এই ভুল যেন কেউ না করে, সাকিবের বার্তা

সাকিব আল হাসান নিজের ভুলের জন্য অনুতপ্ত।ছবি: প্রথম আলো

‘নিষেধাজ্ঞা পাওয়ার পর অবশ্যই আফসোস হয়েছে। অনুতপ্তও হয়েছি। এ ধরনের ভুল করা উচিত হয়নি। যে শাস্তি দিয়েছে মাথা পেতে নিয়েছি। এখান থেকে আমার অনেক শেখার আছে’—নিষেধাজ্ঞা নিয়ে সাকিব আল হাসানের উপলব্ধি এটাই। এই উপলব্ধি থেকে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার বার্তা দিচ্ছেন, তাঁর মতো ভুল যেন আর কেউ না করেন!

কেউ যেন এই ভুল না করেন। যখনই এমন পরিস্থিতি আসবে আইসিসির যে আচরণবিধি আছে সে অনুযায়ী দায়িত্বটা পালন করব। দুর্নীতি দমন ইউনিটকে জানাবেন। অবহেলা করবেন না, হালকাভাবে নেবেন না। কোনোভাবে প্রভাবিত না হয়ে আপনার কাজ হবে দ্রুত রিপোর্ট করা।
সাকিব আল হাসান

যুক্তরাষ্ট্র থেকে সাকিবের ঢাকায় ফেরার কথা আজ রাতে। ফেরার আগে নিজের ইউটিউব চ্যানেলে কাল অনেক প্রশ্নের উত্তর দিলেন বাঁহাতি অলরাউন্ডার। নিষিদ্ধ হওয়ার যন্ত্রণা, আফসোস, হতাশা পেছনে ফেলে নতুন এক শুরুর অপেক্ষায়। তাঁর মতো আর কেউ যেন এমন কঠিন পরিস্থিতিতে না পড়েন, সে কারণেই সাকিব বার্তা দিচ্ছেন, ‘প্রথম কথাই বলব কেউ যেন এই ভুল না করেন। যখনই এমন পরিস্থিতি আসবে আইসিসির যে আচরণবিধি আছে সে অনুযায়ী দায়িত্বটা পালন করব। দুর্নীতি দমন ইউনিটকে জানাবেন। অবহেলা করবেন না, হালকাভাবে নেবেন না। কোনোভাবে প্রভাবিত না হয়ে আপনার কাজ হবে দ্রুত রিপোর্ট করা।’

সাকিব আহ্বান করছেন, এই ভুল যেন আর কেউ না করেন। ছবি: প্রথম আলো
ছবি: প্রথম আলো

নিষিদ্ধ হওয়ার আগে সাকিব বাংলাদেশ টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক ছিলেন। আপাতত অধিনায়কত্ব নিয়ে তিনি কিছু ভাবছেন না। তাঁর সব মনোযোগ শুধুই প্রত্যাবর্তনে, ‘আমার প্রথম লক্ষ্য হলো যেখানে শেষ করেছি সে জায়গাটায় পৌঁছানো। এর থেকেও যেন ভালো কিছু করতে পারি, এই তাড়না আমার মধ্যে থাকবে। আপনাদের অনুপ্রেরণা ও দোয়ার প্রতিদান দেওয়ার অবশ্যই চেষ্টা করব।’ তবে নিষেধাজ্ঞা সাকিবকে অনেক কিছু শিখিয়েছে, ‘এটা আমাকে অনেক সাহায্য করেছে। জীবন নিয়ে ভিন্নভাবে ভাবতে শিখিয়েছে, অনেক দরজা খুলে গেছে বলে আমার মনে হয়। এটা এক প্রকার আশীর্বাদ বলতে পারেন।’

প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে ফেরার লক্ষ্যে সেপ্টেম্বরে বিকেএসপিতে তাঁর দুই পুরোনো কোচ নাজমুল আবেদীন ও মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করেছেন সাকিব। প্রস্তুতিটা যে ভালো হয়েছে, সেটিই বলছিলেন ৩৩ বছর বয়সী অলরাউন্ডার, ‘বিকেএসপির অনুশীলনটা খুবই ভালো ছিল। আমার মনে হয় এটা দরকার ছিল। যদিও আমার ইচ্ছে ছিল আরও ১৫-২০ দিন করার। শ্রীলঙ্কা সিরিজ না হওয়ায় আর চালিয়ে নেওয়া হয়নি, যেহেতু যুক্তরাষ্ট্রে চলে এসেছি। আমার মনে হয় ১৫-২০ দিন বেশি করতে পারলে পুরোপুরি একটা প্রস্তুতি হয়ে যেত পরবর্তী এক-দুই বছরের জন্য। যেহেতু সময় আছে, সামনে আমাদের একটা ঘরোয়া টুর্নামেন্ট আছে ওখানে ওই ১৫-২০ দিনের ঘাটতি পূরণ করতে পারব বলে আমার ধারণা।’

করোনার কারণে সাকিবকে খুব বেশি আন্তর্জাতিক ম্যাচ হাতছাড়া করতে হয়নি। এদিক দিয়ে নিজেকে ‘সৌভাগ্যবান’ ভাবছেন তিনি। তবে ফেরার পর সাকিবকে অবশ্যই সামনের বড় টুর্নামেন্টগুলো নিয়ে ভাবতে হবে। ভাবতে হবে আগামী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ নিয়েও। ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ নিয়ে তাঁর ভাবনার কথা কাল কিছুটা জানিয়েছেনও, ‘জানি না আমরা কত দূর এগিয়েছি টি-টোয়েন্টিতে। তবে টি-টোয়েন্টির একটা সৌন্দর্য হচ্ছে যে কেউ ফেবারিট না। এটা আমাদের একটা ভরসা। যেহেতু এখন আমরা নিয়মিত অনেক বেশি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলছি। আমার কাছে মনে হয় ২০১৫-১৬ থেকে আমরা এখন অনেক ভালো একটা দল। এখন বুঝতে পারি কীভাবে খেলা উচিত।’