটা কাল যদি মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে হতো, কী দৃশ্য দেখা যেত একবার কল্পনা করুন। গিজগিজে সংবাদ সম্মেলনকক্ষ। প্রতিবেদকেরা তো আছেনই, আলোকচিত্রী আর ক্যামেরাম্যানদের ভিড়। কত প্রিয়-অপ্রিয় প্রশ্নের উত্তর দিতে হতো সাকিবকে। তবে যে প্রসঙ্গে অবশ্যই ঘুরেফিরে প্রশ্ন করা হতো তাঁকে, সাত বছর পর আবারও তাঁর টেস্ট অধিনায়কত্ব ফিরে পাওয়া। গত জুনে আফগানিস্তান সিরিজে তাঁর অধিনায়কত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল, সে প্রসঙ্গও যে আসত না কে বলতে পারে! আবার এমন হালকা প্রশ্নও হতো, যেটি হয়তো সিরিজের সঙ্গেই যায় না। সাকিব কখনো লম্বা উত্তর দিতেন, কখনো বা হেঁয়ালি করে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতেন। প্রশ্ন নিতে নিতে একটা সময় মিডিয়া ম্যানেজার ‘লাস্ট ওয়ান’ বলার পরও সংবাদ সম্মেলন চলতে থাকত!

সেখানে কাল অ্যান্টিগায় সাকিব সিরিজ-পূর্ব সংবাদ সম্মেলনটা করলেন কী ব্যতিক্রম উপায়ে! মাঠে তাঁর হাতে একটা মাইক্রোফোন ধরিয়ে দেওয়া হলো। প্রশ্ন করার সাংবাদিকও তেমন নেই মাঠে! সাকিবও এমন দৃশ্যে অভ্যস্ত নয়। শুধু বাংলাদেশে কেন, উপমহাদেশে এমনকি আইসিসির কোনো টুর্নামেন্টে তাঁরা খেলতে গেলে এমন সাংবাদিকবিহীন দৃশ্য কল্পনাই করা যায় না! ওয়েস্ট ইন্ডিজ পৃথিবীর ও প্রান্তে বলে বরাবরই সেখানে বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমের উপস্থিতি কম। তবে একেবারে সাংবাদিকশূন্য, তা তো কখনো দেখা যায় না। এবার এ দৃশ্যে বিশ্বকাপ ফুটবলের বড় ভূমিকা থাকতে পারে।

আশপাশে মিডিয়ার ভিড় নেই, আলোচনা-সমালোচনা, প্রিয়-অপ্রিয় প্রশ্ন নেই। প্রতিবেদকদের অনুসন্ধানী চোখও নেই। সাকিবরা এবার বেশ ‘শান্তি’তেই আছেন! সাংবাদিকদের ‘উৎপাত’ অন্তত নেই। মাঝেমধ্যে সমুদ্রবিহার, কখনো ক্যারিবীয়দের অলস সৌন্দর্যে ডুব দেওয়া আর বাকি সময়টা ক্রিকেটে মনোযোগ—এতেই যদি বাংলাদেশ দুর্দান্ত কিছু করে, অবশ্যই স্তুতিতে ভাসবেন। আর বিপরীত হলে? ক্যারিবীয়দের বিপক্ষেও যদি আফগানিস্তান সিরিজের ধারাবাহিকতা ধরে রাখেন, সমালোচনার তির থেকে কিন্তু নিস্তার নেই; সে বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম ক্যারিবীয় দ্বীপে উপস্থিত থাকুক কিংবা না থাকুক!